দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মধ্যপ্রাচ্যের সংঘর্ষ নিয়ে নতুন করে ব্যাপক চাপ বাড়লো মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ওপর। গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা বন্ধে ব্যর্থতার দায়ে বাইডেন, ব্লিনকেন ও অস্টিনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা বন্ধ করতে ব্যর্থতার কারণে প্রেসিডেন্ট বাইডেন, তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি মানবাধিকার সংগঠন।
এদিকে গাজায় ইসরাইলি হামলার ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিরোধের কথা স্বীকারও করেছেন ব্লিনকেন। তিনি কর্মকর্তাদের কাছে এই বিষয়ে ইমেইল পাঠিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিনকেন এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী অস্টিনের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা করেছে নিউ ইয়র্কের সেন্টার ফর কনস্টিটিউশনাল রাইটস (সিসিআর)। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়েছে, গাজায় হামাস-ইসরাইল সংঘর্ষ এবং গণহত্যা প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক ও মার্কিনআইন মেনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
সিসিআর মনে করে, গাজায় ইসরাইল যেভাবে বেসরকারি অবকাঠামোগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে, তা গণহত্যারই শামিল। ১৯৪৮ সালে আন্তর্জাতিক কনভেনশনে হত্যা বন্ধ করতে আমেরিকাসহ অন্যান্য দেশ শক্তি এবং প্রভাব ব্যবহার করবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে গাজায় ইসরাইলি হামলা বন্ধে মার্কিন প্রশাসন কোনো ব্যবস্থায় নেয়নি। এর প্রতিবাদে এই মামলা করা হয়েছে।
সংস্থাটি আরও বলেছে যে, বর্তমানে ইসরাইলের সবচেয়ে বড় মিত্র হলো আমেরিকা। সেইসঙ্গে হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর জন্য ইসরাইলকে দেওয়া হচ্ছে সামরিক সাহায্যও। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, এটি নীতিবিরুদ্ধ বলেও মনে করছে সিসিআর। মার্কিন সহায়তা পাওয়ায় গাজায় বসবাসকারী ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। ক্যালিফোর্নিয়ার ফেডারেল আদালতে দায়ের করা এই মামলাতে ইসরাইলকে যাতে করে জো বাইডেন প্রশাসন অস্ত্র, অর্থ এবং কূটনৈতিক সহায়তা না দেয়, তার আবেদনও করা হয়েছে। সেইসঙ্গে গাজায় ফিলিস্তিনি নাগরিকদের গণহত্যা বন্ধে প্রেসিডেন্ট যাতে আশ্বাস দেন, তাও নিশ্চিত করার কথা বলা হয় দায়ের করা ওই পিটিশনে।
বড় হাসপাতালগুলোতে কম আগ্রাসন চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সোমবার ইসরাইলের প্রতি এই আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। তিনি বলেন, গাজার বড় বড় হাসপাতালগুলো অবশ্যই সুরক্ষিত রাখতে হবে। একইসঙ্গে মানবিক বিরতি কার্যকরে নেতানিয়াহু প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি। বাইডেন বলেন, ‘আমার প্রত্যাশা হলো, গাজার হাসাপাতালগুলোতে আগ্রাসনের মাত্রা কমাতে হবে। ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি ও জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে মানবিক বিরতির বিষয়ে প্রচেষ্টাও চালাচ্ছি। তবে চিকিৎসাকেন্দ্রগুলো অবশ্যই এই হামলা থেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। তথ্যসূত্র: আল জাজিরা ও সিএনএন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org