ঢাকা টাইমস ডেস্ক ॥ প্রতি সপ্তাহের মতো আজও আমরা বিশ্বের বিভিন্ন মজার মজার খবর আপনাদের সামনে তুলে ধরবো- আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
৩৪ আঙুলের শিশু
খুব সহজেই গিনেস বুকে তার নাম উঠে যায়- এমনই এক শিশু জন্মের এক বছর পরই বিশ্ব রেকর্ড করেছে। হাত ও পা মিলিয়ে মোট ৩৪টি আঙুল নিয়ে জন্মগ্রহণ করে সে ভেঙেছে বিশ্ব রেকর্ড। আক্সাত সাক্সেনা নামের এ শিশুটির জন্ম ভারতের উত্তর প্রদেশে। তার প্রতি হাতে ৭টি এবং প্রতি পায়ে ১০টি করে মোট ৩৪টি আঙুল রয়েছে। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের মুখপাত্র এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
তবে এত আঙুলের মাঝেও সাক্সেনার বৃদ্ধাঙুলি খুঁজে পাওয়া যায় না। অর্থাৎ হাতে ৭টি করে আঙুল থাকলেও তার বৃদ্ধাঙুলি নেই। শল্যচিকিৎসকরা সিরিজ অপারেশন করে তার অতিরিক্ত আঙুল কেটে ফেলেছেন। চিকিৎসকরা কেটে ফেলা এ আঙুল দিয়ে তার বৃদ্ধাঙুলি নির্মাণের চেষ্টা করছেন।
সাক্সেনার মা জানান, প্রথম সন্তান হিসেবে আমার সন্তানকে দেখে আমি বেশ খুশিই হয়েছিলাম। কিন্তু তার ৩৪ আঙুল দেখে আমি রীতিমত বিস্মিত হয়ে গেলাম।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় পলিড্যাক্টাইলি। এটা এক ধরনের জেনেটিক ডিজঅর্ডার, যা এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে সঞ্চারিত হতে পারে।
সাক্সেনার মা জানান, তার এক পারিবারিক বন্ধু জানিয়েছেন, তিনি ইন্টারনেটে ৩১ আঙুল বিশিষ্ট চীনা শিশু দেখেছেন। কিন্তু সাক্সেনা তার থেকেও আলাদা। তখন তিনি জানালেন, আমার সন্তান বিশ্ব রেকর্ড ভেঙেছে। প্রথমে আমি মোটেই বুঝতে পারিনি। আমার সন্তান বিশ্ব রেকর্ড করেছে এটা বিশ্বাস করা কঠিন ছিল। কিন্তু পরে আমার ওই বন্ধুটি ও আমার স্বামী মিলে ইন্টারনেটে সাক্সেনার ডাটা নিবন্ধন করেন।
এর আগে এক চীনা শিশু হাতে ১৫টি ও পায়ে ১৬টি মোট ৩১ আঙুল নিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছিল। ওই শিশুটিরও অতিরিক্ত আঙুলগুলো অপারেশনের মাধ্যমে কেটে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে তার ২০টি আঙুল রয়েছে।
যে বই পানিতে ভেজে না
পানিতে ভিজলেও সিক্ত হবে না, ছিঁড়বে না, ফাটবে না এমনকি কালিও ছড়াবে না- এমন মলাটযুক্ত বই বাজারে আসছে শিগগিরই। যে কোন অবস্থায় পানিনিরোধক বা ওয়াটার প্রুফ এই বইয়ের স্থায়িত্ব হবে সাধারণ বইয়ের তুলনায় ২০০ ভাগ বেশি। অর্থাৎ এক কথায়- অক্ষয় বই।
প্রকাশনা সংস্থা আমাজন জানায়, তারা বিশ্বের প্রথম পানিনিরোধী বই বাজারে আনছে। বইয়ের পাতায়-পাতায় স্বচ্ছ মোমের মতো পলিমারের প্রলেপ থাকবে। ফলে বইটি ভিজলেও এর লেখার কালি ছড়াবে না, ভিজে ভারি হবে না কিংবা ছিঁড়বেও না। আপাতত শিশুদের বই ও ডুবুরিদের জন্য স্কুবা ডাইভের বই তৈরির ক্ষেত্রে এই ‘পুরোপুরি ওয়াটার প্রুফ’ পদ্ধতি চালু করা হবে।
অস্ট্রেলিয়ার ব্যাংকগুলোয় কাগুজে মুদ্রা প্রচলনের ক্ষেত্রে পলিমারের এই প্রযুক্তির প্রয়োগ অবশ্য আগেই শুরু হয়েছে। কাগুজে মুদ্রার স্থায়িত্ব বাড়াতে ও নকল প্রতিরোধে তারা এ ব্যবস্থা নেয়। এবার বইয়ের বেলায়ও এ প্রযুক্তি ব্যবহূত হচ্ছে। পেপারব্যাক বইয়ের ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের ঘটনা এই প্রথম। প্রথম যে বইটি ওয়াটার প্রুফ হয়ে বাজারে আসছে সেটির নাম ‘দ্য গ্রেটার ব্যাড’। লেখক অ্যালান কর্ক। অবশ্য কর্কের এ বইটির ইলেকট্রনিক সংস্করণ (ই-বুক) আগে থেকেই চালু রয়েছে। অ্যালান কর্ক বলেন, ‘প্রকাশনা জগতে নতুন একটি যুগের সূচনায় আমার বইটিকে বাছাই করায় আমি আনন্দিত। ই-বুকটি বর্তমানে ৫ দশমিক ৭৪ পাউন্ড দামে বিক্রি হচ্ছে।
পাথরের বাড়ি
ঈঅঝঅ উঙ চঊঘঊউঙ নামের অদ্ভুত এ পাথুরে বাড়িটি উত্তর পর্তুগালের ফেফ পর্বতে অবস্থিত। পর্তুগিজ ভাষায় কাসা ডো পেনেডো কথাটির অর্থ পাথরের বাড়ি। মানুষ ও প্রকৃতির মেলবন্ধন হিসেবে এ বাড়িটি অনন্য এক উদাহরণ। বড় বড় চারটি পাথর দিয়ে ১৯৭৪ সালে বাড়িটি তৈরি করা হয়। আধুনিক যুগে তৈরি হলেও বাড়িটিকে দেখে মনে হবে এটি প্রাচীন যুগের। কিন্তু এ বাড়িতে স্থাপন করা হয়েছে সব আধুনিক প্রযুক্তি। পর্বতচূড়ায় ঠাণ্ডা হলেও বাড়িটিতে তাপানুকুল ব্যবস্থা আছে। এ বাড়ির জানালা দিয়ে ফেফ পর্বতের নৈসর্গিক দৃশ্য অবলোকন করা সৌভাগ্যের ব্যাপার।
মার্বেলড কোন শামুক
মার্বেলড কোন (গধৎনষবফ ঈড়হব ঝহধরষ) শামুক বিশ্বের সবচেয়ে সেরা ১০ বিষধর প্রাণীর মধ্যে অন্যতম। এর উপরের খোলস দেখতে কোনাকৃতি মার্বেলের মতো বলে এর নাম মার্বেলড কোন শামুক। এরা আকারে ৬ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয় এবং ওজনে ৭-৮ গ্রাম পর্যন্ত হয়। নানারকম সামুদ্রিক কীট-পতঙ্গ ও ছোট মাছ খেয়ে এরা বেঁচে থাকে। লোনা পানির এ শামুক সমুদ্রের সর্বনিম্ন ৯০ মিটার গভীরে এরা যেতে পারে। দেখতে মার্বেলের মতো সুন্দর হলেও ছোট এই শামুক এতটাই বিষাক্ত যে, এর এক ফোঁটা বিষ ২০ জন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের মৃত্যুর জন্য যথেষ্ট। ভয়ঙ্কর ব্যাপার হল- এই বিষের কোন প্রতিষেধক নেই। এদের পাওয়া যায় বঙ্গোপসাগর, ভারত মহাসাগরের কিছু কিছু অঞ্চলে, মাদাগাসকার, ফিজি ও মারশেল দ্বীপের নিকটবর্তী সাগরে।