দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে কোটি মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতু। আজ শনিবার নদীশাসন কাজের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফলক উন্মোচনের মধ্যদিয়ে বহু প্রতীক্ষিত পদ্মা বহুমুখী সেতুর মূল কাজের উদ্বোধন হলো। আজ (শনিবার) সকাল ১১টা ১৬ মিনিটে নাওডোবায় নবনির্মিত হেলিপ্যাডে এসে পৌঁছায় প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী একটি হেলিকপ্টার। হেলিকপ্টার হতে নেমেই মঞ্চের পাশে অবস্থিত একটি ফলক উন্মোচনের মধ্যদিয়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পের মূল কাজ নদীশাসনের কাজের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপর মোনাজাতের মাধ্যমে পদ্মা সেতু প্রকল্পের সফলতা কামনা করা হয়।
ফলক উন্মোচনের পর শরীয়তপুরের জাজিরায় পদ্মার তীরে আয়োজিত এক সুধী সমাবেশের মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে তিনি সমবেত জনগণের উদ্দেশে বক্তৃতা দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ হলে সকল অসাধ্য সাধন করতে পারে। তিনি বলেন, বিশ্ব দেখুক, আমরাও পারি।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন এই সেতু নির্মাণের পথে বিশ্ব ব্যাংকের ‘মিথ্যা অভিযোগ’ ও নানা বাধা বিপত্তির কথা এই অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, বড় কাজ করতে গেলে ‘হাত পাততে হবে’ এই মানসিকতা ভাঙতেই নিজস্ব অর্থায়নে দেশের সবচেয়ে বড় এই অবকাঠামো প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি চেয়েছিলাম, আমরা পারি, আমরা তা দেখাবো। আজ আমরা সেই দিনটিতে এসে পৌঁছেছি।’
এক পর্যায়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাঙালি জাতি কারও কাছে কখনও মাথা নত করেনি, করবেও না।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা সেই জাতি, যে জাতি সম্পর্কে জাতির পিতা বলেছিলেন, ‘কেও দাবায়া রাখতে পারবা না’, আজকেও সেটি প্রমাণিত হতে যাচ্ছে।’
দেশের সর্ববৃহৎ এই পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের নদী শাসনের কাজ করবে চীনা প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন। এর ব্যয় হবে ৮ হাজার ৭০৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
পুরো প্রকল্পে ব্যয় হবে প্রায় ২৯ হাজার কোটি টাকা। এই সেতু দিয়ে ঢাকাসহ দেশের পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি সড়কপথে যুক্ত হবে দক্ষিণ জনপদের অন্তত ২১টি জেলা।
আশা করা হচ্ছে, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু আগামী ৩ বছরের মধ্যে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া যাবে। এই সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেনও চলবে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের মধ্যে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। নিজস্ব অর্থায়নে এটি দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প।