দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যদি কয়েকটি ব্যায়াম নিয়ম করে করতে পারেন, তাহলে শুধু শরীরই নয় চাঙ্গা থাকবে আপনার মনও। কোনও উদ্বেগ-অবসাদ সহজেই মনের উপর চেপে বসতে পারবে না।
ব্যক্তিগত নানা জটিলতা, সম্পর্ক নিয়ে অস্থিরতা, কর্মক্ষেত্রে নানা ধরনের সমস্যা, দৈনন্দিন জীবন-যাপনে নানা ধরনের দ্বন্দ্ব, আত্মবিশ্বাসের অভাব- এইসব নানা কারণে মনের উপর চাপ সৃষ্টি করে। দীর্ঘদিন ধরে এমন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে মনে জাঁকিয়ে বসে অবসাদ। শরীরের রোগ-বালাই নিয়ে সচেতনতা থাকলেও মানসিক স্বাস্থ্য সেখানে ব্রাত্যই বলা যায়। তবে ইদানীং মনের খেয়ালও রাখছেন অনেকেই। মন ভালো রাখার চেষ্টা করছেন অনেকেই। মনের সঙ্গে শরীরের একটা যোগ রয়েছে সেটিও আমাদের জানা। মন যদি ফুরফুরে থাকে, তাহলে অসুখও কাছে ঘেঁষতে পারে না। তাই শরীরের পাশাপাশি মনের যত্নও নিতে হবে। এই ক্ষেত্রে এক ঢিলে দুই পাখি মারাও সম্ভব। কয়েকটি আসন যদি নিয়ম করেই করতে পারেন, তাহলে শুধু শরীরই নয়, চাঙ্গা থাকতে পারে মনও। তাই কোনও উদ্বেগ, অবসাদ সহজেই মনের উপর চেপে বসতে পারবে না। মনের যত্ন নিতে কোন ব্যায়ামগুলো নিয়ম করে করবেন?
সুখাসন
এই আসনটি করতে হলে প্রথমেই আপনাকে পা ছড়িয়ে সোজা হয়ে বসতে হবে। এবার ডান পা হাঁটু হতে ভাঁজ করে বাঁ ঊরুর উপর ও বাঁ পা হাঁটু থেকে ভাঁজ করে ডান ঊরুর উপর রাখতে হবে। তারপর দুই হাঁটুর উপর দু’হাত টান টান করে রাখতে হবে। এই অবস্থায় চোখ বন্ধ করে বসে স্বাভাবিক ছন্দে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে হবে। ২ থেকে ৩ মিনিট পর্যন্ত এই অবস্থায় থাকতে হবে।
বালাসন
বালাসন করতে হলে প্রথমেই হাঁটু মুড়ে গোড়ালির উপর বসুন। এবার দুই হাত প্রসারিত করে পেট মুড়ে সামনের দিকে ঝুঁকুন। বুক যেনো ঊরু স্পর্শ করে। এরপর মাথা মাটিতে ঠেকিয়ে রাখুন। শ্বাস স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করতে হবে।
পশ্চিমোত্তাসন
পশ্চিমোত্তাসন করতে প্রথমেই চিত হয়ে শুয়ে দু’হাত মাথার দু’পাশে রাখতে হবে। তারপর দু’টি পা একসঙ্গে জোড়া করুন। এখন আস্তে আস্তে উঠে বসে সামনে ঝুঁকে দু’হাত দিয়ে দুই পায়ের বুড়ো আঙুল স্পর্শ করতে হবে। কপাল দু’পায়ে ঠেকাতে হবে। হাঁটু ভাঁজ না করে পেট এবং বুক উরুতে ঠেকাতে হবে। কিছুক্ষণ এই ভঙ্গিতে থাকার পরই আগের অবস্থায় ফিরে আসতে হবে। নিয়মিত এই আসনগুলো করলে বেশ উপকার পাবেন। মন ও শরীর দুই-ই ভালো থাকবে আশা করা যায়। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org