দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বয়স যতোই হোক না কেনো মানুষের ইচ্ছা শক্তির উপর সবকিছু নির্ভর করে। শরীর আর মনের যত্ন একসঙ্গে নিতে হলে ভরসা রাখতে পারেন কয়েকটি যোগাসনের উপর। কোন আসনগুলি নিয়ম করে করলে চিরতরুণ থাকবেন? জেনে নিন সেই বিষয়টি।
বার্ধক্যে তারুণ্য বজায় রাখতে ব্যায়ামের বিকল্প নেই। বয়সের চাকা সামনের দিকে যতোই এগোতে শুরু করে, চেহারার জৌলুসও ধীরে ধীরে কমতে থাকে। কালের নিয়মে বয়স বাড়ে সেটি ঠিক, তবে বয়সের ছাপ যাতে চেহারায় না পড়ে, তেমন বাসনা সকলের মনে সুপ্ত থাকে। অনিয়মিত জীবনযাপনের কারণে কম বয়সেই চেহারায় বার্ধক্যের ছাপও পড়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে অনেকেই অত্যন্ত চিন্তিত থাকেন। অকালবার্ধক্যের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া গেলেও বিগতযৌবনে তারুণ্য ধরে রাখা অতো সহজ নয়। তবে তা একেবারে অসম্ভবও নয়। চিকিৎসকরা মনে করেন, বয়স ধরে রাখার সঙ্গে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার যোগাযোগ বিদ্যমান। শরীর ও মনের যত্ন একসঙ্গে নিতে হলে ভরসা রাখতে পারেন কয়েকটি যোগাসনের উপর। কোন আসনগুলো নিয়ম করে করলে চিরতরুণ থাকবেন? আজ জেনে নিন সেই বিষয়টি।
ভুজঙ্গাসন
প্রথমেই উপুড় হয়ে ম্যাটের উপর শুয়ে পড়ুন। তবে পা সোজা করে রাখুন। দুই হাতের তালু কাঁধের পাশে ঠিক মাটিতে রাখুন, কনুই থাকুক আপনার শরীর ঘেঁষে। আগু-পিছু করে আরামদায়কভাবে নিজের অবস্থান ঠিক করে নিতে হবে। কপাল মাটিতে রেখে চোখ বন্ধ করতে হবে। এবার ধীরে ধীরে শ্বাস নিন। হাতে ভর না দিয়ে মাথা ও বুক উপরের দিকে তুলুন। কিছুক্ষণ এই ভঙ্গিতে থাকার পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় আসুন।
বালাসন
প্রথমেই হাঁটু মুড়ে গোড়ালির উপর বসুন। তারপর দুই হাত প্রসারিত করে পেট মুড়ে সামনের দিকে ঝুঁকুন। খেয়াল রাখবেন বুক যেনো ঊরু স্পর্শ করে। আপনার মাথা মাটিতে ঠেকিয়ে রাখুন। শ্বাস স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করতে হবে। নিয়মিত এই আসনগুলো করলে উপকার পেতে পারেন।
পশ্চিমোত্তাসন
প্রথমে সামনের দিকে পা ছড়িয়ে বসুন। পায়ের পাতার অভিমুখ রাখুন আপনার দিকেই। আপনার শিরদাঁড়া সোজা রাখুন। এখন শ্বাস নিন। দুটো হাত একসঙ্গে মাথার উপর সোজা করে তুলুন। তারপর শ্বাস ছাড়ুন। এখন আস্তে আস্তে সামনের দিকে ঝুঁকুন। দু’টো হাত গোড়ালি পর্যন্ত পৌঁছালে একটির কব্জি দিয়ে আর একটি ধরে রাখতে হবে। এখন মাথা রাখুন হাঁটুতে। তারপর শ্বাস ছাড়ুন। খেয়াল রাখুন, শিরদাঁড়া যেনো সামনের দিকে প্রসারিত থাকে। এবার শ্বাস নিন। তারপর আস্তে আস্তে দুটো হাত সরিয়ে মাথার উপর নিয়ে গিয়ে শ্বাস ছাড়ুন। এখন হাত দুটো নামিয়ে নিয়ে আগের ভঙ্গিতেই ফিরে যান। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org