দি ঢাকা টাইমস ডেস্ক ॥ আজ আমরা বিশ্বের বিভিন্ন মজার মজার খবর আপনাদের সামনে তুলে ধরবো- আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
টিটিকাকা লেকে ভাসমান গ্রাম
অবাক করা কিছু ভাসমান গ্রামের দেখা মেলে পেরুর টিটিকাকা হ্রদে। এটি দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে বড় ও অন্যতম গভীর লেক। সর্বমোট ৪২টি ভাসমান দ্বীপে এখানে বেশ কয়েকটি গ্রাম রয়েছে। এখানে পেরুর টৎড়ং সম্প্রদায়ের বসবাস। যুগ যুগ ধরে তারা এই লেকের ভাসমান দ্বীপে বসবাস করে আসছেন। এই ভাসমান দ্বীপগুলো দেখতে খুব সুন্দর। এগুলো প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠেছে। এ দ্বীপগুলো বসবাসের উপযোগী করে তার উপর তৈরি করা হয়েছে ঘরবাড়ি থেকে শুরু করে সবকিছু। কিছু দ্বীপ আবার মানুষেরও তৈরি। লেকের পানির গভীর থেকে ঃড়ঃড়ৎধ (নলখাগড়া ধরনের) গাছের শাখা-প্রশাখা অত্যন্ত শক্ত ও ঘনভাবে বেড়ে ওঠে। এবং তা বিশাল জায়গা জুড়ে পানির উপর ভাসমান এই দ্বীপ সৃষ্টি করে। অনেকে আবার প্রচুর ঃড়ঃড়ৎধ গাছ ব্যবহার করে কৃত্রিমভাবেও এই দ্বীপ তৈরি করেন। দ্বীপের উপরিভাগ অর্থাৎ গ্রাউন্ড বেশ নরম ও পিচ্ছিল হয়ে থাকে। হাঁটাচলার সময় তাই দেবে যায়। তাছাড়া এখানকার অধিবাসীরা এই গাছের শাখা-প্রশাখা দিয়েই তাদের ঘরবাড়ি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তৈরি করে থাকেন।
এখানে দ্বীপ অর্থাৎ গ্রামের মাঝে নলখাগড়া আস্তরণ কেটে পুকুরের ব্যবস্থাও রয়েছে।
তাছাড়া প্রয়োজনে কোন কোন দ্বীপ কেটে ভাগও করা যায়। কাটার পরে ভাগ হয়ে পৃথক দুটি দ্বীপ ভাসতে থাকে। এখানকার অধিবাসীরা বিভিন্ন হস্তশিল্পের কাজ করে থাকেন। এছাড়াও খরগোশ ও হাঁসও পোষা হয়। এখানে যাতায়াতের জন্য রয়েছে কারুকার্যখচিত নৌকা। এগুলোও ঃড়ঃড়ৎধ গাছ দিয়েই তৈরি। টিটিকাকা হ্রদের গ্রামগুলো অত্যন্ত সুন্দর ও পরিপাটি করে সাজানো। তাই পেরুর পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণ এই দ্বীপ ও গ্রামগুলো।
উড়ন্ত পাখির ওপর তেজী ঘোড়া
‘উড়ন্ত পাখির ওপর তেজী ঘোড়া’ হল এক ধরণের চমৎকার ভাস্কর্যশিল্পকর্ম। এটি ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরি। এর আরেক নাম ‘ ব্রোঞ্জের ধাবমান ঘোড়া’, এই ভাস্কর্য ৩৪.৫ সেন্টিমিটার উঁচু, ৪৫ সেন্টিমিটার লম্বা, ১০ সেণ্টিমিটার চওড়া । এটি পূর্ব হান রাজবংশ আমলে ( ২৫-২২০ খ্রিস্টাব্দ) তৈরি। ভাস্কর্যটি উত্তরপশ্চিম চীনের কানসু প্রদেশের উওয়েই নামক স্থানের লেইথাই সমাধি থেকে আবিষ্কৃত হয়। এটি এখন কানসু প্রদেশের জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে। তেজী ঘোড়া হল প্রাচীন চীনের যুদ্ধ, পরিবহন আর যোগাযোগের সবচেয়ে দ্রুত আর কার্যকর বাহন বা মাধ্যম। শক্তিশালী অশ্বারোহী ছিল হানাদার হুনো জাতির আক্রমণের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণে হান রাজবংশের বাহিনীর বিজয়ের একটি অপরিহার্য শর্ত। অশ্বারোহী বাহিনীর সাহায্যেই কেবল চীনের উত্তরাংশের শান্তি ও নিরাপত্তা সুরক্ষা করা যায়। তাই হান বংশের লোকেরা আগের যে কোন রাজবংশের চেয়ে ঘোড়াকে বেশি ভালবাসেন এবং তেজস্বী ঘোড়াকে জাতীয় মর্যাদা, শক্তিমত্তা এবং গৌরবময় কীর্তির প্রতীক বলে মনে করেন। তাই প্রচুর তেজস্বী ঘোড়ার মূর্তি দেখা যায় হান বংশের ভাস্কর্য শিল্পকর্মগুলোর মধ্যে। এর মধ্যে সবচেয়ে বিস্ময়কর দৃষ্টান্ত হল এই তেজী ঘোড়া ‘উড়ন্ত পাখির ওপর তেজী ঘোড়া’, এই ধাবমান তেজী ঘোড়াটির ভঙ্গি খুবই সুন্দর। মাথা উঁচু করে তুলে রেখেছে, লেজ নাড়াচ্ছে, মাথা একটু বাম দিকে হেলে আছে, ঘোড়াটির তিন পা উঁচুতে শূন্যে তুলেছে, শুধু ডান দিকের পেছনের পা একটি ডানা মেলা উড়ন্ত পাখি ‘সোয়ালো পাখির’ ওপর রেখেছে। তেজস্বী ঘোড়ার শরীরের তাগড়া বা বলিষ্ঠ গড়ন থেকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে তার অসীম শক্তি। অথচ তার গতির ভঙ্গি আবার হালকা উড়ন্ত ভঙ্গিমার মতো। ফলে মানুষ ভুলে যায় যে, ঘোড়াটির গোটা শরীরের ওজন ছোট্ট একটি উড়ন্ত সোয়ালো পাখির ওপর ভর করে আছে। ‘উড়ন্ত পাখির ওপর তেজী ঘোড়া’ ভাস্কর্যটি হল হান রাজবংশের শিল্পীদের উচ্চ পর্যায়ের বুদ্ধি, সমৃদ্ধ কাল্পনিক শক্তি, রোমান্টিক মনোভাব এবং কলাকৌশলের উৎকর্ষের সমন্বয়সাধন । এটা চীনের প্রাচীন ভাস্কর্যশিল্পের অমূল্য সম্পদ।
পর্তুগিজদের দ্বীপভূমি দিউ
আবার সাগরের বুকে দ্বীপভূমি দিউ। আর এ দিউকে বলা হয় গির্জা নগরী। এখানে মোট ৭টি গির্জা রয়েছে। প্রতিটি গির্জাই সুন্দরভাবে সাজানো। দ্বীপভূমি দিউর আয়তন ৪০ বর্গকিলোমিটার। পর্তুগিজদের দখলে একদা ছিল এ দ্বীপ। যেজন্য এখনও এখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে পর্তুগিজদের তৈরি বাড়িঘর ও বিভিন্ন স্থাপনা। পর্তুগিজদের বংশধরদের অনেকেই এ দিউ শহরে বসবাস করছেন। দিউ শহর দেখে কেউ কেউ মন্তব্য করেন, এ যেন পর্তুগিজদের নগরী। দিউয়ের অন্যতম আকর্ষণ দিউ ফোর্ট বা দুর্গ। এই দুর্গটি পর্তুগিজদের আমলে তৈরি। তিন দিকে সমুদ্র ও একদিকে পরিখা দিয়ে ঘেরা এ দুর্গটি। এর ভেতরে রয়েছে সেন্ট্রাল জেল ও বাতিঘর। পাথুরে পথ বেয়ে দুর্গের মাথায় পৌঁছলে দেখা যায়, চারদিকে শুধু অথৈই পানি আর পানি। এখানে রয়েছে শত্রুদের মোকাবেলার জন্য সমুদ্রের দিকে মুখ করা বেশ কিছু কামান। দুর্গের ফাঁক দিয়ে দেখা যায় অদূরে পানির মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা ছোট এক দ্বীপ দুর্গ। এর নাম পানিকোঠা।
এর ভেতরে প্রবেশ নিষেধ। তবে নৌকা নিয়ে পানিকোঠার খুব কাছে যাওয়া যায়। শুধু দেখা যাবে, ঢোকা যাবে না, এমনকি পানি কোঠাকে ছোঁয়াও নিষেধ। রাতে আলোকমালায় সজ্জিত পানিকোঠাকে দেখতে অপরূপ লাগে। এ দিউয়ে আরও রয়েছে সেন্ট ফ্রান্সিস চার্চ। এটি তৈরি হয়েছিল ১৫৯৩ সালে। এখন এটি মিউজিয়াম। এর পাশেই ১৬৯৮ সালে তৈরি সেন্ট লস চার্চ। ভেতরে অপূর্ব কারুকার্যখচিত রোজউডের মূর্তিগুলো দেখে যে কেউ মুগ্ধ হয়। সমুদ্রতীরে সাজানো গোছানো টিলার ওপর সামার হাউস থেকে সমুদ্র দর্শন এক মনোরম অভিজ্ঞতা। এখান থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্যও অতুলনীয়। পাক-ভারত যুদ্ধের স্মৃতিতে এই দিউয়ে গড়ে উঠেছে আইএনএস কুকরি মেমোরিয়াল। বেশ কয়েকটি সমুদ্র সৈকত রয়েছে এই দিউয়ে। যেমন- চক্রতীর্থ সমুদ্র সৈকত, জলঙ্কর সমুদ্র সৈকত, লাগোয়া সমুদ্র সৈকত। এসব সমুদ্র সৈকত ঘিরে রয়েছে নারকেল ও পামগাছের সারি।
হিমালয়ের প্রথম নায়ক
পাহাড় কিছু এমন রহস্য গোপন করে রাখে, যা ইতিহাসের গতি-প্রকৃতিই পালটে দেয়ার ক্ষমতা রাখে। কিন্তু সেটা প্রমাণ করারও কোন রাস্তা বা উপায় নেই। তথ্য-প্রমাণ সবকিছু লুকিয়ে রেখেছে পাহাড়, তৈরি হয়েছে আর একটা রহস্য। প্রথম মানুষ হিসেবে মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছানোর কৃতিত্ব তেনজিং নোরগে এবং স্যার এডমন্ড হিলারির। ১৯৫৩ সালের ২৯ মে স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় তারা এভারেস্টকে জয় করেন। কিন্তু তারা কি প্রথম না দ্বিতীয়! জর্জ ম্যালোরি নামের এক ইংরেজ পর্বতারোহী কি তেনজিং-হিলারির ২৯ বছর আগে এ অসাধ্য সাধনটি করে দেখিয়েছিলেন। অন্তত অভিযাত্রী এবং পর্বতারোহী মহলের একটি বড় অংশের তাই ধারণা। তাদের মতে, জর্জ ম্যালোরি এবং তার সঙ্গী স্যান্ডি আরভাইন ১৯২৪ সালের ৮ জুন এভারেস্ট অভিযান শুরু করেন।
রহস্য আরও ঘনীভূত হয়েছে হাওয়ার্ড সমারভেল নামে আর এক পর্বতারোহীর বৃত্তান্তে। ১৯২৪ সালে সমারভেলও এভারেস্ট চূড়ায় পৌঁছানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ক্লান্তির কারণে অনেক দূর এগিয়েও শেষ পর্যন্ত চূড়ায় পৌঁছতে পারেননি তিনি। সমারভেল যখন নেমে আসছিলেন, তখন তার সঙ্গে জর্জ ম্যালোরি এবং স্যান্ডি আরভাইন নামের ইংরেজ পর্বতারোহীদের দেখা হয়। তারাও যাত্রা করেছেন এভারেস্টের উদ্দেশে।
সমারভেল নিজের ক্যামেরাটি ম্যালোরিকে দিয়ে দেন। এভারেস্ট জয়ের দৃশ্যটি তিনি ক্যামেরাবন্দি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তা আর হয়নি। ম্যালোরি বা আরভাইন কেউই আর ফিরে আসেননি। এমনটাও শোনা যায় যে, ম্যালোরি ও আরভাইনকে শেষবার যখন দেখা যায়, তখন তারা নিজেদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য থেকে মাত্র ৮০০ ফুট দূরে ছিলেন। সে সময় মেঘের আস্তরণ চারপাশ ঢেকে দেয়। আক্ষরিক অর্থেই এটি ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাস। রহস্যটা কিন্তু ক্যামেরা নিয়েই। এই অভিযানের ৭৫ বছর পর ১৯৯৯ সালে ম্যালোরির দেহ পাওয়া যায় এভারস্টের উত্তর দিকে। পাহাড়ের ঠাণ্ডা আবহাওয়ার জন্যই শরীরে পচন ধরেনি। ম্যালোরির পোশাকে জি ম্যালোরি নামটি পাওয়া যায়।
সঙ্গে ছিল তার ঘড়ি। কিন্তু আরভাইনের দেহ খুঁজে পাওয়া যায়নি এবং সেই ক্যামেরাটিও পাওয়া যায়নি। তাই পর্বতারোহীরা হন্যে হয়ে খোঁজ করছেন আরভাইনের দেহটি। তাদের আশা আরভাইনের দেহের সঙ্গেই পাওয়া যাবে সেই ক্যামেরাটি, যার মধ্যে লুকিয়ে আছে রহস্য। সমাধানের হদিস। তবে এত বছর পরও সেই ক্যামেরা আস্ত আছে কি? এই এত বছরে তুষার ঝড়, আবহাওয়া বদল হয়েছে। তাছাড়া বহু অভিযান হওয়ার কারণেই এভারেস্টের আশপাশ জঞ্জালে ভরে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সেই ক্যামেরাটি খোঁজা খড়ের গাদায় সুচ খোঁজারই শামিল। তবে অভিযাত্রীরা কিন্তু আজও হাল ছাড়েননি।
বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, এত বছর পরও সেই ক্যামেরা থেকে ফিল্ম উদ্ধার করা যাবে। পর্বতারোহীদের একাংশের ধারণা, তেনজিং হিলারি নন, এভারেস্ট প্রথম জয় করেছিলেন ম্যালোরি ও আরভাইন। কিন্তু এখনও সেই স্বীকৃতি ম্যালোরি পাননি। তিনি ইতহাসে ট্র্যাজিক হিরো হয়েই রয়ে গেছেন। তাকে নিয়ে যাবতীয় জল্পনা-কল্পনা সত্যি না মিথ্যা, ক্যামেরা উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত তা জানার উপায় নেই। তবে সেটা কি আদৌ কখনও খুঁজে পাওয়া যাবে? তা নিয়ে আছে সন্দেহ। পাহাড়ের কুয়াশা, তুষার ঝড় ক্যামেরাটি কোথায় লুকিয়ে রেখেছে কেউ জানে না।
যে শহর হারিয়ে গেছে
ইনকাদের হারিয়ে যাওয়া প্রাচীন সভ্যতার এই শহরটির নাম মাচু পিচু। মাচু পিচু মানে পুরোনো চূড়ো। মাচু পিচু নামটাই কেমন অদ্ভুত। অদ্ভুত ইনকাদের প্রাচীন ভাষাটির নামও- ‘কুয়েচুয়া’, কুয়েচুয়া ভাষায় মাচু পিচু শব্দের অর্থ হচ্ছে ‘পুরোনো চূড়ো’, পাহাড়ের চূড়ায় তৈরি করা হয়েছিল বলেই হয়তো তারা শহরটির এমন নাম দিয়েছিল। শুনলে অবাক হতে হয়, মাচু পিচু শহরটি নাকি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২,৪০০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত। এত উঁচুতে কিভাবে তারা একটা আস্ত শহর তৈরি করে ফেলল সেটাই কিন্তু একটা বিরাট ভাবনার বিষয়। তাও আবার সেই কত বছর আগে। মাচু পিচু নির্মিত হয় প্রায় ৫৫০ বছর আগে, ১৪৫০ সালের দিকে। এর একশো বছর পরেই স্প্যানিশরা ইনকা সভ্যতা আক্রমণ করে। ধ্বংস করে ফেলে তাদের বেশিরভাগ শহরই। কিন্তু আশ্চর্যের কথা, ওরা নাকি মাচু পিচু শহরটি খুঁজেই পায়নি। ওরা হয়তো ভাবতেই পারেনি পাহাড়ের এত উঁচুতে কোন শহর থাকতে পারে। এদিকে মানুষজন না থাকার কারণে শহরটিও ধীরে ধীরে পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। কয়েক শ’ বছর ধরে তো মানুষ এই ঐতিহাসিক শহরটিকে খুঁজেই পায়নি। এরপর ১৯১১ সালে হাইরাম বিংহাম নামের এক মার্কিন ঐতিহাসিক মাচু পিচু শহরটি আবিষ্কার করেন।
আন্দিজ পর্বতমালার যে অংশটুকু পেরুতে পড়েছে সেখানকারই এক পর্বতের চূড়ায় এর অবস্থান। সেই পাহাড়টির নাম হয়ে গেছে মাচু পিচু। আর শহরটির অবস্থানও ছিল খুব সুরক্ষিত। অন্যরা তো এই শহর সহজে খুঁজে পাবেই না, আর যদি পায়ও, আক্রমণ করে তেমন সুবিধা করতে পারবে না। পাহাড়ের একপাশ চূড়া থেকে একেবারে খাড়া ভাবে ৬০০ মিটার নিচে উরুবাম্বা নদীর পাদদেশে গিয়ে মিশেছে। অন্যদিকে হুয়ানা পিচু নামের আরেকটি পর্বত খাড়া উঠে গেছে আরও কয়েক হাজার ফুট উঁচুতে। সুতরাং দুই দিক দিয়েই শহরটি প্রাকৃতিকভাবেই বেশ নিরাপদ ছিল।
কী কারণে ইনকারা পাহাড়ের ওই উঁচু চূড়ায় এমন ভয়ংকর একটা জায়গায় এত সুন্দর একটা শহর তৈরি করতে গেল- অনেক বিশেষজ্ঞও বহুবছর ধরেই এ নিয়ে মাথা ঘামিয়েছেন কিন্তু কেউই একমত হতে পারেনি। হাইরাম বিংহাম এবং আরও অনেকের মতে এই সুরক্ষিত শহরটি ইনকাদের ঐতিহ্যগত জন্মস্থান, নয়তো সূর্যকুমারীদের পবিত্র কেন্দ্র ছিল। আবার অনেকের ধারণা, এটি ব্যবহূত হতো ভয়ংকর অপরাধীদের জেলখানা হিসেবে। অনেকে আবার এও মনে করেন, এটি আসলে ছিল ইনকা সম্রাটদের একটি অবকাশযাপন কেন্দ্র। বেশিরভাগ মানুষেরও এটাই ধারণা। তবে জ্যোতির্মণ্ডলীয় নানা ঘটনা পর্যবেক্ষণের জন্য এই শহরটি খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আর সামরিক দিকেও প্রাকৃতিকভাবেই ছিল খুব সুরক্ষিত।