দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা সাধারণ রান্নায় স্বাদ আনতে ধনেপাতা ব্যবহার করি। তবে এর স্বাস্থ্যগুণও একেবারে কম নয়। পুষ্টিবিদরা শীতে নিয়মিত ধনেপাতা খাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু কেনো? সেই বিষয়টি আজ জেনে নিন।
শীতে বাঙালির হেঁশেল ঘরে ধনেপাতার গন্ধে যেনো ম ম করে! সর্ষে পাবদার ঝোলে বা পাঁচমিশেলি তরকারিতে- ধনেপাতা দিলে স্বাদ ও গন্ধ যেনো আরও বদলে যায়। আবার শীতের চাদরে নিজেকে মুড়িয়ে ঠাণ্ডা হাওয়ায় ধনেপাতা দিয়ে মাখা আলু ফুচকা খাওয়ার অনুভূতিটাই অন্যরকম। শীত আসতে না আসতেই তাই যাদের জায়গা আছে তারা বাড়ির একফালি বাগানে ধনেপাতার চাষ শুরু করে দেন। ধনেপাতা রান্নায় স্বাদ আনে এটি ঠিক, তবে এর স্বাস্থ্যগুণও নেহায়েত কম নয়। পুষ্টিবিদরা শীতে নিয়মিত ধনেপাতা খাওয়ার পরামর্শও দিয়ে থাকেন। কিন্তু কেনো? আজ জেনে নিন সেই বিষয়টি।
দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে
ধনেপাতায় ভিটামিন এ রয়েছে। এই ভিটামিন চোখের যত্ন নেয়। চোখের জ্যোতিও বৃদ্ধি করে। যারা দীর্ঘদিন ধরে চোখের সমস্যায় ভুগছেন, তারা ভরসা রাখতে পারেন ধনেপাতায়। এতে বেশ উপকার পাবেন।
শরীরে পুষ্টি জোগাতে
শীতে শরীরে নানা ধরনের পুষ্টির ঘাটতিও দেখা দেয়। এর ফলস্বরূপ নানা রোগবালাই বাসা বাঁধে শরীরের মধ্যে। ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন এ, সি ও পটাশিয়াম সমৃদ্ধ ধনেপাতা শরীরের পুষ্টি জোগায়। তাই শরীর ফিট রাখতে শীতকালে রান্নায় ধনেপাতা ব্যবহার করতে পারেন।
প্রতিরোধ ক্ষমতাও উন্নত করে
ধনেপাতায় রয়েছে ভিটামিন সি। ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও বাড়িয়ে তোলে। তাছাড়াও বিভিন্ন ধরনের জীবাণু এবং রোগের সঙ্গে শরীর যাতে লড়তে পারে, সেজন্য শরীরকে ভিতর থেকে করে তোলে আরও মজবুত এবং শক্তিশালী।
হজমের গোলমাল ঠেকাতে
সাধারণ শীতকাল হলো উৎসবের মৌসুম। আর উৎসব মানেই দেদারছে খাওয়া-দাওয়া, ভূরিভোজ। দেদারছে খাওয়া-দাওয়ার কারণে হজমের গোলমাল লেগেই থাকে এই সময়। ধনেপাতা হজমের গোলমাল ঠেকাতেও সাহায্য করে। ধনেপাতায় থাকা ফাইবার হজমের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজমের সমস্যা থেকে বাঁচতে ধনেপাতা খেতেই পারেন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org