দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানবিক দিক বিবেচনায় এনে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হলো জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে।
প্রস্তাবে অবিলম্বে জিম্মিদের নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান জানানো হয়। প্রস্তাবের পক্ষে নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে ১২ সদস্যই ভোট দিয়েছে। পরিষদের স্থায়ী ৫ সদস্যের কেওই ভেটো শক্তি প্রয়োগ করেনি। একইসঙ্গে কোনো সদস্য দেশই বিপক্ষে ভোট না দিলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং রাশিয়া ভোটদানে বিরত ছিল।
স্থানীয় সময় বুধবার (১৫ নভেম্বর) গাজায় মানবিক দিক বিবেচনায় এনে সাময়িক যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলো মাল্টা। ইসরায়েলি বাহিনী এবং সশস্ত্র হামাসের যুদ্ধের প্রায় দেড় মাসের মাথায় এই প্রস্তাব পাস হলো। তবে এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে ইসরায়েল।
গত ৭ অক্টোবর এই যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এই সংকট নিয়ে পঞ্চমবারের মতো বসলো জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। আগের বৈঠকে উত্থাপিত প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দেওয়ায় সেটি পাস হয়নি। ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাস গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আকস্মিকভাবে হামলা চালায়। এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন ইসরাইলী নিহত হন বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। যদিও শুরুতে এই সংখ্যা ১ হাজার ৪০০ দাবি করে দেশটি।
তাছাড়াও ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা প্রায় ২৪০ জনকে জিম্মি করে রেখেছে বলে দাবি করে আসছে ইসরায়েল। হামাসের হামলার জবাবে ওই দিনই গাজায় ব্যাপক হামলা শুরু করে দেয় ইসরায়েল। নির্বিচার এবং বিরামহীন হামলায় গাজায় প্রায় সাড়ে ১১ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে ৮ হাজারের বেশি নারী এবং শিশু। পুরো গাজা যেনো এক ধ্বংসপুরিতে পরিণত হয়েছে। হাসপাতাল, মসজিদ, গীর্জা সবখানেই ইসরাইলের হামলা অব্যাহত রয়েছে। সব মিলিয়ে এক মহা মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে ফিলিস্তিনিদের।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org