এম. এইচ. সোহেল ॥ বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে তথ্য প্রযুক্তি খাতে। অনেক কর্মসংস্থান হয়েছে, করোনাতেও পুরোদমে কাজ চলেছে প্রযুক্তির বদৌলতে। এবার শুরু হয়েছে ৫জির যাত্রা।
ডিজিটালাইজেশনে অনেকদূর এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। সরকারি-বেসরকারি সব সেবা এখন অনলাইনে হচ্ছে। তবে সামনের দিনের চ্যালেঞ্জটাও অবশ্য কম নয়। তবে দুর্বার গতিতে এগিয়ে গেলেও আর্থিক খাতকে সুরক্ষিত রাখতে মনোযোগ দিতে হবে সাইবার নিরাপত্তার দিকে।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জে পড়তে হতে পারে আমাদের দেশ। ৫জির যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। রাষ্ট্রীয় অপারেটরের হাত ধরে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়েছে ৫জির প্রকল্প। এর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রীর আইটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। সাভার ও গোপালগঞ্জ সহ ৬টি স্থানে এই ৫জির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যে কারণে মানুষের মধ্যে আগ্রহ আরও বেড়েছে। তারা মনে করছেন দেশ আরও এগিয়ে যাবে তথ্য প্রযুক্তির বদৌলতে।
২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বরের কথা। সেদিন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনী ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপরেখা ঘোষণা করেছিলেন। ২০০৯ সাল হতেই প্রতি বছর ১২ ডিসেম্বর ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস পালন করে আসছে আওয়ামী লীগ সরকার। নির্বাচনে জয়ের পর ২০০৯ সালের প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের তত্বাবধানে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত রোডম্যাপ চূড়ান্ত করা হয়েছিলো। তখন থেকেই ডিজিটাল বাংলাদেশে দিনবদলের যাত্রা শুরু করে। সেই যাত্রা শেষ হয়েছে ১২ ডিসেম্বর। এখন ভিষণ ২০৪১ ঘোষণা করেছে সরকার। সামনের দিনে এই অর্জন ধরে রেখে আরও কিছু নতুন নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার।
দেশে বর্তমানে ১০ কোটি মানুষ মোবাইল ফোনে আর্থিক লেনদেন করছে। দেশের বর্তমান এমএফএসে একাউন্ট প্রায় ১২ কোটি। এরমধ্যে আবার সক্রিয় একাউন্টের সংখ্যাও ৫ কোটির বেশি। আইসিটি বিভাগের লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ নিয়ে বর্তমানে গ্রামে বসে নারীরা উপার্জন করছে শত শত ডলার। ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহারে দেশে রোমিটেন্স দিনদিন বাড়ছে। করোনা মহামারির মধ্যেও ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে প্রবাসী আয়ে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি হয়। এই অর্থবছরে ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স আসে দেশে, যা ছিলো আগের অর্থবছরের থেকে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, চলতি বছরের আগস্ট মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার কিংবা ১৫ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা। তার আগের মাস জুলাইয়ে এসেছিল ১ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ ১৫ হাজার ৯০৭ কোটি টাকা। প্রবাসীদের সঙ্গে দেশের রেমিটেন্সকে আরও বাড়িয়ে নিতে দেশ থেকেই রেমিট্যান্স যুদ্ধে নেমেছেন দেশের লাখ লাখ তরুণ। ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করে অনলাইন ট্রান্সফারের মাধ্যমে তারা দেশে আনছেন তাদের অর্জিত ওইসব বৈদেশিক মুদ্রা।
দেশ যতোই ডিজিটাল হচ্ছে, সাইবার হামলার শঙ্কাও ততোই বাড়ছে। গত অক্টোবরে বাংলাদেশ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা এবং জাতীয় প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্য করে একাধিকবার সাইবার গুপ্তচরবৃত্তির চেষ্টা চালানো হয়েছে বলে সরকারি একটি সংস্থার পর্যবেক্ষণে উঠে আসে। তাই দেশ যতো ডিজিটালাইজেশনে এগিয়ে যাবে ততোই সাইবার হামলার বিষয়টি সামনে চলে আসবে। তাই সময় থাকতে এই বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে। তবে আমরা আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবো। আমরা প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে আরও এগিয়ে যেতে চাই। সে জন্য সকলকে সমবেতভাবে দেশের জন্য কাজ করতে হবে। এখন শুধুই আমাদের এগিয়ে যাওয়ার পালা।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।