দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অধিকাংশ ব্যক্তিই দৈনন্দিন জীবনে নানা কারণে মানসিক চাপের মধ্যে থাকেন। এই স্ট্রেসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে যোগব্যায়াম বিশেষভাবে উপকারে আসতে পারে। কিন্তুয কীভাবে সাহায্য করবে এটি? আজ বিষয়টি জেনে নিন।

দৈনন্দিন জীবনে কাজ এড়িয়ে চলার কোনো উপায় নেই। তবে মানসিক চাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায়ও রয়েছে। প্রতিদিন যোগব্যায়াম করলে উপকার পাবেন। স্ট্রেস কমাতে ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে যোগব্যায়ামের জুড়ি নেই।
মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরি যোগাসন
মনোবিদ পায়েল চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য হলো, ‘যোগাসন শুধু ফিটনেসের জন্যই নয়, মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্যও জরুরি একটি বিষয়।’ তার মতে, প্রতিদিন যোগাসন করলে স্ট্রেস হরমোনের মাত্রাও কমে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে ও ইমোশনাল হেলথ উন্নত হয়।
‘হ্যাপি হরমোন’ নির্গত হয়
জানা গেছে, প্রতিদিন যোগব্যায়াম করার কারণে মস্তিষ্কে ‘হ্যাপি হরমোন’ নির্গত হয়। ডোপামিন, সেরোটোনিন এবং নোরেপাইনফ্রাইনের মতো ‘হ্যাপি’ হরমোনগুলোও স্ট্রেস কমাতে ও মনকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। এক্সারসাইজ় করলে স্ট্রেস হরমোনের মাত্রাও কমে। সহজ কথায় বললে , যোগব্যায়াম করলেই মন ভালো থাকবে।
অবসাদ দূর হবে
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, যোগব্যায়াম করলে মানসিক অবসাদও দূর হয়। ডিপ্রেশন দূর করার ক্ষেত্রে যোগব্যায়ামকে টিট্রমেন্ট হিসেবেই ধরা হয়ে থকে। এর কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
স্ট্রেস থেকে মুক্তি দেয়
এক গবেষণায় দেখা গেছে, জেন জ়িরা বেশি অ্যাংজ়াইটি, স্ট্রেস, ডিপ্রেশনে ভোগে। দীর্ঘদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগলে তা সরাসরি শারীরিক স্বাস্থ্যের উপরেও প্রভাব ফেলে। নিয়মিত যোগাসন অনুশীলন করলে আপনি মানসিক চাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হবেন।
মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে
মানসিক স্বাস্থ্যকে উন্নত করার ক্ষেত্রেও যোগব্যায়াম থেরাপির মতোই কাজ করে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, যোগাসন এবং মিউজ়িক থেরাপি মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে ও স্ট্রেসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সহায়ক। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডারের মতোই সমস্যা দূর করতে যোগাব্যায়াম বিশেষ কার্যকর।
অ্যাংজ়াইটি কমে
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত যোগব্যায়াম করেন তাদের মধ্যে চট করে ডিপ্রেশনের উপসর্গগুলো দেখা যায় না। যোগাসন করলে অ্যাংজ়াইটিও কমে যায়।
ঘুম ভালো হয়
যোগব্যায়াম করলে দেহে রক্ত সঞ্চালন বাড়বে এবং দেহে অক্সিজেনের ঘাটতিও পূরণ হয়। যে কারণে রাতে ঘুম ভালো হয়। অনিদ্রার সমস্যাও দূর হয়।
ধৈর্য বাড়ে
প্রতিদিন যোগব্যায়াম করলে ধৈর্যও বাড়ে। মন থাকে শান্ত। এ ছাড়াও মনোযোগও বাড়ে। অযথা চিন্তা করা থেকেও নিজেকে বিরত রাখতে পারা যায়।
দিনে কতোক্ষণ যোগাব্যায়াম করলে স্ট্রেস কমবে?
মনোবিদ পায়েল জানিয়েছেন, দিনে মাত্র ১০ মিনিট যোগাসন করলে আপনি স্ট্রেস কমাতে পারবেন। শুধু তাই নয়, অত্যাধিক স্ট্রেসের মধ্যে ব্রিদিং এক্সারসাইজ় করলে স্নায়ুর চাপও কমে, কর্টিসল হরমোনের (স্ট্রেস হরমোন) মাত্রা কমে ও উদ্বেগ কমে। যে কারণে প্যানিক অ্যাটাক কিংবা অ্যাংজ়াইটি অ্যাটাকও নিয়ন্ত্রণে থাকে। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org