দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ব্রিটিশ কাউন্সিলের অংশীদারিত্বে গতকাল (২১ নভেম্বর) ১২তম আউটস্ট্যান্ডিং পিয়ারসন লার্নার অ্যাওয়ার্ডস (ওপিএলএ) আয়োজন করেছে শিক্ষা খাতে বৈশ্বিকভাবে শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান এবং যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বড় অ্যাওয়ার্ডিং বডি পিয়ারসন এডেক্সেল।

এই বছর ইন্টারন্যাশনাল প্রাইমারি, ইন্টারন্যাশনাল লোয়ার সেকেন্ডারি, ইন্টারন্যাশনাল জিসিএসই এবং ইন্টারন্যাশনাল ‘এ’ লেভেল পরীক্ষায় অসাধারণ ফলাফল অর্জনকারী বাংলাদেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের সম্মান জানাতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানটি রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের হল অব ফেমে আয়োজিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিয়ারসন স্কুল কোয়ালিফিকেশনসের ডিরেক্টর ক্যাথরিন বুথ এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রিটিশ কাউন্সিলের এক্সামস ডিরেক্টর বাংলাদেশ ম্যাক্সিম রাইমান এবং ব্রিটিশ হাই কমিশন বাংলাদেশের ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ডিরেক্টর সাকিব এরশাদ।
অসাধারণ কৃতিত্ব অর্জনের জন্য এই বছর মোট ৭৩৬ জন শিক্ষার্থীকে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। স্বীকৃতি পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছিলেন বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া ২৪ জন, এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া ৪ জন ও বাংলাদেশে সর্বোচ্চ নম্বর অর্জন করা ৪১ জন শিক্ষার্থী। পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে ছিলেন ২১ জন আইপ্রাইমারি, ১ জন আইলোয়ারসেকেন্ডারি, ৪৫৬ জন ইন্টারন্যাশনাল জিসিএসই এবং ১৮৩ জন ইন্টারন্যাশনাল ‘এ’ লেভেল শিক্ষার্থী।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পিয়ারসন স্কুল কোয়ালিফিকেশনসের ডিরেক্টর ক্যাথরিন বুথ, ব্রিটিশ কাউন্সিলের এক্সামস ডিরেক্টর বাংলাদেশ ম্যাক্সিম রাইমান, ব্রিটিশ হাই কমিশন বাংলাদেশের ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ডিরেক্টর সাকিব এরশাদ, পিয়ারসন বাংলাদেশ এবং নেপালের রিজিওনাল ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার আবদুল্লাহ আল মামুন লিটন এবং পিরাসন বাংলাদেশের রিজিওনাল ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার জান্নাতুল ফেরদৌস সিগমা। বক্তব্যে তারা শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানান এবং শিক্ষার্থীদের সাফল্যে অবদান রাখার জন্য শিক্ষক এবং অভিভাবকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
নিজের বক্তব্যে ক্যাথরিন বুথ শিক্ষার্থীদের শেখার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা ও নিজেদের মেধা এবং প্রতিভার মাধ্যমে পৃথিবীতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার ব্যাপারে উৎসাহ দিয়ে বলেন, “আজ চমৎকার এই দিনে পিয়ারসনের অংশ হিসেবে আমরা বাংলাদেশের তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থীদের সাফল্য উদযাপন করছি। অনন্য অর্জনের জন্য শিক্ষার্থীরা আজ যে স্বীকৃতি পাচ্ছে, তা শুধুমাত্র উৎকর্ষ অর্জনের প্রচেষ্টাই নয়, পাশাপশি তাদের ভবিষ্যতের জন্যও স্বীকৃতিস্বরূপ। পিয়ারসনে আমরা শিক্ষার্থীদের শেখার, ভাবার এবং ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে তুলতে রূপান্তরমূলক দক্ষতা অর্জনে উৎসাহিত করি। আপনারা এখন জীবনের পরবর্তী অধ্যায়ে প্রবেশ করবেন, নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এবং অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হবেন, যা আপনাদের বোঝাপড়াকে সমৃদ্ধ করবে। আপনাদের উদার মানসিকতার হতে হবে এবং সবসময় কৌতূহলী থাকতে হবে। আশা করি, আপনারা শিক্ষকদের সাথেও যোগাযোগ রাখবেন ও মেধা এবং প্রভিভার মাধ্যমে পৃথিবীতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে ভূমিকা রাখবেন।”
ব্রিটিশ কাউন্সিলের এক্সামস ডিরেক্টর বাংলাদেশ ম্যাক্সিম রাইমান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “তারুণ্য মানেই কৌতূহল, নতুন পরিবেশের সাথে মানিয়ে নেয়া এবং লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে যাওয়া। অন্যদিকে, বয়সের সাথে সাথে আসে অভিজ্ঞতা, স্থিরতা এবং প্রজ্ঞা। একে অন্যের কাছ থেকে শেখার মাধ্যমেই আমরা এগিয়ে যাই। ব্রিটিশ কাউন্সিলে আমরা শিক্ষার মাধ্যমে ঐক্য এবং পারস্পারিক বোঝাপড়া বৃদ্ধিতে কাজ করি, যেন প্রতিটি প্রজন্ম একসাথে এগিয়ে যেতে পারে। সময়ের সাথে সাথে আপনারা সামনে এগিয়ে যাবেন; এক্ষেত্রে, নিজেদের তারুণ্যের প্রতি সৎ থাকুন এবং অন্তনির্হিত তারুণ্যের আলোকে আলোকিত হোন।”
কীভাবে পিয়ারসন এডেক্সেল কোয়ালিফিকেশন বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে উচ্চশিক্ষার পথ উন্মুক্ত করে চলেছে, তা নিয়ে বক্তব্য রাখেন পিয়ারসন বাংলাদেশের আবদুল্লাহ আল মামুন লিটন এবং জান্নাতুল ফেরদৌস সিগমা।
উল্লেখ্য, ২০১২ সাল থেকে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এই অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান এবং এখন পর্যন্ত ৮ হাজারের বেশি কৃতি শিক্ষার্থীকে এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে।
খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org