দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে অনেক প্রচলিত ধারণা রয়েছে আমাদের মনে। যদিও সেই সব ধারণার আদতে বৈজ্ঞানিক কোনও ভিত্তিই নেই।
খুব প্রয়োজন না পড়লে বাইরের খাবার কখনও খান না। ঘরে তো বটেই, অফিসে গেলে সারাদিন ধরেই ডিটক্স পানীয় খান। সুস্থ থাকতে হলে জীবনযাপনে যে সব পরিবর্তন আনতে বলা হয়, তা সবই রয়েছে আপনার প্রতিদিনের রুটিনে। আপনার এমন অভ্যাস দেখে সহকর্মীদের মনে হতে পারে যে, রোগ আসলে আপনার জন্য নয়। অপরদিকে, অফিসে পা রাখা মাত্রই কয়েক শো হাঁচি ফেলা অন্য সহকর্মীর যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একেবারেই শূন্য। তা আলাদা করে বলার অপেক্ষায় রাখে না। শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে এমন অনেক প্রচলিত ধারণা রয়েছে মানুষের মনে। যদিও সে সব ধারণার আদতেও বৈজ্ঞানিক কোনও ভিত্তিই নেই। উপর থেকে দেখতে ভালো লাগছে মানেই যে তার শরীর কিংবা মনের গভীরে কোনও সমস্যা হতে পারে না। এমনটি ধরে নেওয়া একেবারেই উচিত না। আবার রোগা হলেই দেখতে ভালো লাগবে, এমনটিও ভেবে নেওয়া ঠিক নয়।
শরীর নিয়ে কী কী ধারণা প্রচলিত রয়েছে?
# ওজন কমে গেছে মানেই দেখতে সুন্দর লাগছে। বেশির ভাগ মানুষের মনে একটি এমন ধারণা রয়েছে। তবে ওজন ঝরানোর একাধিক পদ্ধতি রয়েছে। সকলের ক্ষেত্রে সবটা কাজও করে না। আবার অনেকেই এমন কড়া ডায়েট করেন, উপকারের বদলে তা শরীরের উপর খারাপ প্রভাবও ফেলে।
# অনেকেই মনে করেন যে, বিপাকহারের মান উন্নত করতে পারলে শরীর, ত্বক, চুল- সবই ভালো হবে। এমন ধারণা কিন্তু পুরোপুরি সত্যি নয়। শরীর, স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হলে আগে জীবনযাত্রার মান উন্নত করা দরকার।
# হয়তো ত্বকে জেল্লা ফুটে উঠছে। সুতরাং শরীর এবং মন- দুই-ই ভালো। এই বিষয়ে মনোবিদরা বলেছেন, এমন অনেক রোগী রয়েছেন, যাদের বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় থাকে না যে, আসলে মনের ভিতর কী চলছে। বহু মানুষের ত্বক, চুল ভালো হওয়ার কারণ প্রকৃতপক্ষে তাদের জিন। তার সঙ্গে মনের কোনই যোগ নেই।
# দু’দিন অন্তর অন্তর শরীর খারাপ। বার বার হাঁচি, সর্দি, কাশি বা ডায়েরিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানেই যে সব দোষ প্রতিরোধ ক্ষমতার, এমনটি নয়। এইসব রোগের নেপথ্যে আরও বড় কোনও কারণও থাকতে পারে।
# সারাদিন ধরে নানা রকম ডিটক্স পানীয় খান। আপনার এই অভ্যাস দেখে অনেকেই ভাবতে পারেন যে, আপনার শরীরে কোনও দূষিত পদার্থ জমার কোনও রকম অবকাশই নেই। এমন ধারণা ভিত্তিহীন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org