দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হাই-স্পিড ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য দেশের মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে এমন আভাষ থেকেই দেশে থ্রিজি চালু হয়েছিল। তবে এখন আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে দেশে থ্রিজি পরিষেবা চালু হলেও বাড়েনি ইন্টারনেট গ্রাহক।
৩জি (3G) হচ্ছে থার্ড জেনারেশন তৃতীয় প্রজন্মের তারবিহীন নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তিতে প্রতি সেকেন্ডে উচ্চগতির ইন্টারনেট ডাটা আদান প্রদান করা সম্ভব। ঢাকঢোল পিটিয়ে দেশে থ্রিজি সেবা চালু করা হলে গবেষণা এবং উপাত্ত ঘেটে দেখা যাচ্ছে দেশে আগের চেয়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়েনি! বিষয়টিকে আইটি সংশ্লিষ্টরা উদ্বেগজনক হিসেবেই দেখছেন।
দেশে গতবছর ৮ সেপ্টেম্বর থেকে থ্রিজি সেবা চালু হয়। তখন থেকে মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা আরও বাড়বে বলে বিটিআরসি এবং দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে আশা প্রকাশ করা হয়েছিল। তবে বর্তমানে এসে সেই আশাবাদ হতাশায় পরিণত হয়েছে। ইতোমধ্যে দেখা গেছে সর্বশেষ ২৮ ফেব্রুয়ারিতে দেশে মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩ কোটি ৬১ লাখ ২৮ হাজার ৫৯২ জন। কিন্তু গতবছর ৩১ আগস্টে দেশে ইন্টারনেট গ্রাহক ছিলেন ৩ কোটি ৬২ লাখ ৪৯ হাজার ১৮ জন। এই উপাত্ত থেকে দেখা যাচ্ছে থ্রিজি চালুর পর দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ার চেয়ে এক লাখ ২০ হাজার ৪২০ জন কমে গেছে!
দেশের স্বনামধন্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মোস্তাফা জব্বার বিষয়টিকে বিশ্লেষণ করছেন কনটেন্টের অপ্রতুলতার কারণ হিসেবে। তিনি বলেন, ‘থ্রিজি ব্যবহার হচ্ছে মূলত মুঠোফোনে। আর মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করেন প্রধানত তরুণেরা। কিন্তু তরুণদের আকৃষ্ট করার মতো কনটেন্ট এখানে নেই। অপারেটর ও সংশ্লিষ্টরা চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছেন আকর্ষণীয় নতুন কনটেন্ট তৈরিতে। কনটেন্ট তৈরির ক্ষেত্রে সহায়ক নীতিমালাও নেই।’
এছাড়া তিনি বলেন, “থ্রিজি আগমনের শুরুতেই সকল অপারেটর একে ঢাকা কেন্দ্রিক সূচনা করছে। এছাড়া এই প্রক্রিয়া অত্যন্ত ধীর ভাবে শুরু হয়। এতে করে দেশে ব্যবহারকারীরা হতাশ হয়ে পড়ছেন।”
এদিকে গবেষণায় দেখা যাচ্ছে অন্যান্য অপারেটর থেকে থ্রিজি গ্রাহক সেবা এবং গ্রাহকবৃদ্ধিতে রাষ্ট্রীয় অপারেটর টেলিটক অনেক এগিয়ে আছে। ২০১৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত টেলিটকের গ্রাহক দ্বিগুণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
থ্রিজি সেবা আসার পরেও দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা না বাড়াকে হতাশাজনক এবং দেশের এই সেক্টরের প্রবৃদ্ধি ঝুঁকিতে পড়বে বলে উল্লেখকরে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসের (বেসিস) সভাপতি শামীম আহসান বলেন, “থ্রিজি ব্যবস্থাপনা নিয়ে আমিও বিরক্ত, ব্যক্তিগত ভাবে দেশের থ্রিজি ব্যবহার করে আমি হতাশ। অপারেটররা থ্রিজি সুবিধা দিচ্ছে তবে তা নামে মাত্র। কোম্পানিগুলো যতটা ফ্রিকোয়েন্সি কিনেছে তার চেয়ে বেশি মানুষকে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছে। ফলে মানসম্পন্ন সেবা পাচ্ছেন না গ্রাহকেরা। তাই ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে না।”
এদিকে অপারেটরদের পক্ষ থেকে দেশের স্মার্টফোনের মূল্যহ্রাস সহ আরও বিশেষ বেশ কিছু ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানা গেছে। তারাও বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং সম্পূর্ণ বিষয় পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো