দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের গাজায় মানবিক সহায়তা বাড়ানোর জন্য ইসরায়েলকে ৩০ দিনের সময়সীমা বেধে দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সময়মতো এই নির্দেশ না মানলে ইসরায়েলের সামরিক সহায়তা কমানোর হুঁশিয়ারিও দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন।
এই বিষয়ে ইসরায়েলি সরকারের কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে, যে বিষয়টি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর নিশ্চিত করেছে। চিঠিটি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন স্বাক্ষরিত।
চিঠিতে বলা হয়েছে যে, গত মাসে ইসরায়েল গাজার উত্তর এবং দক্ষিণের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ মানবিক চলাচল বাধাগ্রস্ত করেছে, যা মানবিক পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলেছে। এছাড়াও ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে অসংখ্য বেসামরিক মানুষের মৃত্যুও ঘটেছে।
চিঠিতে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ১.৭ মিলিয়ন ফিলিস্তিনি বর্তমানে আল-মাওয়াসি এলাকায় প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যে অমানবিকভাবে বসবাস করছেন, যেখানে অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে ‘মারাত্মক সংক্রামক রোগ’ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিও রয়েছে। মার্কিন প্রশাসন বলেছে যে, ইসরায়েলি সামরিক অভিযান ওই এলাকার জীবনযাত্রার মানকে আরও ব্যাপকভাবে সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
চিঠির মাধ্যমে ইসরায়েলকে বলা হয়েছে যে, আগামী ৩০ দিনের মধ্যে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর বিষয়ে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। না হলে ইসরায়েলের জন্য মার্কিন সামরিক সহায়তা নীতি পরিবর্তিতও হতে পারে। এ সম্পর্কে মার্কিন আইন উল্লেখ করে বলা হয়, যারা মানবিক সহায়তা বিতরণে বাধা সৃষ্টি করে, তাদের সামরিক সহায়তা নিষিদ্ধ করার বিধানও রয়েছে।
এদিকে ইসরায়েলের পক্ষ হতে বলা হয়, তারা এই চিঠির বিষয়টি গুরুত্ব সহকারেই নিচ্ছে এবং মার্কিন অংশীদারদের সঙ্গে এটি নিয়ে আলোচনাও করবে।
চিঠিতে ইসরায়েলকে বলা হয়, সমস্ত ধরণের মানবিক সহায়তা বাড়ানোর জন্য কঠোর পদক্ষেপও নিতে হবে। অন্তত প্রতিদিন ৩৫০টি ট্রাকের মাধ্যমে খাদ্য ও অন্যান্য সাহায্য গাজার ৪টি প্রধান ক্রসিং দিয়ে পৌঁছাতে হবে।
তবে ইসরায়েল দাবি করেছে যে, তারা গাজার উত্তরে কোনো সীমাবদ্ধতা আরোপই করছে না এবং সাহায্যের প্রবাহে কোনো বাধাও দিচ্ছে না। বরং তারা হামাসকে সাহায্য চুরি করার জন্য অভিযুক্তও করেছে, যা হামাস অস্বীকার করে।
উল্লেখ্য, গাজায় হামাস বিরোধী অভিযানে ইসরায়েল মার্কিন সমরাস্ত্রের ওপরই ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। গত এক বছর ধরে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধে ইসরায়েল লিপ্ত রয়েছে, তাতে মার্কিন সরবরাহকৃত বিমান, বোমা ও গোলাবারুদই প্রধান ভূমিকা রাখছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org