দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ডিম মানবদেহের জন্য অন্যতম পুষ্টিকর খাবার। এতে রয়েছে প্রোটিন, ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড, যা শরীরের বৃদ্ধি ও রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

অনেকেই মনে করেন যে, লাল ডিম সাদা ডিমের চেয়ে বেশি পুষ্টিকর। এই ধারণা কতটা সত্য, তা জানা প্রয়োজন।
প্রথমেই জানা দরকার, ডিমের খোলার রঙ নির্ভর করে মুরগির জাত এবং জিনগত বৈশিষ্ট্যের ওপর, পুষ্টিগুণের ওপর নয়। সাধারণত সাদা পালকের মুরগি সাদা ডিম পাড়ে, আর বাদামি কিংবা লালচে পালকের মুরগি লাল ডিম পাড়ে। অর্থাৎ ডিমের রঙের সঙ্গে এর গুণগত মানের সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই।
বিজ্ঞানসম্মতভাবে দেখা গেছে, সাদা এবং লাল- দুই ধরনের ডিমেই প্রায় একই পরিমাণ প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান থাকে। একটি মাঝারি আকারের ডিমে প্রায় ৬-৭ গ্রাম প্রোটিন, ৫ গ্রাম ফ্যাট এবং ভিটামিন এ, বি-১২, ডি, ক্যালসিয়াম ও আয়রন থাকে। ফলে দুই ধরনের ডিমই শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণে সমান কার্যকর।
তবে কিছু পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়- লাল ডিম সাধারণত একটু ঘন খোলার এবং কিছুটা বড় হয়, যা বাজারে তুলনামূলক দামি। এটি মূলত খাদ্য এবং পালন পদ্ধতির পার্থক্যের কারণেই ঘটে। গ্রামাঞ্চলে পালন করা দেশি মুরগির ডিম অনেক সময় বেশি স্বাদযুক্ত এবং গাঢ় রঙের হয়, কারণ তারা প্রাকৃতিক খাবার খেয়েই বড় হয়। অপরদিকে ফার্মের সাদা মুরগির ডিম তুলনামূলক হালকা এবং মসৃণ।
স্বাস্থ্যের দিক থেকে উভয় ডিমই সমান উপকারী, যদি তা তাজা এবং নিরাপদ উৎস থেকে আসে। ডিম সিদ্ধ বা পোচ করে খাওয়া সবচেয়ে ভালো, কারণ এতে তেল কিংবা চর্বির ব্যবহার কম হয়। অতিরিক্ত ভাজা ডিম শরীরে কোলেস্টেরল বাড়াতে পারে, তাই পরিমিতভাবে খাওয়াই উত্তম।
তাই বলা যায়, ডিমের রঙ নয়, বরং এর মান, সতেজতা এবং রান্নার পদ্ধতির ওপর উপকারিতা নির্ভর করে। সুতরাং লাল বা সাদা- যে ডিমই খান না কেনো, তা নিয়মিত এবং পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করলে শরীরের পুষ্টির ঘাটতি পূরণ হবে সেটি নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org