দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মুড়ি আমাদের দেশের একটি জনপ্রিয় এবং সহজলভ্য খাবার। অনেকেই একে হালকা নাস্তা বা বিকেলের চা-সঙ্গী হিসেবে খেয়ে থাকেন।

তবে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে- মুড়ি কী সত্যিই স্বাস্থ্যের কোনো উপকার করে? উত্তর হলো, হ্যাঁ। পরিমিত পরিমাণে মুড়ি খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী।
মুড়ি একটি কম-ক্যালরিযুক্ত খাবার। এটি চাল ভাজা থেকে তৈরি হয় এবং তেল বা চর্বি এতে থাকে না বললেই চলে। তাই যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান বা হালকা খাবার খুঁজছেন, তাদের জন্য মুড়ি বেশ উপযোগী। সকালে বা বিকেলে এক কাপ মুড়ি দুধ, দই বা শাকসবজির সঙ্গে খেলে পেট ভরে যায় কিন্তু অতিরিক্ত ক্যালরি যুক্ত হয় না।
মুড়িতে কার্বোহাইড্রেট রয়েছে, যা শরীরের প্রধান শক্তির উৎস। এটি দ্রুত শক্তি সরবরাহ করে, তাই কাজের ফাঁকে বা ব্যায়ামের পর মুড়ি খাওয়া শরীরকে পুনরুজ্জীবিত করে। অনেক সময় ক্লান্তি বা দুর্বল লাগলে এক কাপ মুড়ি সঙ্গে সামান্য চিনি বা দুধ শরীরের শক্তি ফিরিয়ে আনতে পারে।
মুড়ি হজমে সহজ। এতে ফাইবারের উপস্থিতি হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং পেটের অস্বস্তি কমায়। যারা ভারী খাবার খেতে পারেন না কিংবা গ্যাস্ট্রিক সমস্যায় ভোগেন, তাদের জন্য মুড়ি একটি হালকা ও নিরাপদ বিকল্প।
মুড়ি স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে তৈরি হলে এটি একটি ভালো স্ন্যাকস হতে পারে। তবে বাজারের তেল-মশলাযুক্ত ঝাল মুড়ি বা চটপটি জাতীয় খাবারে অতিরিক্ত লবণ, তেল এবং মসলা ব্যবহৃত হয়—যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই ঘরে তৈরি সাধারণ মুড়ি, দই-মুড়ি বা সবজি-মুড়ি খাওয়া সবচেয়ে ভালো।
মুড়ি কোনো “জাঙ্ক ফুড” নয়, বরং এটি সঠিকভাবে গ্রহণ করলে হালকা এবং পুষ্টিকর খাবার হিসেবে কাজ করে। এটি শক্তি জোগায়, হজমে সহায়তা করে এবং শরীরকে হালকা রাখে। তাই পরিমিত মুড়ি খাওয়ার অভ্যাস রাখা স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org