দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ করোনা ভাইরাসে বিপর্যস্ত পুরো বিশ্ব। পৃথিবীর ২১৩ দেশ এবং অঞ্চলে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। বর্তমানে এর প্রপোকতা একটু কম থাকলেও আসছে শীতে এর প্রকোপ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শীতে করোনা সংক্রমণ রোধে চিকিৎসকের কয়েকটি পরামর্শ সম্পর্কে আজ জেনে নিন।
আসছে শীতে করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে। তাই এই সময় সবচেয়ে বেশি করে সচেতন থাকতে হবে। করোনা যেহেতু ঠাণ্ডায় আরও বাড়ে, তাই বাড়তি সতর্কতা হিসেবে অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি গরম খাবার খাওয়া এবং শীতের পোশাকও ব্যবহার করতে হবে। তাছাড়াও নিয়মিত শরীরে সকালের রোদ লাগাতে পারলে আরও ভালো হয়।
শীতে করোনা সংক্রমণ রোধে করণীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে আসুন জেনে নেওয়া যাক:
# করোনা সংক্রমণ রোধের সবচেয়ে ভালো উপায় হলো মাস্ক ব্যবহার করা। মাস্ক ব্যবহারের কারণে করোনা সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি রোধ করতে পারে। তাছাড়াও নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। বাইরে বের হলে অবশ্যই সঙ্গে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে।
# শীতে যেনো ঠাণ্ডা না লাগে সেই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। ওই সময় গরম পোশাক ব্যবহার করতে হবে ও সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
# যদি আপনি ধূমপায়ী হয়ে থাকেন, তাহলে এই মুহূর্ত থেকে তা ছেড়ে দিন। এতে করে আপনার ফুসফুসের ক্ষমতা আস্তে আস্তে বাড়বে।
# যদি উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস থাকে তাহলে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। কোভিডে আক্রান্ত হলে ফুসফুস এবং হৃৎপিণ্ডই সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশের প্রায় ৪০ শতাংশ রোগীরই উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে থাকে না। শীতে সংক্রমণ রোধে এসব রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
# শরীরে পুষ্টিজনিত ঘাটতি পূরণে বেশি করে সবুজ শাক সবজি এবং ফলমূল খেতে হবে।
# গবেষণায় দেখা গেছে যে, মদ্যপান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও দুর্বল করে দেয়। এই অভ্যাস থাকলে আজই তা ছেড়ে দিন।
# দৈনিক ৭ থেকে ৮ ঘণ্টার কম ঘুমালে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। তাই আপনাকে পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে।
# কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির এক সমীক্ষায় দেখা যায়, বাংলাদেশে শহরের বেশিরভাগ মানুষ পর্যাপ্ত শারীরিক ব্যায়ামও করেন না। তাই প্রতিদিন বাড়ির ভেতর অন্তত ৩০ হতে ৪০ মিনিট হাঁটুন। ভিটামিন ডি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই আপনাকে সকালে গায়ে রোদ লাগাতে হবে।
# দুশ্চিন্তা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও কমিয়ে দিতে পারে। তাই এই সময় পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে হবে এবং দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে হবে।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।