দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ২০২৩ সাল থেকে ২০২৪ সালে বাংলাদেশের ভোক্তাদের ব্যয় সংক্রান্ত একটি বিশ্লেষণ পরিচালনা করেছে ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা প্রদানে বৈশ্বিকভাবে শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান ভিসা।

প্রতিষ্ঠানটি বিশ্লেষণ অনুয়ায়ী, অনলাইন এবং কন্ট্যাক্টলেস পেমেন্ট বেড়ে যাওয়ার কারণে ডিজিটাল পেমেন্টের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের মধ্যে এবং আন্তর্জাতিক পরিসরে, উভয় ক্ষেত্রেই কেনাকাটায় একই প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
২০২৩ সালের তুলনায়, ২০২৪ সালে সামগ্রিক ব্যয়ে ১৪ শতাংশ ও লেনদেনের পরিমাণে ১৭ শতাংশ বৃদ্ধি লক্ষ্য করেছে। ক্রেডিট এবং ডেবিট কার্ড ব্যবহারের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে ও এইক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে অনলাইনে পেমেন্ট প্রদান। দোকানে গিয়ে কার্ড ব্যবহার করে পেমেন্ট প্রদানের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও, অনলাইন লেনদেনে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দেশের মধ্যে ভোক্তাদের ব্যয়ে বেশ এগিয়ে রয়েছে ই-কমার্স খাত। গ্রাহক এবং ক্রেতাদের ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড ব্যবহারের সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক লেনদেনের ক্ষেত্রে ইন-স্টোর ফিজিক্যাল পেমেন্ট ও অনলাইন ক্রস-বর্ডার কেনাকাটা, উভয় ক্ষেত্রেই উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি ঘটেছে।
বিষয়টি নিয়ে ভিসা বাংলাদেশ, নেপাল এবং ভুটানের কান্ট্রি ম্যানেজার সাব্বির আহমেদ বলেন, “আমাদের সর্বশেষ ট্রেন্ড বিশ্লেষণ দেখা গেছে যে, বাংলাদেশের মানুষ ডিজিটাল এবং কন্ট্যাক্টলেস পেমেন্ট সুবিধার দিকেই ঝুঁকছে। ক্রেডিট এবং ডেবিট কার্ড, অনলাইন ও ইন-স্টোর পেমেন্টসহ দেশের মধ্যে এবং আন্তর্জাতিক পরিসর সকল ক্ষেত্রেই একই প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। আমাদের দক্ষ ভিসা কনসাল্টিং এবং অ্যানালিটিকস টিমের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের ভোক্তা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং গ্রাহকদের জন্য নিরাপদ ডিজিটাল পেমেন্ট সুবিধা প্রদান করছি। ভিসা -তে আমাদের লক্ষ্য পেমেন্ট পরিশোধ এবং গ্রহণের ক্ষেত্রে সেরা মাধ্যম হয়ে ওঠা। পাশাপাশি, বিশ্ব মানসম্পন্ন নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বাংলাদেশের ডিজিটাল ল্যান্ডস্কেপ শক্তিশালী করে তোলার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
ভোক্তাদের ব্যয়ের পাশাপাশি, এই বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যেও ডিজিটাল পেমেন্টের আওতায় আসার হার বেড়েছে- কার্ড ব্যবহার করে ব্যয় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে, বিজনেস ক্রেডিট কার্ডের ব্যয় এবং লেনদেনের সংখ্যা ১৩৫ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে, যা দেশের ডিজিটাল অর্থনীতি বিকাশেরই ইঙ্গিত।
বাংলাদেশে ‘ট্যাপ টু পে’ বা ‘কন্ট্যাক্টলেস পেমেন্ট’ -এর জনপ্রিয়তা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৩ সালে যেখানে এর ব্যবহার ছিল ৬ শতাংশ, যা ২০২৪ সালে বেড়ে ১৩ শতাংশ হয়েছে। দেশের মধ্যে কন্ট্যাক্টলেস পেমেন্ট তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। মূলত, কন্ট্যাক্টলেস ক্রেডিট এবং ডেবিট কার্ডের ব্যবহারের ফলে এ প্রবৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে।
দেশের মধ্যে ব্যয়ের প্রায় অর্ধেকই ডিজিটাল ওয়ালেট লোড করার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাত যেখানে দেশের ভোক্তারা সর্বাধিক ব্যয় করেছেন তার মধ্যে রয়েছে ভ্রমণ, ডিসকাউন্ট স্টোর, ওষুধের দোকান এবং স্বাস্থ্যসেবা। অপরদিকে, শিক্ষা, বিজনেস টু বিজনেস (বিটুবি) পেমেন্ট, খাবার ও মুদিপণ্য কেনা ও সরকারি সেবা গ্রহণের বেশিরভাগ ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট সম্পন্ন হয়েছে।
ক্রস-বর্ডার ব্যয় নিয়ে ভিসার বিশ্লেষণে দেখা যায়, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ব্যয়ের ৯০ শতাংশই সম্পন্ন হয়েছে ২০টি দেশে। এইক্ষেত্রে শীর্ষ ৫ দেশ হচ্ছে: ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, থাইল্যান্ড এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত। এই ৫টি দেশ ক্রস-বর্ডার ব্যয়ের অর্ধেকেরও বেশি প্রতিনিধিত্ব করে। গত বছর বাংলাদেশিরা ইন-স্টোর কেনাকাটায় সবচেয়ে বেশি ব্যয় করেছে ভারত, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সিঙ্গাপুরে।
যদিও, ভারত এখনও ক্রস-বর্ডার ব্যয়ের শীর্ষে রয়েছে, তবে গত এক বছরে বাংলাদেশিদের কার্ডের মাধ্যমে ভারতে ব্যয় ১০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা থাইল্যান্ডে ব্যয় ২০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে, যার পেছনে মূল ভূমিকা রেখেছে মেডিকেল ট্যুরিজম। বাংলাদেশের ভোক্তারা থাইল্যান্ডে স্বাস্থ্যসেবায় ২৫ শতাংশ বেশি ও ফার্মেসি খাতে ৩৫ শতাংশেরও বেশি ব্যয় করেছেন। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ক্রস-বর্ডার ব্যয় হয়েছে এমন দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে মালয়েশিয়া, চীনের মূল ভূখণ্ড এবং ভিয়েতনাম।
দেশের অভ্যন্তরে, ডিজিটাল লেনদেনের অধিকাংশ সম্পন্ন হয়েছে ঢাকায়। রাজধানীতে গত বছরের মোট ব্যয়ের ৭৫ শতাংশ ও মোট লেনদেনের ৮০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। এইক্ষেত্রে, ২০২৪ সালে ব্যয়ে ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটেছে, যেখানে ৬০ শতাংশ গ্রাহক অনলাইনে পেমেন্ট প্রদানেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেছেন। এছাড়াও, অন্যান্য শহর; যেমন: গাজীপুর, রাজশাহী, রংপুর এবং ময়মনসিংহেও ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি ঘটেছে।
খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org