দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফাঁসির আগে আজ সন্ধ্যায় জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের পরিবারের সদস্যরা দেখা করেন। ‘হাসিমুখে বিদায় দেন কামারুজ্জামান’।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ডাদেশ পাওয়া জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ফাঁসির আগে আজ সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি স্বাভাবিক ছিলেন এবং ‘হাসিমুখে বিদায়’ দিয়েছেন পরিবারের সদস্যদের। তিনি পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকেও বিদায় নেন। আজ শনিবার ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে কামারুজ্জামানের সঙ্গে ‘শেষ দেখা’ করে বের হয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য দেন কামারুজ্জামানের বড় ছেলে হাসান ইকবাল ওয়ামি।
সাংবাদিকদের ওয়ামি অভিযোগ করে বলেন, কামারুজ্জামান বলেছেন, ‘দুইজন ম্যাজিস্ট্রেট গতকাল শুক্রবার আমাকে কিছুই জিজ্ঞাসা করেননি। এমনকি তারা কথাও বলেননি। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মিথ্যাচার করেছেন।’
‘আঠারো বছরের ছেলেকে যুদ্ধাপরাধী সাজিয়ে সরকার স্বার্থ হাসিল করেছে’ বলেও পরিবারকে নাকি জানিয়েছেন কামারুজ্জামান। তাঁর বড় ছেলে আরও জানান, কামারুজ্জামান বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার প্রশ্নই আসে না। কারণ প্রাণ দেওয়ার মালিক আল্লাহ, নেওয়ার মালিকও তিনি। বেইমান মুনাফেক রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবো না।’
ওয়ামি অভিযোগ করে বলেন, ‘সরকার প্রাণভিক্ষার নামে গত কয়েকদিন যাবত তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য সময়ক্ষেপণ করেছে।
কামারুজ্জামানের ছেলে আরও বলেন, ‘আমার বাবা বলেছেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এবং বিচারপতিরা মিথ্যা সাক্ষীর ওপর ভিত্তি করে নিজেদের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার জন্যই আমাকে ফাঁসি দিচ্ছে। এটি একটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। আল্লাহ তাদের কেয়ামতের ময়দানে বিচার করবেন।’
আজ শনিবার বিকেল ৪.১০ মিনিটে পরিবারের সদস্যরা কারাগারে প্রবেশ করেন। সেখানে এক ঘণ্টারও বেশি সময় অবস্থানের পর ৫.২০ মিনিটে বেরিয়ে আসেন কামারুজ্জামানের পরিবারের ২১ সদস্য।
‘শেষ দেখা’ করে আসা পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন কামারুজ্জামানের স্ত্রী নুরুন্নাহার, বড়ভাই, বড়ছেলে হাসান ইকবাল ওয়ামি, ছোটছেলে হাসান ইমাম ওয়াফি, মেয়ে আতিয়া নূর।
উল্লেখ্য, এর আগে আজ দুপুরে কামারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করতে তাঁর পরিবারকে চিঠি দেয় কারা কর্তৃপক্ষ। সেখানে বিকেল ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে তাঁদের কারাগারে যেতে বলা হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটসহ মানবতাবিরোধী অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল। আজ শনিবার রাত ১০.০১ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসি কার্যকর করা হয়।