দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেক সময় অনেকেই অতিরিক্ত মানসিক চাপে ভোগেন। প্রতিদিন অফিসে এসে কাজে মন বসেনা। কিছুই করতে ভালোও লাগে না? এমন সমস্যা অনেকেরই হচ্ছে। তবে এই পরিস্থির সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে কাজ করার সহজ কিছু উপায় জেনে নিন আজ।
মনোবিদ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মন কিন্তু তার আপন গতিতেই ছুটবে। তাকে ধরেবেঁধে বশে রাখা খুব সহজ কাজ নয়। কাজের চাপ যখন বাড়ে, তখন এমন সমস্যা দেখা দেয় অনেকের মধ্যে। এছাড়াও বিরতি না নিয়ে যারা একটানা কাজ করে যান, তারাও এমন সমস্যার মুখোমুখি হয়ে থাকেন। সংসার ও পেশা সামলাতে গিয়ে হিমশিম দশা হয়ে যায়। তার থেকেই দেখা দেয় অবসাদ। তবে এমন কিছু কৌশল রয়েছে, যা মেনে চললে যে কোনও কাজেই মন বসানো অনেকটা সহজ হয়ে যাবে। দুশ্চিন্তা, উদ্বেগও দূরে চলে যাবে।
মন ভালো রাখার সহজ কয়েকটি উপায়
# অন্তত দিনে একবার ধ্যান করুন। কাজের চাপের কারণে কখনও এড়িয়ে যাবেন না। নিজের জন্য মিনিট দশেক সময় বের করে নিতে হবে। ধ্যানের অভ্যাস তৈরি হলে যে কোনও কাজেই মন দেওয়াও তখন সহজ হবে।
# কাজের বিষয়ের বাইরেও পড়াশোনা করার অভ্যাস থাকলে সেটা মন ভালো রাখতে খুবই সাহায্য করে। মোবাইল কিংবা ল্যাপটপে সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকবেন না। বরং কাজের চিন্তা কমাতে প্রতিদিন নিয়ম করে একটা নির্দিষ্ট সময় বই পড়ার অভ্যাস করতে পারেন। তাতে কাজে মন বসে খুবই তাড়াতাড়ি। মনও অনেক ফুরফুরে থাকবে।
# বিরতি নিয়ে তারপর কাজ করা ভালো। এতে করে মনঃসংযোগও বাড়ে। ৫ মিনিটের বিশ্রামও মন ভালো রাখতে সাহায্য করে। তারপর যদি মনোযোগ দিতে একান্তই সমস্যা হয়, তাহলে কাজের মধ্যে ৩০ মিনিটের ছোট্ট ঘুম কিংবা ‘পাওয়ার ন্যাপ’ নিয়ে নিতে পারেন। দেখবেন উদ্বেগ অনেকটা কমে গেছে। আবার কাজও তাড়াতাড়ি শেষ করতে পারবেন।
# ইতিবাচক চিন্তা-ভাবনা করুন। কখন কাজ শেষ হবে, এর পরের দিন কী পরিস্থিতি থাকবে, এইসব না ভেবে লক্ষ্য স্থির করে কাজ করতে থাকুন। ছোট ছোট সাফল্যগুলোকে পাত্তা না দিয়ে উপভোগ করুন। এমন ভাবনা থাকলে মনে অবসাদ বাসা বাঁধতে পারবে না কখনও।
# একটি কাজ শেষ করে তবেই অপর কাজে হাত দিন। অনেক সময়ই দিনের শুরুটা ঢিমে তালে কাজ শুরু করেন অনেকেই। পরের দিকে পাহাড়প্রমাণ কাজ জমে গেলে, আর তখন নাকানিচোবানি খেতে হয়। তাই শুরুতেই তালিকা বানিয়ে সময় ধরে কাজ করতে হবে। তাহলে দুশ্চিন্তায় ভুগতে হবে না আপনাকে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org