দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জুয়াড়িদের অনৈতিক প্রস্তাব গোপন রাখার অভিযোগে নিষিদ্ধ হতে চলেছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) তাকে ১৮ মাসের নিষেধাজ্ঞা দিতে চলেছে।
অনৈতিক অভিযোগের বিষয়ে জানা যায় যে, দুই বছর আগে একটি আন্তর্জাতিক ম্যাচের আগে এক ক্রিকেট জুয়াড়ির (বুকি) কাছ থেকে সাকিব অনৈতিক প্রস্তাব পেয়েছিলেন। সেটি তৎক্ষণাৎ প্রত্যাখ্যান করলেও আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগকে না জানিয়ে বিষয়টি গোপন করেছেন সাকিব।
আইসিসির অ্যান্টিকরাপশন অ্যান্ড সিকিউরিটি ইউনিট (আকসু) প্রতিনিধি সাকিবের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা হয়। সাকিবও ওই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বলে জানা গেছে।
এই বিষয়ে সাকিব নিজের ভুল স্বীকার করেছেন আকসু তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে। জানা যায়, সাকিব আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছেন, জুয়াড়ির প্রস্তাবকে গুরুত্বই দেননি বলেই তিনি বিষয়টি জানাননি। বিষয়টি হালকাভাবে নেওয়াটাই তার জন্য কাল হলো। যে কারণে সব ধরনের ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হতে চলেছেন শাকিব।
আজ (মঙ্গলবার) অথবা আগামীকাল (বুধবার) সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সাকিবের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি আইসিসি জানাবে বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছে বিসিবির একটি সূত্র।
বিসিবির একটি সূত্র আরও জানিয়েছে, সাকিবকে শাস্তির বিষয়ে জানিয়েছে আকসু। এই বিষয়ে বিসিবিও আইসিসির ই-মেইল পেয়েছে। তবে এক্ষেত্রে সাকিবের পাশেই থাকবে বিসিবি।
সহযোগি একটি সংবাদ মাধ্যম এই বিষয়ে জানতে চেয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিজামউদ্দিন চৌধুরীর ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি অবশ্য আইসিসি থেকে এই সংক্রান্ত কোনো ই-মেইল প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেননি। বিসিবি সভাপতিসহ অন্য কাওকেও ফোনে পাওয়া যায়নি ও বিষয়টি নিশ্চিত হয়নি।
আকসুর নিয়মে রয়েছে যে, কোনো ক্রিকেটার, ম্যাচ অফিসিয়াল, টিম অফিসিয়ালসহ সরাসরি ক্রিকেটে সম্পৃক্ত কোনো ব্যক্তি জুয়াড়িদের কাছ থেকে প্রাপ্ত অনৈতিক প্রস্তাব না জানিয়ে গোপন করলে, লুকানোর চেষ্টা করলে কিংবা আকসুর জিজ্ঞাসাবাদেও অস্বীকার করলে তার বিরুদ্ধে ‘আইসিসি অ্যান্টিকরাপশন’ ধারা ২.৪.২, ২.৪.৩, ২.৪.৪, ২.৪.৫ ও ২.৪.৬ কার্যকর করা হবে।
এক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৬ মাস ও সর্বোচ্চ ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা দিতে পারবে আইসিসি। সাকিব আকসুর জিজ্ঞাসাবাদে সহযোগিতা করায় ১৮ মাস শাস্তি দেওয়ার ব্যাপারে আপাতত সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে আইসিসি। তবে শাস্তি কমানোর বিষয়ে সাকিব আবেদন করবেন বলেও একাধিক সূত্রে জানা যায়।
নিজের ভুল স্বীকার করে সাকিব আল হাসান আশা প্রকাশ করেছেন যে, সাজার মেয়াদ হয়তো খুব বেশি দিন হবে না।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, আইসিসির ধারা ২.২.৪ হতে ২.২.৬- এ অংশে অভিযুক্ত হয়েছেন সাকিব আল হাসান। যার শাস্তি সর্বনিম্ন ৬ মাস হতে সর্বোচ্চ ৫ বছর নিষিদ্ধ হওয়া। তবে যেহেতু আকসুর সঙ্গে তিনি সহায়তা করেছেন ও অতীতে তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের রেকর্ড নেই, তাই আবেদন করলে সেটি কমে ৬ মাস করতে পারে আইসিসি।
তবে সেজন্য বিসিবি নয়, সাকিবকেই শাস্তি কমানোর জন্য আবেদন করতে হবে। সাকিব আল হাসানের ঘনিষ্ঠ এক সূত্রে জানা গেছে, সাকিব এই আবেদন করার জন্য মানসিক এবং আইনি প্রস্তুতিও ইতিমধ্যেই নিয়ে রেখেছেন। এদিকে শাকিবের নিষিদ্ধের খবরে ক্রীড়ামোদিদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ভারত সফর বাতিল হলে বাংলাদেশ দলে অচলাবস্থার বিষয়টি উঠে এসেছে।