দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা শরীরচর্চার সময় না পেলেও নিয়ম করে মিনিট পাঁচেক স্কোয়াটে শরীরের বেশ উপকার হয়। স্কিপিং, দৌড়ানো, হাঁটাহাঁটিতে পায়ের পেশিতে যে উপকার পাওয়া যায়, স্কোয়াট তার অনেকটা দিতে পারে।
আপনি বাড়ি থেকে অফিসে টিফিন না এনে, বাইরের খাবার কিনে খাওয়াই হোক বা অফিস ফেরত চপ-মোমো-চাউমিন বাড়িতে নিয়ে আসাই হোক, জীবনযাপনে নানা অনিয়ম করার সময় রয়েছে আমাদের অনেক কিছুই। নেই কেবল অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে শরীরে জমে থাকা মেদকে জব্দ করার প্রয়োজনীয় শরীরচর্চা করার সময়। যে কারণে শরীরের ওজন বেড়ে যাচ্ছে হু হু করে। অল্পবিস্তর ডায়েট শুরু করলে, ভালোমন্দ খাবার দেখেই নিজেকেও নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যায়!
এই সমস্যা দূর করতে পারেন প্রতিদিন মাত্র ৫ মিনিট সময় খরচ করলে। ৫ মিনিটের একটি অভ্যাসই মেদ জমার পথে বাধা হয়ে উঠতে পারে। হয়তো ভাবছেন, ৫ মিনিটের কোন ব্যায়ামে মেদ ঝরানো সম্ভব? উত্তর হলো, স্কোয়াট। চেয়ারে বসার মতো করে হাঁটু ভাঁজ করে কোমর এবং পিঠ সোজা রেখে দাঁড়ানোকেই স্কোয়াট বলে। এই সময় হাত দু’টো সামনের দিকে টানটান করে ছড়িয়ে দিতে হবে। কোমর ও পায়ের পেশিকে শক্তসমর্থ করতেও স্কোয়াটের জুড়ি নেই। কী কী উপকার হয় স্কোয়াট করলে?
# টেস্টোস্টেরন এবং গ্রোথ হরমোন ক্ষরণে বিশেষ কার্যকর এই ব্যায়ামটি। এর জেরে পেশির বৃদ্ধি এবং ভরকে নিয়ন্ত্রণ করা অনেক সহজ হবে। সারা শরীরে শক্তির সমান বণ্টনের ক্ষেত্রেও বিশেষ কাজ করে এই ব্যায়ামটি।
# নিয়ম করে এই ব্যায়াম করলে যখন-তখন পেশিতে টান ধরা, গাঁটে ব্যথা, একটু দৌড়ঝাঁপেই পেশির ব্যথার মতো অসুবিধাও দূর হয়। এই ব্যায়ামে শরীরের কার্যক্ষমতাও বেড়ে যায় কয়েক গুণ। দেহের ভারসাম্য, গতিশীলতা সব কিছুকেই স্বাভাবিক করতে ব্যায়ামটি অভ্যাস করতে পারেন।
# সাধারণ হাঁটাহাঁটিতে যে পরিমাণ ক্যালোরি ঝরে যায়, তার চেয়েও বেশি ক্যালোরি ঝরাতে পারে এই ব্যায়ামটি। তবে নিয়ম মেনে করলে তবে লাভও হবে।
# শরীরের গঠন, পিঠ এবং কোমরের আকার ও গোটা শরীরে নানা ‘অ্যাবস’ তৈরি করতে স্কোয়াট যেনো একাই একশো। শুধু তাই নয়, শরীরে ফ্যাট নিয়ন্ত্রণ করা, লিপিড মেটাবলিজম, রক্তে শর্করার পরিমাণ ঠিক রাখা ইত্যাদিও এই ব্যায়ামের মাধ্যমেই করা সম্ভব। ডায়াবেটিস- ওবেসিটি ইত্যাদি থেকে শরীরকে অনেকটাই দূরে রাখার ক্ষমতা রাখে এই স্কোয়াট।
# এই ব্যায়ামটি করলে সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। হরমোন ক্ষরণ, কোষে কোষে পুষ্টিগুণ পৌঁছানোর কাজও তখন সহজ হয়। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org