দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ১৮ বছর আগের কথা, সহোদর বালগোবিন্দকে হারিয়ে ফেলেছিলেন ভারতের উত্তরপ্রদেশের কানপুরের বাসিন্দা রাজকুমারী। ১৮ বছর পূর্বেই কাজের খোঁজে বন্ধুদের সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের ফতেহপুর হতে মুম্বাই পাড়ি দিয়েছিলেন বালগোবিন্দ।
এই দীর্ঘদিন পর জয়পুরের বাসিন্দা এক যুবকের ‘রিল’ দেখে উত্তরপ্রদেশে বসে চমকে যান এক যুবতী। ছেলেটির মুখ অচেনা হলেও হাসিখানা যেনো বড্ড চেনা! হাসলেই ঠোঁটের ফাঁক দিয়ে উঁকি মারছে একখানা ভাঙা দাঁত। রিলের ওই ভাঙা দাঁতের হাসিই শেষমেশ মিলিয়ে দিলো ছেলেবেলায় হারিয়ে যাওয়া ভাইবোনকে!
দীর্ঘ ১৮ বছর পূর্বে সহোদর বালগোবিন্দকে হারিয়েছিলেন ভারতের উত্তরপ্রদেশের কানপুরের বাসিন্দা রাজকুমারী। ১৮ বছর পূর্বে কাজের খোঁজে বন্ধুদের সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের ফতেহপুর হতে মুম্বাই পড়ি দেন বালগোবিন্দ। তখন তার বয়স ছিলো অনেক কম। কিশোর বলা যায়। দিদির সঙ্গে তার সেই শেষ দেখা হয়েছিলো।
মুম্বাইয়ে পৌঁছে বন্ধুদের সঙ্গেও দেখাসাক্ষাৎ ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায় তার। পরে বন্ধুরা একে একে বাড়ি ফিরে এলেও, গোবিন্দ মুম্বাইতেই রয়ে যান। বাড়ির লোকের সঙ্গেও যোগাযোগের সুতো কেটে যায় কোনো একটা সময়। এ পর্যন্ত তবু ঠিকই ছিল। গোল বাধে গোবিন্দ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর। মুম্বাই থেকে ট্রেনে উঠে বসা গোবিন্দ কানপুরের পরিবর্তে জয়পুরে পৌঁছে যান।
জয়পুর রেল স্টেশনে অসুস্থ গোবিন্দকে আশ্রয় দেন জনৈক ব্যক্তি। এরপর তিনিই গোবিন্দকে একটি কারখানার কাজ দেখে দেন। এরপর গোবিন্দ জয়পুরেই বিয়ে করেন। দুই সন্তানও হয়েছে তাঁর। এই সবের পাশাপাশি ইনস্টাগ্রামে রিল বানানোর নেশা পেয়ে বসে তাকে। জয়পুরের নানা স্থাপত্যের ভিডিও তৈরি করে নেটমধ্যমে শেয়ার করতে থাকেন। তেমন একটি ভিডিওতে তাকে দেখতে পান দিদি রাজকুমারী।
রাজকুমারী জানিয়েছেন যে, তার ভাই বালগোবিন্দের একটি নিকেল করা ভাঙা দাঁত ছিল। ছোটবেলায় হাসলেই বেরিয়ে পড়তো সেই দাঁত। ইনস্টাগ্রামের রিলে দেখা সেই হাসি চিনিয়ে দিলো তার ভাই বালগোবিন্দকে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org