দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এবার গবেষকরা সাবধান করলেন তাদের যারা ‘সুপারি’ খান। কারণ এই ‘সুপারি’ থেকে নাকি ক্যান্সারও হতে পারে!
গবেষকরা গবেষণা করে ‘সুপারি’র সঙ্গে ক্যান্সারের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছেন। আর তাই এক ‘নীরব ঘাতক’ হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে সুপারি।
বিশ্বের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় এক-দশমাংশ সুপারি ব্যবহার করে। মনকে চাঙ্গা করার ক্ষেত্রে অন্তত ৬ কাপ কফির সমান ফল দেয় এই সুপারি। বিশ্বের বেশ কিছু দেশে সুপারিকে দেখা হয় ভালোবাসা ও বিয়ের প্রতীক হিসেবে। শুধু তাই নয় কখনও কখনও সুপারি বদহজম ও বন্ধ্যাত্বের মতো সমস্যার ওষুধ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। এতো গুণসম্পন্ন এই ‘সুপারি’ হঠাৎ করেই হয়ে গেলো ‘ঘাতক’।
বিবিসি অনলাইনে বলা হয়েছে, সুপারির জন্য প্রসিদ্ধ এশিয়া। শুধু পানের সঙ্গেই নয়, উদ্দীপক উপাদানের কারণে অনেকেই নিয়মিতভাবে সুপারি চিবিয়ে থাকেন। বিশেষ করে গাড়ি চালানো অবস্থায়, মাছ ধরা কিংবা নির্মাণকাজের সঙ্গে যারা যুক্ত থাকে, তারা দীর্ঘসময় জেগে থাকার জন্য সুপারি ব্যবহার করে থাকেন। আরা সে কারণে সুপারিকে ‘মানসিক বিভ্রমকারী মাদক’ হিসেবেও বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
পানের সঙ্গে সুপারি খাওয়ার রেওয়াজ রয়েছে বাংলাদেশেও । বহু মানুষ পান-সুপারিতে অভ্যস্ত। সুপারিতে আসক্তির বড় একটি সমস্যা হলো, সুপারিতে অভ্যস্ত মানুষের মুখের ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেক বেশি। গবেষকরা বলেছেন, এই সুপারির দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব এতটাই যে, প্রথমবার সুপারি খাওয়ার কয়েক দশক পরও এর প্রভাবে কারও মুখে ক্যান্সার হতে পারে!
এশিয়ার মধ্যে সুপারি অনেক বেশি জনপ্রিয় তাইওয়ানে। আর তাই সুপারিকে ‘তাইওয়ানের চুইং গাম’ বলা হয়ে থাকে। সুযোগ পেলেই তাইওয়ানের বাসিন্দারা চুইংগামের মতো সুপারি চিবোতে পছন্দ করেন। কখনও খালি সুপারি চিবোতে থাকেন; আবার কখনও পানপাতা, চুন, এলাচি বা দারুচিনির মতো মসলার সঙ্গে মিশিয়ে সুপারি খান তারা। তবে ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে খেসারত দিতে হচ্ছে অনেক ব্যবহারকারীকে।
তাইওয়ানের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হসপিটালের মুখের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ হান লিয়াং জুন সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, অর্ধেক মানুষ এখনও জানেই না যে সুপারি মুখের ক্যান্সারের অন্যতম কারণ। সুপারির কারণে মুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুহারে শীর্ষ তিনটি দেশের একটি হলো এই তাইওয়ান। আন্তর্জাতিক ক্যানসার গবেষণা সংস্থা এসব উপাদানের মধ্যে সুপারি ও চুনকে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
সুপারির কুফল সম্পর্কে ব্যবহারকারীদের সচেতন করতে ভারত এবং থাইল্যান্ডও ব্যাপক প্রচার শুরু করেছে। তাইওয়ানের সরকার মানুষের জীবন বাঁচাতে বহু বছরের পুরোনো এই অভ্যাসটি কমিয়ে আনার জন্য নানা ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছেন। এসব উদ্যোগের কারণে বেশ ভালো ফলও পেতে শুরু করেছে দেশটি। সুপারি ব্যবহারকারীর সংখ্যা আগের থেকে অনেক কমেছে।