দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আগেও বলেছেন আবারও ঠিক একইভাবে দোষারোপ করলেন রোহিঙ্গা মুসলিমদের মিয়ানমারের সেনাপ্রধান। অনেকটা ‘উদির দোষ বুদির ঘাড়ে’ চাপানোর মতো অবস্থা!
পুরোপুরিভাবে বাস্তবকে উপেক্ষা করে মিয়ানমার সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের আরও একটি বক্তব্য দিয়েছেন। যেখানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বলছে, রাখাইনে সেনাবাহিনীর হামলায় জাতিগত নিধন হচ্ছে, সেখানে কমান্ডার ইন চিফ বললেন যে, রোহিঙ্গারাই বোমা ফাটাচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলাতে!
গত পরশু (শনিবার) তিনি এই বিষয়ে নতুন করে মন্তব্য করেছেন। দোষ চাপিয়ে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরাই’ মসজিদ এবং মাদ্রাসায় বোমা ফাটিয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, রোহিঙ্গা যারা গত ২৪ আগস্ট দিনগত রাতে হামলা চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর তারা এবারও জড়িত। ইতোপূর্বে তিনি রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি সন্ত্রাসী’ বলেও আখ্যা দেন।
সিনিয়র জেনারেল মিন বলেছেন, রোহিঙ্গা মুসলমানরাই বুথিডং টাইনশিপে (জেলা) হাতে তৈরি স্থলমাইন পুঁতে রেখেছিলো। সেজন্যই বিস্ফোরণ ঘটে মসজিদ এবং মাদ্রাসায়। তিনি এও দাবি করেন যে, যারা ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাননি তাদেরকে সন্ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে এলাকাছাড়া করা হচ্ছে। আরাকান রোহিঙ্গা সলভেশন আর্মি (আরসা) কে এসবের জন্য দায়ী করেছেন তিনি। তার আগের দিন (২২ সেপ্টেম্বর) মসজিদ এবং মাদ্রাসায় হামলার ঘটনা ঘটে। তবে এতে কোনো হতাহত হয়নি।
অপরদিকে মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, রাখাইন রাজ্যে এখনও রোহিঙ্গাদের গ্রাম পোড়ানো হচ্ছে। এতে সরাসরি দেশটির সেনাবাহিনীই জড়িত। সংগঠনটির এই তথ্যের সঙ্গে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি’র দাবি পুরোপুরিভাবে বিপরীতমুখি। সেনাপ্রধানের বক্তব্য একদমই বাস্তবতা বিবর্জিত বলে উল্লেখ করেছে মানবাধিকার সংগঠনটি।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইএমও) বলেছে, সহিংসতার শিকার হয়ে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় সোয়া ৪ লাখ। তবে বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা সাড়ে ৫ লাখ ছাড়িয়েছে। সহিংসতায় প্রাণ গেছে ৩ হাজারের বেশি মানুষের। বেসরকারিভাবে এই সংখ্যা ১০ হাজার পার করেছে মধ্য সেপ্টেম্বরে।