দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শিশুদের জীবনযাপনের মান কেমন রাখতে হবে, তা ঠিক করে দেওয়ার দায়িত্বও অভিভাবকদের। ডায়াবেটিস, স্থূলতার মতো রোগের সঙ্গে মোকাবিলা করতে গেলে প্রথমেই অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে।
বর্তমান প্রজন্মের শিশুদের নানা ধরনের শারীরিক সমস্যার মধ্যে অন্যতম হলো স্থূলতা। তবে সে জন্য শিশুরা যতোটা না দায়ী, তার চেয়ে অনেক বেশি দায় রয়েছে অভিভাবকদের। তাদের সচেতনতার অভাবে শিশুরা ক্রমশ এই রোগের শিকার হচ্ছে বলেও জানিয়েছে একটি সমীক্ষা। ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ওবেসিটি’-তে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র এমনই তথ্য দিয়েছে।
সুইডেনের ‘ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট’-এর একদল গবেষক সম্প্রতি স্থূলত্বের সমস্যায় ভুগছে এমন ৪ থেকে ৬ বছর বয়সি প্রায় ২০০ জন শিশুর উপর সমীক্ষা চালিয়ে দেখেছেন যে, এই সমস্যা বিশাল রূপ ধারণ করার আগেই যদি অভিভাবকদের এই বিষয়ে সচেতন করা গেলে, সেই ক্ষেত্রে এই রোগের ভয়াবহতা অনেক অংশেই রুখে দেওয়া যাবে। গবেষকরা প্রথমেই শিশুদের দু’টি দলে ভাগ করে দেন। প্রথম দলটিতে থাকা শিশুদের ডায়েট ও শরীরচর্চার উপর বিশেষভাবে নজর রেখেছিলেন গবেষকরা।
অপর দলটিতে থাকা শিশুরা সাধারণ যে ধরনের জীবনযাপনে অভ্যস্ত, সেই ধারাই অব্যাহত রাখতে বলা হয়েছিলো। পেডিয়াট্রিক সায়েন্সের সহকারী অধ্যাপক ও এই সমীক্ষার মূল তদন্তকারী, গবেষক পওলিনা নোওয়িকা বলেছেন, “সমস্যা জাঁকিয়ে ধরার পূর্বেই পরিবারের সকলের সঙ্গে সেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার উদ্দেশ্য আসলে তাদের বিষয়টি নিয়ে তাদের আরও সচেতন করা। ঠাকুরমা, দিদিমাদের কাছে বড় হওয়া এই প্রজন্মের শিশুদের কীভাবে সামাল দিতে হয়, কীভাবে গণ্ডি টেনে দিতে হবে, সেই বিষয়েও জানিয়ে রাখা দরকার।”
বয়স্কদের কাছে বাড়ির ছোটনা বড়ই আদরের। তবে তাদের প্রজন্মের সঙ্গে এই প্রজন্মের ফারাক রয়েছে। সেইসঙ্গে ডায়াবেটিস, স্থূলতার মতো নতুন নতুন রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। তাই শিশুদের সচেতন করার পূর্বে পরিবারের অন্য সকলের এই বিষয়ে সম্যক ধারণা রাখা দরকার। স্থূলতার মতো রোগ প্রতিরোধ করতে ঘরে-বাইরে শিশুদের কীভাবে থাকা উচিত, সেই বিষয়েও ক্রমাগত আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে প্রথম থেকে একটি পরিসর তৈরি করে দিতে হবে। যেখানে খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে শরীরচর্চা- সবই থাকবে অভিভাবকদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org