দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এটিএম স্কিমার হলো এটিএম বুথে বিপদজ্জনক ডিভাইসের মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধের অপরাধী। সারাবিশ্ব জুড়ে এটিএম স্কিমার একটি নতুন আতঙ্কের নাম। এই ধরনের স্কিমাররা এটিএম বুথে বিভিন্ন ডিভাইস স্থাপনের মাধ্যমে গ্রাহকদের এটিএম কার্ডের পিন নাম্বার নিয়ে নেন এবং তার মাধ্যমে টাকা চুরি করেন।
কিভাবে এটিএম স্কিমাররা তাদের অপরাধ সংগঠিত করে থাকেন?
একজন এটিএম স্কিমার বিশেষত দুটি কম্পোনেন্ট ব্যবহার করে থাকেন। প্রথম কম্পোনেন্টটি তারা এটিএম কার্ডের স্লটের ভেতরে প্রবেশ করিয়ে দেন। যখন আপনি আপনার এটিএম কার্ডটি স্লটের ভেতরে প্রবেশ করান তখন এটি আপনার কার্ডের বিস্তারিত তথ্য কপি করে নেয়। কার্ডটি স্লটের ভেতরে প্রবেশ করে তা দেখতে একেবারেই স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া মনে হয়ে থাকে। কিন্তু এর মধ্যেই আপনার কার্ডের যাবতীয় তথ্য ডিভাইসটির ম্যাগনেটিক স্ট্রিপে কপি করে নিয়েছে। আর দ্বিতীয় কম্পোনেন্টটি হলো একটি ক্যামেরা। এই ক্যামেরাটি এমন একটি জায়গায় স্থাপিত হয়ে থাকে যেন তা এটিএম স্লটের কিপ্যাডটি ভালোভাবে ধারন করতে পারে। এর ফলে গ্রাহকদের পিনকোডটি ধারণ করা সম্ভবপর হয়। পরবর্তীতে এটিএম স্কিমাররা এই এই দুটি কম্পোনেন্টের সকল তথ্যকে ব্যবহার করে নকল কার্ড তৈরি করে এবং তা দিয়ে বিভিন্ন এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে নেয়। দিনকে দিন এই ধরনের স্কিমাররা প্রযুক্তিগতভাবে আরো উন্নত হয়ে উঠছে। বর্তমানে তারা বিভিন্ন এটিএম স্লটের কিপ্যাডের উপর পাতলা একটি কাগজ বসিয়ে দিচ্ছে কিংবা নকল নাম্বারপ্যাড বসিয়ে দিচ্ছে। এই ধরনের কিপ্যাডের মধ্যে ব্লুটুথ ডিভাইস দেওয়া থাকে। এর মাধ্যমে গ্রাহকদের পিনকোড গ্রহণ করা সম্ভব। গ্রাহকরা এই ধরনের কিপ্যাড ধরতেই পারছে না। ফলে তারা এটিএম স্কিমারের শিকার হচ্ছে।
কিভাবে এটিএম স্কিমার ডিভাইস ধরতে পারেন?
আপনার ব্যবহৃত এটিএম বুথের স্লটটিতে কি কোন ধরনের স্কিমার ডিভাইস ব্যবহার করা হয়েছে তা কিছু ট্রিকস অনুসরণ করলে নিজেই বুঝতে পারবেন।
১. কার্ড রিডার স্লটে প্রবেশ কার্ড প্রবেশ করানোর সময় কার্ডটি যদি smoothly প্রবেশ না করে কিছুটা আটকে যায় তবে বুঝবেন এর ভেতরে স্কিমার ডিভাইস স্থাপন করা হয়েছে যা আপনার কার্ডের বাহ্যিক তথ্যগুলো ধারণ করবে। একটি ভালো কার্ডের স্লট হবে একবারে কার্ডের আকার অনুযায়ী স্বাভাবিক। সেখানে বহিরাগত কোন ডিভাইস প্রবেশ করালে তা কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি করে।
২. আপনার কার্ডটি স্লট মেশিনে প্রবেশের পূর্বে ভালোভাবে দেখে নিন যে সেখানে অস্বাভাবিক কোন কিছু মনে হচ্ছে কি? কেননা আপনি নিয়মিত টাকা তুলে থাকলে আপনার নিকট এটিএম বুথটি বেশ পরিচিত থাকবে। কিন্তু সেখানে স্কিমার যদি কিপ্যাড পরিবর্তন করে কিংবা কিপ্যাডের উপর পাতলা কোন স্বচ্ছ কাগজ ব্যবহার করে থাকে তবে তা আপনার চোখে লাগবে।
৩. এটিএম বুথের ভেতরের কোন ধরনের অস্বাভাবিক ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে কি লক্ষ্য করুন। চারপাশটি ভালোভাবে দেখে নিন কোন কিছু কি আপনার চোখে অস্বাভাবিক লাগছে।
কিছু সতর্কতা মেনে চলুনঃ
১. এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলতে গিয়ে কিপ্যাড ব্যবহারের সময় অপর হাত দিয়ে কিপ্যাডটি ঢেকে রাখুন এতে করে লুকানো ক্যামেরায় আপনার কোডটি ধারণ করা সম্ভবপর হবে না। তাছাড়া কিপ্যাডটি ভালোভাবে লক্ষ্য করুন। মনে রাখুন পুর্বের ট্রানজিকশনের সময় কি এই কিপ্যাডটিই ছিল কিনা।
২. নিয়মিত আপনার লেনদেনের হিসাব মনিটরিং করুন। আমাদের দেশে বিভিন্ন অনলাইন ব্যাংকিং তাদের গ্রাহকদের প্রতিটি ট্রাঞ্জিকশনের জন্য মোবাইল অ্যালার্ট দিয়ে থাকেন। এই সার্ভিসটি চালু রাখুন এতে করে আপনার অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত কর যাবে।
তথ্যসূত্রঃ হাউটুগিক