দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বলিউড অভিনেত্রী জিয়া খানের আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে অভিযুক্ত প্রেমিক সুরাজ পাঞ্চালি ২৩ দিন জেল কাটানোর পর দীর্ঘদিন চুপ করে ছিলেন এবং অবশেষে একটি সাক্ষাৎকারে মুখ খুললেন তিনি। সেখানে জিয়া খানের সাথে সম্পর্ক, জিয়ার আত্মহত্যা এবং জেল জীবন নিয়ে বিভিন্ন কথা তুলে ধরেন তিনি।
বলিউড নায়িকা জিয়া খান এই বছরের ৩ জুন আত্মহত্যা করেন, জিয়া খানের সুইসাইড নোট উদ্ধারের পর তার আত্মহত্যার জন্য দায়ী করা হয় আদিত্য পাঞ্চালির ছেলে সুরাজ পাঞ্চালিকে এবং সুরাজকে আসামী করে আদালতে মামলা করেন জিয়া খানের মা এবং সেকারণে ২৩ দিন জেলে কাটাতে হয়েছে সুরাজকে।
সাক্ষাৎকারে জেল জীবন প্রসঙ্গে সুরাজ বলেন, জুহু জেলের অবস্থা ছিলো খুবই নিম্নমানের, চারদিন গোসল না করে, ব্রাশ না করে থাকতে হয়েছে এমনকি একই পোষাকে থাকতে হয়েছে, ছিলো না বালিশ বা কম্বল। দেয়ালের আশেপাশে প্রস্রাব, বমি, পানের পিক দিয়ে দূর্গন্ধময় অবস্থা চারপাশ। চারদিন জুহু জেলে থাকাকালীন সময়ে বাবা মার সাথে কথা বলতে পারেন নি। এরপর তাকে আর্থার রোড জেলে নিয়ে যাওয়া হয় যাকে বলা হয় ইন্ডিয়ার সবচেয়ে নোংরা জেল। সেখানে তাকে ‘আন্ডা সেল’ এ রাখা হয়েছে যেখানে বড় বড় সন্ত্রাসীদের রাখা হয়। সারাদিন এবং সারারাত লাইট জ্বালিয়ে রাখা হয়, ঐ সেলের ভিতরে আছে মাত্র একটি ফ্যান। সুরাজে গ্রেফতার হওয়া প্রসঙ্গে দি ঢাকা টাইমসের খবরটি পড়ুন জিয়া খানের প্রেমিক সুরুজ পাঞ্চালি গ্রেফতার”|
আবেগতাড়িত সুরাজ বলেন, জেলে কাটানো সময়গুলোর জন্য সে মর্মাহত নয় বরং জিয়া এখনো তার হৃদয় জুড়ে অবস্থান করছেন। এখনও তিনি জিয়া খানকে ভালোবাসেন। সুরাজের বাড়ির সবকিছুই জিয়াকে মনে করিয়ে দেয়। জিয়া একজন ভালো মানুষ ছিলেন, তার উচিত ছিলো ভালো সময়ের জন্য অপেক্ষা করা।
জিয়া সম্পর্কে সুরাজ আরও বলেন, জিয়া ছিলেন খুবই আক্রমণাত্মক এবং সন্দেহপ্রবণ। প্রায় ১০ মাস আগে ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের মধ্যে পরিচয় হয়েছিল এবং এরপর তাদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে।’ জিয়া হাউসফুল, গজনী, নিঃশব্দ সহ আরো মুভিতে অভিনয় করলেও আত্মহত্যার আগে অনেকদিন কোন উল্লেখযোগ্য কাজ পান নি এবং তার পারিবারিক সম্পর্ক বিশেষ করে মায়ের সাথেও সম্পর্কের অবনতি ঘটেছিলো, ফলশ্রুতিতে প্রচুর হতাশায় ভুগেছে জিয়া এবং এক পর্যায়ে আত্মহত্যা করে বসে। যদিও জিয়া খানের সুইসাইডাল নোটে যা লিখা ছিলো তার সাথে তার বক্তব্য মিলেনি। বিস্তারিত জানতে দি ঢাকা টাইমসের খবর জিয়া খানের শেষ চিঠিতে কি ছিল” পড়ুন।
সুরাজ পাঞ্চাল সম্পর্ক বিচ্ছেদের কারণ প্রসঙ্গে বলেন, জিয়া ছিলেন বিষাদগ্রস্ত, হতাশাগ্রস্থ, সন্দেহপ্রবণ, একধরনের মানসিক অসুস্থতার ভিতর দিয়ে যাচ্ছিলো সে সময় তার মানসিক চাপ সুরাজ সহ্য করতে পারেন নি তাই সম্পর্ক বিচ্ছেদ করেন তিনি। জিয়া আত্মহত্যা করায় সুরাজকে যে ঝামেলার ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন সেটা জিয়া নিজেও চায়নি। জিয়ার মৃত্যুর জন্য সে দায়ী নয় বরং জিয়াকে প্রচুর সময়য় এবং ভালোবাসা দিয়ে অতিরিক্ত ১০ মাস বাঁচিয়ে রেখেছিলেন, সুরাজ তার জীবনে উপস্থিত না হলে আরও অনেক আগেই জিয়া আত্মহত্যা করত – এসব বলেন সুরাজ পাঞ্চালি।
সুরাজ পাঞ্চালির বক্তব্যের সাথে যদিও জিয়ার চিঠিতে পাওয়া তথ্যের মিল সামান্য, জিয়া খান ধর্ষণ ও অনিচ্ছাকৃত গর্ভপাতের শিকার হয়েছিলেন এরকম গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে, পুলিশের জেরার মুখে অত্যাচারের কথা স্বীকারেরও খবর পাওয়া গিয়েছে, সে সম্পর্কিত দি ঢাকা টাইমসের আরেকটি খবর পড়ুন জিয়াকে অত্যাচারের কথা স্বীকার করেছে সুরুজ পাঞ্চালি”। পাঞ্চালির প্রতারণার কারণে সম্পর্ক বিচ্ছেদের হতাশা থেকেই জিয়া আত্মহত্যা করেন। সুরাজের সাক্ষাৎকারের বক্তব্য জিয়ার আত্মহত্যার কারণকে আরো ঘোলাটে করেছে বলা যায়।
তথ্যসূত্রঃ টাইমস অফ ইন্ডিয়া