দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোলেস্টেরল হলো রক্তের একটি মোমজাতীয় পদার্থ, যা শরীরে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পাদন করে, যেমন- কোষ গঠনে সহায়তা করা এবং হরমোন উৎপাদনে ভূমিকা রাখা।

তবে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শাক-সবজি ও ফলমূল কোলেস্টেরলমুক্ত খাদ্য হিসেবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পটাশিয়াম, ফাইবার এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ শাকসবজি যেমন পালং শাক, লাউ, ব্রকোলি, ক্যাপসিকাম ইত্যাদি রক্তে কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। একইভাবে, আপেল, নাশপতি, কমলা, স্ট্রবেরি ও অন্যান্য ফলে উপস্থিত সলিউবল ফাইবার LDL বা “খারাপ” কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
পুরো শস্য এবং হোল গ্রেইন খাবার কোলেস্টেরল কমাতে সহায়ক। ওটমিল, বাদামি চাউল, জোয়ার ও গমের রুটি খাদ্যফাইবারের উৎকৃষ্ট উৎস। এগুলো পেট দীর্ঘ সময় ভর্তি রাখে এবং রক্তে কোলেস্টেরল শোষণ কমায়।
প্রাণীজ উৎসের চর্বি কমানোও গুরুত্বপূর্ণ। দুধ, দই এবং পনিরের লো-ফ্যাট বা ফ্যাট-ফ্রি ভ্যারায়টি গ্রহণ করা উচিত। মাংসের পরিবর্তে মাছ, বিশেষ করে স্যালমন, স্যাডাইন এবং ট্রাউট খেলে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়, যা হৃদয় সুস্থ রাখতে সহায়ক।
বাদাম এবং বীজজাতীয় খাবার যেমন আলমন্ড, আখরোট, চিয়া বীজ, ফ্ল্যাক্সসিডে উপস্থিত স্বাস্থ্যকর চর্বি রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে। তেলের মধ্যে সরিষা, জয়ত্রী বা অলিভ অয়েল ব্যবহার কোলেস্টেরল হ্রাসে সহায়ক।
প্রসেসড ফুড, ফাস্ট ফুড, ভাজাপোড়া এবং মিষ্টি খাবার কম খাওয়া আবশ্যক। নিয়মিত শাক-সবজি, ফল, বাদাম ও মাছের সমন্বিত খাবার কোলেস্টেরলমুক্ত ও সুস্থ জীবনযাপনের নিশ্চয়তা দেয়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org