দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, কার্ডিয়োরেসপিরেটরি ফিটনেসের ক্ষেত্রে সিঁড়ি ভাঙার মতো ব্যায়াম অনেকটা বেশি কার্যকরি। তবে খুব বেশি উঁচু কিংবা খাড়া সিঁড়ি না হওয়া বাঞ্ছনীয়।
বাড়ি ফিরে বা অফিসে পৌঁছেই যদি দেখেন যে, লিফ্ট খারাপ, তা হলেই আপনার মাথায় হাত। সিঁড়ি ভেঙে দোতলা কিংবা তিনতলায় উঠতে গেলে আত্মারাম খাঁচা ছাড়া হওয়ার উপক্রম হয়ে থাকে। লিফ্ট কাজ করলে কোনও রকম সিঁড়ি ব্যবহার করার কথা মাথাতেই আসে না। তবে হার্টের যাবতীয় সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে এক হাজার পা হাঁটার চেয়ে ৫০টি সিঁড়ি ভাঙা অনেকটা বেশি কার্যকরি। তেমনটিই জানাচ্ছে নতুন এক গবেষণা। আমেরিকার টুলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এই বিষয়টি আলোকপাত করেছেন।
গবেষকরা বলেছেন, উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা কিংবা ডায়াবেটিসের মতো সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে স্বাস্থ্য সচেতন যারা তারা নিয়মিত হাঁটাহাটি করেন। কিন্তু তার চেয়েও বেশি কার্যকরি হলো সিঁড়ি ভাঙা। প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ৫০টি সিঁড়ি ভাঙলে স্ট্রোক, করোনারি আর্টারি ডিজ়িজ়ের মতো সমস্যা অন্যান্যদের তুলনায় ২০ শতাংশ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে।
এই বিষয়ে টুলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ও গবেষক দলের প্রধান চিকিৎসক লু কিই বলেছেন, “কার্ডিয়োরেসপিরেটরি ফিটনেসের ক্ষেত্রে সিঁড়ি ভাঙার মতো ব্যায়াম অনেকটা বেশি কার্যকরি। তবে খুব বেশি উঁচু কিংবা খাড়া সিঁড়ি না হওয়া বাঞ্ছনীয়।”
ইংল্যান্ডের বায়োব্যাঙ্ক ও সাড়ে ৪ হাজারেরও বেশি সাধারণ মানুষ এই সমীক্ষায় অংশ নেন। তাদের থেকে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে তাদের রোগ সংক্রান্ত পারিবারিক ইতিহাস, জীবনযাপন ও সারাদিনে সিঁড়ি ভাঙার প্রভাব খুঁটিয়ে দেখেন গবেষকরা। গবেষণাপত্রটি ‘অ্যাথিরোস্ক্লেরোসিস’ জার্নালে প্রকাশিত হয়। চিকিৎসকরাও এই বিষয়ে সহমত পোষণ করেছেন বলে উল্লেখ করা হয় গবেষণায়। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org