দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) -এর ব্যবহার দিনকে দিন বাড়ছে। পৃথিবীর বিভিন্ন পেশাদার ক্ষেত্রগুলোর পাশাপাশি এবার শরীরে রোগ নির্ণয়ও করবে এই প্রযুক্তিটি। এআই এবার ডায়াবেটিস শনাক্ত করবে!
সাম্প্রতিক একটি গবেষণা বলেছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টাইপ ২ ডায়াবেটিসও শনাক্ত করতে পারে। গলার স্বর শুনেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে বলে দেওয়া সম্ভব যে, শরীরে ডায়াবেটিস বাসা বেঁধেছে কি-না।
সম্প্রতি মায়ো ক্লিনিক-এর ‘ডিজিট্যাল হেলথ’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে এই সমীক্ষাটি। মহিলাদের ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে এই ডায়াবেটিস শনাক্তকরণের সাফল্যের হার ৮৬ শতাংশ। পুরুষের ক্ষেত্রেও ৮৬ শতাংশ। ডায়াবেটিস আক্রান্ত ও আক্রান্ত নন, মোট ২৬৭ জনের মধ্যে মূলত এই সমীক্ষাটি চালানো হয়।
গবেষণায় দুই সপ্তাহ ধরে দিনে ৬ বার প্রত্যেকের গলার স্বর রেকর্ড করা হয়েছিলো। রোবট চিকিৎসক ১০ সেকেন্ড গলার স্বরের রেকর্ড শুনে ডায়াবেটিকদের চিহ্নিত করেছে। রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়লে সব সময় বাইরে থেকে সেটি বোঝা যায় না। অনেক সময় উল্লেখযোগ্য কোনও উপসর্গও প্রকাশ পেতে দেখা যায় না। যখন এই রোগ ধরা পড়ে, ততোক্ষণে হয়তো রক্তে শর্করার মাত্রা বিপদসীমার মাত্রা পেরিয়ে যায়।
তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে এতো সহজে ডায়াবেটিস নির্ণয়ের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয় এর চর্চা। এই সমীক্ষার আয়োজক কমিটিতে থাকা গবেষক ইয়ান ফোসাট জানিয়েছেন, স্বর শুনে ডায়াবেটিস চিহ্নিত করার এই প্রযুক্তি নবজাগরণের মতোই। তবে এই ভয়েস প্রযুক্তির মাধ্যমে আরও অন্যান্য রোগ শনাক্ত করা যায় কি-না, তা নিয়ে গবেষণাও চালানো অব্যাহত রয়েছে।’’
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org