দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বপ্ন দেখে তা মনে রাখা সত্যিই দুষ্কর। আর তাই রাতের ঘুমে দেখা স্বপ্নের রেশ ধরে রাখতে চান অনেকেই। এখন থেকে তা সম্ভব হতে চলেছে জাপানের বিজ্ঞানীদের এক অভিনব আবিষ্কারের মাধ্যমে!
জাপানি বিজ্ঞানীরা এমন একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন যে, যা মানুষের স্বপ্নকে রেকর্ড করে রাখতে সক্ষম! অর্থাৎ, রাতে আপনি ঘুমিয়ে যে স্বপ্ন দেখেন, তা পরবর্তীতে আবারও দেখে নিতে পারবেন বড় পর্দায়!
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দিনের বিভিন্ন ঘটনা, চিন্তা এবং ক্লান্তি আমাদের মনের উপর প্রভাব ফেলে, যার প্রতিফলন ঘটে রাতের ঘুমের মধ্যে। যদিও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ঘুম ভাঙার পরই সেই স্বপ্নের স্মৃতি হারিয়ে যায়, তবুও কিছু দুঃস্বপ্ন মনে গেঁথে থাকে দীর্ঘদিন ধরে। অনেকেই বলেন, স্বপ্নের সঙ্গে জীবনের নানা ঘটনার সম্পর্কও রয়েছে, যা ইঙ্গিত দেয় শুভ কিংবা অশুভ কিছু ঘটনার। -খবর আনন্দবাজারের।
স্বপ্ন রেকর্ডের যন্ত্রটি তৈরি করার জন্য জাপানের বিজ্ঞানীরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কিংবা এআই প্রযুক্তির ব্যবহার করেছেন। এই প্রযুক্তি মস্তিষ্কের সংকেত বিশ্লেষণ করে স্বপ্নের ছবিকেও ধরা দেয়, যা পরবর্তীতে ভিডিও আকারেই দেখা যাবে। এই অসাধারণ যন্ত্রটি তৈরি করেছেন জাপানের কিয়োটোতে অবস্থিত ‘এটিআর কম্পিউটেশনাল নিউরোসায়েন্স’ গবেষণাগারের বিজ্ঞানীরা। গবেষণাগারে স্বেচ্ছাসেবকদের ঘুমের প্রাথমিক পর্যায়ের মস্তিষ্কের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করে তারা স্বপ্নের বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ করতেও সক্ষম হয়েছেন। তারা ৬০ শতাংশ নির্ভুলভাবে স্বপ্নের বিষয়বস্তু সম্পর্কে ধারণাও করতে পেরেছেন।
গবেষণা দলের প্রধান অধ্যাপক ইউকিয়াসু কামিতানি জানিয়েছেন যে, সাধারণ মস্তিষ্কে ঘুমের সময় যে কার্যকলাপ চলে, তা বিশ্লেষণ করে স্বপ্নের তথ্য বের করে আনাও সম্ভব হয়েছে। মস্তিষ্কের প্রতিচ্ছবি ব্যবহার করে অ্যালগরিদমের মাধ্যমে সেই স্বপ্নকে ভিডিওতে রূপান্তর করার প্রচেষ্টা চলছে।
স্বপ্নের বিষয় নিয়ে দীর্ঘ গবেষণার পর এই যন্ত্রটি উদ্ভাবন করা হয়, যেটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তবে বিজ্ঞানীরা যন্ত্রটির আরও উন্নত সংস্করণ তৈরির প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, যাতে স্বপ্নের ‘রেজোলিউশন’ বা স্পষ্টতা আরও ভালো হয়।
আমরা সবাই জানি, স্বপ্ন দেখা মানুষের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। গবেষকদের ধারণা মতে, স্বপ্নের রহস্য উন্মোচন করলে মানুষের মস্তিষ্ক সম্পর্কে আরও গভীর ধারণাও পাওয়া যাবে। যন্ত্রটির উন্নত সংস্করণ ভবিষ্যতে স্বপ্নের বিস্তারিত তথ্য জানাতে সহায়তা করবে বলেও বিজ্ঞানীরা মনে করছেন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org