দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জামানা পরিবর্তন ঘটেছে। এখন কোনো মানুষকে মূল্যায়ন করতে সচরাচর দেখা যায় না। তবে তারপরও এমন কিছু মানুষ আছেন যারা এখনও মানবিকতা বা মানুষকে মূল্যায়ন করতে জানেন। এমনই এক মানুষের গল্প রয়েছে আজ।
জামানা পরিবর্তন ঘটেছে। এখন কোনো মানুষকে মূল্যায়ন করতে সচরাচর দেখা যায় না। তবে তারপরও এমন কিছু মানুষ আছেন যারা এখনও মানবিকতা বা মানুষকে মূল্যায়ন করতে জানেন। এমনই এক মানুষের গল্প রয়েছে আজ।
সত্যিই এমন একটি ঘটনা আজকালকার যুগে চোখে পড়বে সেটি ভাবাই যায় না। ঘটনাটিকে বিরল বলা যায়। হাজি মোহাম্মদ মহসীন যেমন মায়ের পানির পিপাসা মেটানোর জন্য সারারাত শিয়রে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ঠিক তেমনি এক স্বামীর খোঁজ পাওয়া গেছে যিনি ট্রেনের মধ্যে স্ত্রীকে একটু আরাম করে ঘুমাতে সাহায্য করার জন্য তারই সিটের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তবে এমনটি আজকাল একেবারেই চোখে পড়ে না।
কারণ হলো মানুষের প্রতি মানুষের সহমর্মিতার বিষয়টি বর্তমান সমাজে প্রায় উঠেই গেছে। আজকাল বাবা-মাকে সন্তানের সম্মান করতে দেখা যায় না। শিক্ষকদের সম্মান করতে দেখা যায় না শিক্ষার্থীদের। এক কথায় বলতে গেলে সমাজ থেকে ভক্তি-শ্রদ্ধা প্রায় উঠেই গেছে।
আজকের এই ছবিটি একটু খেয়াল করলেই বোঝা যাবে ট্রেনের মধ্যে একজন সুস্বাস্থ্যবান পুরুষ দাঁড়িয়ে রয়েছেন, আর তার পাশেই সিটে একজন আপাদমস্তক পর্দাসীন নারী ঘুমিয়ে রয়েছেন।
ময়মনসিংহ থেকে চট্টগ্রাম, সারারাতের এই ট্রেন ভ্রমণ। ছবির এই ব্যক্তি দুই পায়ে সারারাত দাঁড়িয়েছিলেন। এমন নয় যে, সে কোনো সিট পায়নি, তিনি দাঁড়ায়ে ছিলেন কারণ হলো তার সিটে তারই বউ ঘুমিয়েছিলো।
তার বউ কিন্তু অসুস্থও ছিলো না, শুধুমাত্র বউ একটু আরাম করে ঘুমাবে বলেই লোকটা সারারাত দাঁড়িয়েছিলো তারই সিটের পাশে! মাঝে মাঝে ট্রেনের ঝাঁকুনিতে বউ-এর ঘুম ভেঙে গেলে লোকটা হাটু গেড়ে বউ-এর পাশে বসে মাথায় হাত রেখে কানের কাছে মুখ নিয়ে বার বার জিজ্ঞাসা করেন কিছু খাবে না, কোনো অসুবিধা হচ্ছে কিনা ইত্যাদি।
তার পাশের এক ব্যক্তি তাকে বললো, ভাই আমার পাশে বসেন। প্রতি উত্তরে তিনি বললেন, ‘না ভাই,আমি বসে গেলে আমার জায়গায় অন্য কেও দাঁড়িয়ে থাকবে, আমার বউ অগোছালো হয়ে ঘুমাচ্ছেন, তিনি কমফোর্ট ফিল করবেন না।’
ওই নারী এখানে যতোই স্বার্থপর, হৃদয়হীন হোন না কেনো, ওই পুরুষটির মহানুভবতাকে কখনও খাটো করে দেখার অবকাশ নেই। নারী নির্যাতনের হাজারো সংবাদের মধ্যে কোনও নারীর জন্য স্বামীর সারারাত দাঁড়িয়ে থাকাটা সত্যিই এক সৌভাগ্য বটে। এমন সম্মান, ভালোবাসা টাকা দিয়ে কেনা যায় না। এমন ভালোবাসা সব নারীর কপালে জোটেও না। যা ওই নারী পেয়েছেন!
এই ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেন ওই ট্রেনের একজন যাত্রী। তিনিই ছবি তুলে বিষয়টি স্যোসাল মিডিয়ায় প্রকাশ করলে অনলাইন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।