দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভালোবাসা দিবস হচ্ছে প্রেমিক প্রেমিকাদের জন্য আনন্দের দিন, তবে কিছু মানুষ থাকেন একা নিঃসঙ্গ, যারা এই দিন নিজেদের সঙ্গী না থাকায় কিছুটা হতাশ থাকেন। এবার গবেষকরা বলছেন ভালোবাসা দিবসে নিঃসঙ্গ থাকা, কিংবা ব্যক্তিজীবনে কিছু সময় একা কাটানো একজন মানুষের জন্য ব্যক্তিজীবনে সুফল বয়ে আনে।
আপনি কি একা? আপনার কোন ভালোবাসার সঙ্গী নেই? ভালোবাসা দিবসে আপনার অন্যদের দেখে কি হতাশায় কাটে? এই তিন প্রশ্নের জবাব এক এক জনের ক্ষেত্রে এক এক রকম হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে এবার গবেষকরা বলছেন একজন মানুষ যদি জীবনের কিছু সময় একা থাকেন তবে এটি তাঁর জন্য মন্দ কিছুই নয়।
১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, এই দিনকে সারা বিশ্বের প্রেমিক প্রেমিকাদের জন্য একটি বিশেষ আনন্দের দিন হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। এ দিন যারা একা অর্থাৎ যাদের ভালোবাসার সঙ্গী নেই তাদের জন্য একটি হতাশার কিংবা বিসন্ননতার দিন হিসেবে বিবেচিত হয়।
যদিও মনবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে একাকীত্ব মানুষের হতাশার কারন হতে পারে এবং মানসিক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে বলেই বিবেচিত হয়। তবে হতাশ হবেন না সব কিছুরই যেমন ভালো থাকে তার মন্দ দিকও থাকে। আপনি যদি একা থাকেন কিংবা একজন কাছের মানুষ, মনের মানুষ না খুঁজে পান তাহলে হতাশ হয়ে পড়ার কিছুই নেই। বিশ্লেষকরা গবেষণায় দেখেছেন,” প্রত্যেক মানুষকে জীবনের কিছু সময় একা থাকা কিংবা একাকীত্বকে অনুভব করা জরুরী। আর এই একাকীত্ব মানুষের প্রতিভা বিকাশ কিংবা সাফল্য বয়ে আনার জন্য শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে কাজ করতে পারে।”
মানুষ তাঁর জীবনের দীর্ঘ চলার পথে নানান বিষয়ের সম্মুখীন হয়, কারণে অকারনে হয়। এসব প্রেক্ষাপট কখনও সুখের কখনও দুঃখের। আপনি আপনার দীর্ঘ জীবনে যদি কিছু সময় একা থাকেন তবেই আপনি আপনার প্রিয় মানুষটিকে মূল্য দিতে বুঝবেন কারন তাকে পাওয়া আপনার জন্য এতো সহজ ছিলনা।
ভালোবাসা দিবসে ভ্রমণ টিপস: ভালোবাসা দিবসে ঢাকা, চট্রগ্রাম এবং সিলেটের যেসব স্পটে প্রিয়জনকে নিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারেন!
অন্য দিকে আপনার জীবনের এই একা সময়টিতে আপনি করার মত এমন অনেক কাজ করতে পারেন যা আপনার জীবনকে বদলে দিতে পারে আমূল! অথবা আপনার জীবনের মূল ভিত্তি রচিত হতে পারে এই একা থাকার সময়টিতে। সঙ্গী নেই তো কি হয়েছে সঙ্গীহীন কেউ সারা জীবন একা থাকেনা, পৃথিবীর কোন না কোন প্রান্তে আপনার জন্য কেউ না কেউ অপেক্ষা করছেই সুতরাং হতাশ না হয়ে নিজের জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কাজে এই সময়টায় মন দিন।
প্রত্যেক নিঃসঙ্গ মানুষ তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক কাজে অন্যান্য মানুষ থেকে অনেক বেশি মনোযোগ দিতে পারে এই বিষয়টি আজ প্রতিষ্ঠিত সত্য।
এবার চলুন জেনে নিই যারা এখনো সঙ্গী খুঁজে পাননি তাদের জন্য কিছু টিপসঃ
- মনে রাখবেন ভালোবাসা দিবসে আপনি একা আছেন এর মানে কিন্তু আপনি ভালোবাসার অযোগ্য কোন ব্যক্তি নন! আপনার আশেপাশে এমন অনেক মানুষ আছে যারা আপনাকে অত্যন্ত ভালোবাসে। তাবৎ দুনিয়ার প্রেমিক প্রেমিকারা ভালোবাসা দিবসে কেবল একটি আনন্দের দিন কাটায় আপনার হাতে কিন্তু আরও ৩৬৪ দিন রয়ে গেছে! সুতরাং হতাশ হবেন না।
- নিজেকে বিচার করুন, ভাবুন আপনি কি সারা জীবন একাই থাকবেন? কিংবা আপনি কি কোন দিন মনের মানুষের সন্ধান পাবেন না? হ্যাঁ এটা কখনই সম্ভব না যে আপনার মনের মানুষ হবেনা কোন দিন। নিশ্চয় হবে আজ না হোক খুব শীগ্রই হবে। এই সময়টায় নিজের কাজে মনোযোগ দিন নিজেকে প্রস্তুত করুন ভালোবাসার মানুষের জন্য।
- কখনও নিজেকে অন্য কারোর সাথে তুলনা করবেন না, কেউ আপনার দিকে আঙুল তুলে চেয়ে নেই। সবাই যার যার কাজে বেস্ত সুতরাং আপনি কেন আরেক জনের বিষয় নিয়ে হতাশ হবেন! আপনি অন্যদের থেকে আলাদা এবং সম্পূর্ণ একক অস্তিত্ব! অন্য কারোর মাঝে যা নেই আপনার মাঝে হয়তো তা আছে নিজেকে আবিষ্কার করুন।
- রিলেশানশিপ স্ট্যাটাস দিয়ে নিজেকে বিচার করবেন না! আপনার আপাতত মনের মানুষ নেই ঠিকই কিন্তু আপনি তো কারো সন্তান, কারো ভাই কিংবা বোন? তাঁরা আপনাকে কতোটা ভালোবাসে তাই অনুভব করুন। মনে রাখবেন ভালোবাসা দিবস শুধু প্রেমিক প্রেমিকার নয় ভালোবাসা সার্বজনীন।
- নিজের বিষয়ে ভাবুন আপনি তো ভাবছেন হয়তো আপনি একা! আসলে আপনি নিজেকে কখনও ভালোবাসার মানুষ পেতে চেষ্টা করেছেন? নাকি আপনি তাদের দলে যাদের ইংলিশ ভাষায় বলে থাকে “হু কেয়ার মানসিকতার মানুষ!” অতএব ভেবে দেখুন ভালোবাসার মানুষ পেতে আপনি কখনও আদৌ চেষ্টা করেছেন কিনা!
সব শেষে মনে রাখবেন ভালোবাসা দিবসে একজন প্রেমিক কিংবা প্রেমিকার ভূমিকার বাইরেও আরও অসংখ্য ভূমিকা থাকে পালন করার। আপনার পরিবারকে ভালবাসুন, রাস্তার দুঃখী মানুষকে ভালবাসুন, দেশ মাতৃকাকে ভালবাসুন সর্বোপরি মানবতাকে ভালবাসুন।
নিঃসঙ্গ থাকা আপনার জন্য ভালো শীর্ষক গবেষণা সূত্রঃ ডেইলিমেইল