দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে, তার ২০ দফা শান্তি প্রস্তাবের কিছু অংশ হামাস মেনে নেওয়ার ঘোষণার পর ইসরায়েল প্রথম ধাপে গাজা উপত্যকা হতে সেনা প্রত্যাহারে রাজি হয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সময় শনিবার (৪ অক্টোবর) সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প জানান, হামাস চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত করলে এই যুদ্ধবিরতি তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করা হবে। হোয়াইট হাউস গত সোমবার যে মানচিত্র প্রকাশ করেছিল, যেখানে ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহারের বিভিন্ন সীমারেখাও দেখানো হয়, ইসরায়েল সেই সীমারেখার মধ্যে প্রাথমিক সেনা প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছে। তবে, ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, তাড়াতাড়ি পদক্ষেপ না নিলে সব চুক্তিই বাতিল হয়ে যাবে।
যদিও ইসরায়েল প্রথম ধাপে সেনা প্রত্যাহারেও রাজি হয়েছে, বিবিসি ভেরিফাইয়ের হিসাব অনুযায়ী জানা যায়, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও প্রকাশিত মানচিত্র অনুযায়ী গাজার প্রায় ৫৫ শতাংশ এলাকা ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণেই থেকে যাবে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আশা প্রকাশ করেছেন যে, খুব শীঘ্রই গাজায় আটক জিম্মিদের মুক্তির ঘোষণা দেওয়া সম্ভব হবে। তিনি দাবি করেন যে, কূটনৈতিক এবং সামরিক চাপে ট্রাম্পের প্রস্তাব মেনে নেওয়া ছাড়া হামাসের কাছে অন্য কোনো বিকল্পও নেই ও দ্রুতই উপত্যকাটি থেকে হামাসের শাসনের সমাপ্তি ঘটানো হবে। নেতানিয়াহু হামাসকে নিরস্ত্র করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
অপরদিকে, হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়, ইসরায়েলের হামলা এবং হত্যাযজ্ঞ এখনও চলছে। স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ও দুই বছরের এই হত্যাযজ্ঞ এবং অবরোধ অবিলম্বে বন্ধ করার অনুরোধ করেছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশনা সত্ত্বেও গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে, এতে একদিনে আরও ৭০ ফিলিস্তিনি নিহত হন। নেতানিয়াহু বাহিনী উপত্যকাটির বেসামরিক এলাকা এবং শরণার্থী শিবিরগুলোতে একদিনেই ৯৩টি বিমান হামলা চালায়।
ইতিমধ্যেই, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, মিশরে ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে বন্দি বিনিময় ও যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন নিয়ে বৈঠকও অনুষ্ঠিত হবে। এই আলোচনায় মার্কিন মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ ও জারেড কুশনার অংশ নেবেন। তথ্যসূত্র : বিবিসি।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org