দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা অনেকেই জানি কার্বোহাইড্রেট কম খেলে দ্রুত ওজন হ্রাস পায়। তবে তা কী আদতেও স্বাস্থ্যকর? কার্বোহাইড্রেটের অভাবে শরীরে একাধিক সমস্যাও তৈরি হতে পারে।

মাবন দেহকে সচল রাখতে যে শক্তির প্রয়োজন, তার একটা বড় অংশই আসে কার্বোহাড্রেট হতে। কার্বোহাইড্রেটের অন্যতম প্রধান উৎসই হলো ভাত বা রুটি। তবে বর্তমান সময়ে, অনেকেই ফিট থাকতে কিংবা ওজন কমাতে বিভিন্ন রকমের ডায়েট অনুসরণ করে থাকেন। এরজন্যে অনেকেই ডায়েট থেকে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কমিয়ে দেন কিংবা একেবারেই বন্ধও করে দেন। তবে কার্বোহাইড্রেট খাওয়া বন্ধ করে দিলে সময়ের সঙ্গে শরীরে নানা সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
শক্তি ও কার্বোহাইড্রেট
যেমন খাবারের মাধ্যমে শরীরে কার্বোহাইড্রেট প্রবেশ করলে, সেটি ভেঙে গ্লুকোজ় তৈরি হয়। যে কারণে কোষ তা শোষণও করতে পারে। এরপর দেহে তৈরি হয় এটিপি (অ্যাডেনোসিন ট্রাইফসফেট) যা আমাদের মেটাবলিজ়মকে প্রয়োজনীয় শক্তিও যোগায়।
পুষ্টিবিদদের মতে, এটিপি আসলে ফ্যাট থেকেও তৈরি হতে পারে। তবে সেই প্রক্রিয়াটি একটু জটিল। তাই দেহ সব সময়ই কার্বোহাইড্রেট থেকে তৈরি এটিপি সন্ধান করে। শরীরে কার্বোহাইড্রেট বেশি প্রবেশ করলে তখন তা গ্লাইকোজেন আকারে ভবিষ্যতের জন্যই সঞ্চিত থাকে।
তাহলে কী কী সমস্যা
# শরীরকে সচল রাখতে হলে যেহেতু এটিপির প্রয়োজন, তাই কার্বোহাইড্রেট না খেলেও শরীর তা অন্য কোনও উপায়ে জোগাড় করে নিবেই। তাই তখন পেশি ও ফ্যাট থেকে শরীর প্রয়োজনীয় শক্তিও শুষে নেয়। যে কারণে ব্যক্তির ওজন কমতে শুরু করে। দীর্ঘদিন কার্বোহাইড্রেট কম খেলে পেশির ঘনত্ব তখন কমতে থাকে।
# কার্বোহাইড্রেট খাওয়া বন্ধ করার অর্থ হলো- শরীরে প্রয়োজনীয় ফাইবারের অভাব ঘটা। যে কারণে ঘন ঘন পেটের সমস্যাও হতে পারে। কারণ হলো, ফাইবারের অভাবে পরিপাকতন্ত্রে খাবার ঠিক মতো হজমও হবে না। একইসঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দিতে পারে। কোলেস্টেরল এবং হার্টের অসুখ দূরে রাখতে সাহায্য করে ডায়েটারি ফাইবার।
# তাছাড়া কার্বোহাইড্রেট খাওয়া বন্ধ করলে, সময়ের সঙ্গে শরীরে ক্লান্তিবোধ দেখা দিতে পারে। মাথা ব্যথাও হতে পারে। সহজ কাজের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতেও সমস্যা হতে পারে।
# কার্বোহাইড্রেটের অভাবে ঘন ঘন মেজাজ পরিবর্তনও হতে পারে। শরীরে ব্যাপক হারে হরমোনের তারতম্যও ঘটতে পারে। একইসঙ্গে পুষ্টির অভাবে মুখে দুর্গন্ধও হতে পারে।
# চিকিৎসকদের মতে, সুস্থ থাকতে অল্প হলেও কার্বোহাইড্রেট ডায়েটে রাখা দরকার। তবে তা যেনো প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে না আসে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org