দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এবার গ্রাহককে মোবাইলফোন নম্বরের প্রকৃত মালিকানা ও গুণগত মানসম্পন্ন সেবা নিশ্চিত করতে বিটিআরসি চালু করতে যাচ্ছে মোবাইল নম্বর পোর্টিবিলিটি। সংক্ষেপে এটিকে বলা হয়ে থাকে এমএনপি।
জানা গেছে, চলতি সপ্তাহে বা আগামী সপ্তাহের শুরুর দিকে বাংলদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন- বিটিআরসি এ বিষয়ে নির্দেশনা জারি করবে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে পাকিস্তান ও ভারতে এ পদ্ধতি চালু রয়েছে। এটি চালুর মাধ্যমে গ্রাহকরা বিশেষ সুবিধা ভোগ করবেন।
রাষ্ট্রীয় মালিনাধীন একটিসহ ৬টি মোবাইলফোন অপারেটর বর্তমানে দেশের বাজারে তাদের সেবা ও নানা অফার নিয়ে গ্রাহকদের আকর্ষণ করার চেষ্টা করছে। এতে করে একেক অপারেটর একেক রকমের সুবিধা দেয়ায় গরিব দেশের অনেক মানুষ বিভিন্ন অপারেটরের সিম কার্ড ব্যবহার করছেন। এতে একজন গ্রাহকের কাছে তিন চারটি এমনকি কারো কাছে ছয়টি অপারেটরেরই সিম কার্ড রয়েছে। এবং এর অনেকগুলোই সচল। বার বার এগুলো মোবাইলে ঢুকিয়ে ব্যবহার করতে হয়।
একাধিক সিম কার্ড ব্যবহারের সুযোগ নিয়ে দেশের বাজারের নিম্নমানের ডুয়েল সিম কার্ড ব্যবহার উপযোগী হ্যান্ডসেট ভরে যাচ্ছে। কোনো কোনো কোম্পানির হ্যান্ডসেটে তিনটি সিম কার্ড ব্যবহার করা যাচ্ছে। কেবল নিম্নমানের ভারতীয় ও চায়না সেট কোম্পানিই নয়, খ্যাতিমান মোবাইল হ্যান্ডসেট প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান নকিয়া ও সামস্যাং ডুয়েল সিম কার্ড ব্যবহার উপযোগী হ্যান্ডসেট বাজারে ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।
নম্বর পোর্টিবিলিটি আসলে কি
গ্রাহক যদি নিজের নামে কেনা একটি নম্বর দিয়ে তার সুবিধা ও আগ্রহ মতো অপারেটরের সেবা নিতে পারেন তাহলে এ সমস্যা থাকত না। নম্বর পোর্টিবিলিটি হলো এমন পদ্ধতি, কোনো গ্রাহক যেকোনো অপারেটরের একটি নম্বর কিনলেন। এ নম্বরটি ঠিক রেখেই তিনি অন্য কোনো অপারেটরের সেবায় আকষ্ট হয়ে সে অপারেটরের সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। এ জন্য তার মোবাইল নম্বরটি বদলাতে হবে না। যেমন কোনো গ্রাহক গ্রামীণফোনের একটি সিম কার্ড কিনলেন। এটি তিনি ব্যবহার করছেন। কিন্তু একটা সময় তার মনে হলো তিনি গ্রামীণফোনের সেবা নেবেন না। তিনি অন্য কোনো অপারেটরের সেবা নেবেন। সে জন্য এমএনপি সেবা থাকলে ওই গ্রাহক তার গ্রামীণফোনের নম্বরটি ব্যবহার করেই ভিন্ন অপারেটরের সেবা নিতে পারবেন। তবে এ জন্য একটি নিবন্ধন ফি লাগবে। দক্ষিণ এশিয়ার অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, নম্বর পোর্টিবিলিটির জন্য কমপক্ষে তিন দিন এবং সর্বোচ্চ ১০ দিন সময় প্রয়োজন হয়।
উল্লেখ্য, বিটিআরসি ২০০৭ সালে প্রথম বিষয়টি নিয়ে ভাবতে শুরু করে। তবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পাকিস্তান ২০০৭ সালের মার্চ মাসেই এমএনপি সার্ভিস চালু করে সফলতা পেয়েছে। ১৯৯৭ সালে বিশ্বের প্রথম এমএনপি চালু করে পূর্ব এশিয়ার দেশ সিঙ্গাপুর। এমএনপি মূলত গ্রাহক সেবাকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়। এ কারণে কোনো দেশে এমএনপি সেবা চালু হলে দেশটির মোবাইল অপারেটররা বাধ্য হয়েই নিত্যনতুন সেবা উদ্ভাবনের মাধ্যমে গ্রাহক ধরে রাখতে আগ্রহী থাকে। কারণ মনের মতো সেবা না পেলে একজন গ্রাহক নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করে নিজের নম্ব্বর ঠিক রেখে অন্য মোবাইল অপারেটরের সেবা নিতে পারবে।
তথ্যসূত্র: দৈনিক নয়াদিগন্ত।