ঢাকা টাইমস ডেস্ক ॥ প্রতি সপ্তাহের মতো আজও আমরা বিশ্বের বিভিন্ন মজার মজার খবর আপনাদের সামনে তুলে ধরবো- আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
দা ভিঞ্চির দেয়াল চিত্র উদ্ধার
বিশ্বখ্যাত চিত্রশিল্পী লিওনার্দো দা ভিঞ্চির একটি দেয়াল চিত্র আবিষ্কার করেছেন গবেষকরা। ধারণা করা হচ্ছে এই দেয়াল চিত্রটি ষোড়শ শতাব্দীতে আঁকা হয়েছিল। দেয়ালচিত্রটি আঁকা হয়েছিল ফ্লোরেন্সের একটি দেয়ালে। গবেষকরা এই দেয়াল চিত্রটির নাম দিয়েছেন ‘আঙ্গিয়ারির যুদ্ধ’, তবে দা ভিঞ্চির দেয়াল চিত্রের ওপর আঁকা ছিল জর্জিও ভাসারির আরেকটি চিত্র। তা পলেস্তারার মতো কাজ করেছে এবং দা ভিঞ্চির অঙ্কনটি রক্ষা করেছে। শত বছর ধরে এই অঙ্কনটি খুঁজেছেন চিত্রশিল্পী এবং ইতিহাসবিদরা। অনেকেই বিশ্বাস করেন ১৫০৫ সালে লিওনার্দো দা ভিঞ্চি এই দেয়ালচিত্রটি আঁকা শুরু করেন। ষোড়শ শতাব্দীতে ফ্লোরেন্স মিলান দখল করে নিলে দেয়ালচিত্রটি অসম্পূর্ণই থেকে যায়। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ইতালীয় প্রকৌশলী মাউরিৎসিও সেরাচিনি জানান, দেয়ালচিত্রে ব্যবহূত রঙ থেকে ধারণা করা হয় এটি পঞ্চদশ শতাব্দীতেই আঁকা হয়েছিল। লাল, কালো এবং বেজ রঙের পেইন্ট তোলা হয় দেয়ালচিত্র থেকে। এই রঙগুলোর সঙ্গে প্রাকৃতিক রঙের সাদৃশ্য পাওয়া গেছে। দা ভিঞ্চি সবসময়ই এভাবে রঙ ব্যবহার করতেন তার পলেস্তরায়। লিওনার্দোর এই দেয়ালচিত্রটি দীর্ঘদিন ধরেই খুঁজছিল ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটি এবং ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। তারা একযোগে কাজ করছে ফ্লোরেন্স শহর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। গবেষকরা দেয়ালচিত্রটি খুঁজে পেলেও এর অনেক রহস্য উন্মোচনের বাকি। তাই দেয়ালচিত্রটি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। হয়ত অল্প সময়ের মধ্যেই এর রহস্য উদঘাটিত হবে।
মোটার রেকর্ড গড়তে..
বিচিত্র এই পৃথিবীতে রয়েছে বিভিন্ন রকমের মানুষের বসবাস। পৃথিবীতে কিছু অদ্ভুত প্রকৃতির মানুষ আছেন যারা নিজের লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য সবকিছু বিসর্জন দিতে রাজি। নিজের ইচ্ছা পূরণের জন্য এসব মানুষ নিজের ক্যারিয়ারের কথা চিন্তা করেন না। চিন্তা করেন না আরাম আয়েশের কথাও। এমনই এক বিচিত্র প্রকৃতির মানুষের নাম সুসানি ইমান। যার জীবনের লক্ষ্য ছিল পৃথিবীতে সবচেয়ে মোটা মানুষের খেতাবটি অর্জন করা। নিজের লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য আমেরিকান এই নারী অভিনব পরিকল্পনা বেছে নিয়েছেন। ভালবেসে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এমন একজনকে যার পেশাই হচ্ছে রান্না করা। সুসানির ধারণা তার স্বামী ভাল রান্না করতে পারলে তিনি সহজেই তার ওজন বাড়াতে পারবেন। সুসানির সেই ভালবাসার মানুষটির নাম পার্কার ক্লার্ক। খুব শিগগিরই তারা বিয়ে করছেন বলেও জানিয়েছেন সুসানি। সুসানি এবং পার্কারের এই অদ্ভুত রসায়নের পেছনের গল্পটাও আকর্ষণীয়। ইন্টারনেটে পরিচয়ের সুবাদেই দুজনের মধ্যে সর্ম্পক গড়ে ওঠে। এর মাসখানেক পর পার্কার চলে আসেন অ্যারিজোনায় সুসানির বাসায়। নিজেদের এই অদ্ভুত জুটি নিয়ে অনেকেই নানা রসাত্মক মন্তব্য করলেও সুসানি আর পার্কার খুবই খুশি। সুসানি বলেন, আমি খেতে ভালবাসি আর পার্কার ভালবাসে রাঁধতে। আমি এখন পৃথিবীর সবচেয়ে মোটা নারী হতে চাই আর পার্কার আমাকে তাতে অনুপ্রেরণা দিচ্ছে। অন্যদিক সুসানির প্রশংসা করে পার্কার বলেন, আমি তাকে সবসময়ই অনুপ্রেরণা জুগিয়ে যাই, কারণ এটি তাকে সুখি করে। এছাড়া আমি মোটা মেয়েদের পছন্দ করি। সুসানির স্বাস্থ্য নিয়ে পার্কার বলেন, আমি এ বিষয়ে বিন্দুমাত্র ভাবি না। বরং আমি সবসময় চাই সুসানি স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুক এবং ব্যায়াম করুক। বিশ্বের সবচেয়ে মোটা মহিলা হওয়ার প্রতিযোগিতায় নামা সুসানির এই বিরতিহীনভাবে খেয়ে যাওয়াকে নিজের জীবনের সঙ্গে জুয়া খেলা বলেই মন্তব্য করছেন ডাক্তররা। ৩৩ বছর বয়সী সুসানি ইমানের বর্তমানে শরীরের ওজন ৩৪২ কেজি। পৃথিবীর সবচেয়ে মোটা মানুষের স্থান অর্জন করতে হলে তাকে নিজের ওজন নিয়ে ৭৩০ কেজিতে যেতে হবে।
হাতির পায়ের চাপে তেল বের হয়েছিল যেখানে..
একদা এক হাতির চলাকালে পায়ের চাপে তেলের প্রথম সন্ধান মেলে ডিগবয়ে। এরপর ডিগবয়ের ওই জায়গায় তেল উত্তোলনের কাজ শুরু হল। সেই থেকে এখন পর্যন্ত চলছে তেল উত্তোলনের কাজ। যে জন্য ডিগবয়কে বলা হয় তেলের শহর। ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে আসাম অয়েল কোম্পানি প্রথম শোধনাগারটি গড়ে ডিগবয়ে। এর আরও পরে বার্মা অয়েল কোম্পানির সঙ্গে মিলে অতি আধুনিক তেল শোধনাগারের রূপ নেয় ডিগবয়। ব্রুড অয়েল শোধন হচ্ছে এখানে। তেমনই হচ্ছে ৪ ধর্মী নানা বাই-প্রোডাক্ট তেল থেকে।
তেলের শোধনাগারকে নিয়েই এই ডিগবয় শহর। এখানে মোম থেকে নানা পুতুলও হচ্ছে। ব্রিটিশের গড়া এই শহরটি পটে আঁকা ছবির মতো। শহরান্তে যেন আরণ্যক পরিবেশ। বন্য হাতিরা ডিগবয় শহর মাতিয়ে বেড়ায়। এমনকি বাঘ, গণ্ডার দর্শনও অস্বাভাবিক নয় শহরান্তের বনাঞ্চলে। ডিগবয়ে তো তেল খনি আছেই, এছাড়া এ শহর থেকে ৩২ কিমি. দূরের নাহারহাটিয়াতেও তেল খনি রয়েছে। আবার ১৫ কিমি. দূরে আর এক তেলের শহর দুলিয়াখান। এখানেও আছে শুধু তেল আর তেল। তেলের খনির পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পাহাড়গুলো এখানে সৌন্দর্যও বাড়িয়েছে। সারাদিন ধরে চলছে বিরামহীনভাবে তেল নেয়া। এখানেই ভারত ও বার্মার মাঝে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা পাহাড়গুলোর পাদদেশে আসাম-অরুনাচল সীমান্তে সুন্দর প্রকৃতির মাঝে ছোট্ট কোলিয়ারি লেডো ও মার্গারিটা শহর। ডিগবয় শহরটি ভারতের আসাম প্রদেশে। ডিব্রুগড় ও ডিগবয়ের নামে তিনসুকিয়া জেলাশহর। এদিকে ডিব্রুগড়ও জেলাশহর। ডিব্রুগড় জেলা সদর চা-বাগিচায় ঘেরা, সবুজে ছাওয়া বাঙালি অধ্যুষিত এলাকা। বাণিজ্যিক শহর রূপেও খ্যাতি আছে এর। এখানে ব্রহ্মপুত্রের বিধ্বংসী বন্যা থেকে শহর বাঁচাতে বিপুল অর্থ ব্যয়ে তৈরি হয়েছিল বাঁধ। তিনসুকিয়া থেকে এই ডিব্রুগড়ের দূরত্ব ৪৭ কিমি. আর ডিগবয়েড দূরত্ব ৩৩ কিমি.।
রোকামাডুর
ফ্রান্সের দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থিত লট বিভাগ ও প্রাক্তন কোয়ের্কি প্রদেশের অন্তর্গত অন্যতম নিম্ন নির্বাহী বিভাগ হল রোকামাডুর। ডোরডোঙ্গে নদীর উপর অবস্থিত শহরটি ঐতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভ এবং খ্রিস্ট ধর্মের কুমারী মেরীর ধর্মস্থান হিসেবে বিখ্যাত। তাই রোকামাডুর শতাব্দীর পর শতাব্দী রাজা, বিশপ ও বিখ্যাত ব্যক্তিসহ বিভিন্ন দেশের পর্যটকদের পদচারণায় মুখর থাকে।
বোনিফ্যাসিও
ফ্রান্সের কর্স-ডু-সাড বিভাগের অন্তর্গত কর্সিকা দ্বীপের দক্ষিণ প্রান্তে বোনিফ্যাসিও শহর তথা সম্প্রদায়ের অবস্থান। কর্সিকা দ্বীপের সবচেয়ে বড় সম্প্রদায় হল বোনিফ্যাসিও। এখানকার বাসিন্দাদের বলা হয় বোনওফ্যাসিয়ান। মহিলাদের বলা হয় বোনিফ্যাসিনিজ। পাহাড়ের প্রান্তে থাকা হলদেটে ধবল রংয়ের চুন সুরকির দালান ঘেরা শহরটি এক সময় দুর্ভেদ্য দুর্গ হিসেবে পরিচিত ছিল।