দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পছন্দের খাবার পাতে রাখলেই নাকি ওজন কমবে দ্রুত! এমন কথা বলা হয়েছে এক গবেষণার বরাত দিয়ে। আসলেও কী তাই? আজ আসুন বিষয়টি সম্পর্কে তথ্যগুলো জেনে নিই।

ওজন কমাতে গিয়ে কী আপনি পছন্দের খাওয়া ছেড়েছেন? মিষ্টি, আইসক্রিমের প্রতি লোলুপ দৃষ্টি থাকলেও, পাছে লক্ষ্যলাভ অধরাই থেকে যায়, তাই সংবরণ করছেন আপনার লোভ? তবে এভাবে কী ওজন কমবে? এক গবেষণা বলছে ভিন্ন কথা।
মেদ ঝরাতে হলে খেতে হবে পরিমিত, আর বাদ দিতে হবে উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবার। এইসব নিয়ম সকলেই জানেন। তবে নিয়ম ও বাস্তব কী এক হয়? নিয়মের বেড়াজালে থেকেও পছন্দের খাবার খাওয়ার জন্য উচাটন হয় মনের মধ্যে। নিজেকে সংযত করতে না পেরে একবার সেই খাবার মুখে দিয়ে ফেললেই অপরাধবোধ শুরু হয়ে যায়।
তবে এই বিষয়ে আশার আলো দেখাচ্ছে সাম্প্রতিককালের এক গবেষণা। ‘ফিজ়িওলজি অ্যান্ড বিহেভিয়ার’ নামক জার্নালে ২০২৫ সালে প্রকাশিত হয় ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয় আরবানা-শ্যাম্পেনের দুই গবেষকের একটি গবেষণাপত্র। সেই গবেষণালব্ধ ফল বলছে যে, পছন্দের খাবার যদি উচ্চ ক্যালোরিসম্পন্নও হয়, তা বাদ দেওয়ার কোনো দরকার নেই। পাতে স্বল্প পরিমাণে লোভনীয় পদটি রাখলে ওজন কমবে তুলনামূলকভাবে দ্রুত হারে!
লোভনীয় খাবার ও ওজন কমার পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে গবেষণাটি করা হয়। গবেষক নওফ ডব্লিউ আলফুজ়ান ও মানাবু নাকামুরার পরীক্ষালব্ধ ফল আলোকপাত করেন আরও একটি দিকে। তারা প্রমাণ পেয়েছেন যে, ওজন কমলে লোভনীয় খাবারের প্রতি আকর্ষণও তখন কমে।
বিষয়টি একটু খোলসা করে দেখা যাক। সাধারণ খিদে ও চোখের খিদের মধ্যে বিস্তর ফারাক থাকেই। খিদে হলো এক বিষয়। তবে পেট ভরা থাকলেও পছন্দের খাবার দেখে লোভ হওয়া অন্য ব্যাপার। সাধারণত দেখা যায় যে, বেশির ভাগ মানুষেরই উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি আকর্ষণই বেশি থাকে। লোভনীয় খাবারের তালিকায় কারও আবার থাকে পেস্ট্রি, কারও আবার মিষ্টি, চকোলেট, কারও থাকে আইসক্রিম। এই ধরনের খাবার খেলেই দ্রুত ওজন বাড়বে- তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে ইচ্ছা চেপে রেখে দিনের পর দিন স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়াও কিন্তু কম কঠিন নয়।
গবেষকরা ওজন ও লোভনীয় খাবার- এই দুইয়ের সম্পর্ক নিয়েই গবেষণা করেন। সেজন্য এক বছর ধরে ৩০ জনের উপর একটি সমীক্ষা করেন। সেজন্য এমন লোককে তারা বেছে নেন, যারা ওজন কমানোর চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। আর তাতেই দেখা যায়, যাদের কিছুটা হলেও (৫ শতাংশ) মেদ ঝরেছে, তাদের লোভনীয় খাবারের প্রতি আকর্ষণও কমে গেছে। অপরদিকে, যাদের ওজন কমেনি তাদের পছন্দের খাবার খাওয়ার প্রবণতাও কিন্তু কমেনি। এই পরীক্ষা চালানোর সময় আরও একটি কাজ করা হয়েছিলো। পছন্দের কিংবা লোভনীয় খাবার পুরোপুরি বাদ না দিয়ে তা পাতে সামান্য পরিমাণে দেওয়া হয়। এতেই দেখা যায় যে, পছন্দের খাবার খাওয়া সত্ত্বেও তাদের ওজন কমেছে।
গবেষকেরা বলেছেন, প্রকৃতপক্ষে ওজন কমার অন্তরায় হলো মানসিক চাপ। মানসিক চাপই খাবারের প্রতি লোভ তৈরি করে থাকে, যা ওজন বৃদ্ধির কারণও হয়ে ওঠে। অথচ মানসিক চাপ যদি সত্যিই কমিয়ে ফেলা যায়, সেটি পছন্দের খাবার সামান্য খেয়ে হলেও, ফল পেতে পারেন দ্রুত সময়ের মধ্যে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org