দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ক্রমেই প্রযুক্তি বিশ্বে আসছে এক বিশাল পরিবর্তন। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে কি-বোর্ড কিংবা মাউসের মাধ্যমে কম্পিউটার পরিচালনা করা আজকের প্রজন্মের নিকট ডিস্ক অপারেটিং সিস্টেম (এমএস-ডস) ব্যবহারের মতোই অবিশ্বাস্য ঠেকবে। এমন ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন মাইক্রোসফটের এক শীর্ষ কর্মকর্তা।

সম্প্রতি ইউটিউবে প্রকাশিত ‘মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ২০৩০ ভিশন’ শীর্ষক একটি ভিডিওতে প্রতিষ্ঠানটির অপারেটিং সিস্টেম (ওএস) নিরাপত্তাসংক্রান্ত করপোরেট সহসভাপতি ডেভিড ওয়েস্টন এই ধারণা তুলে ধরেন।
ডেভিড ওয়েস্টন বলেছেন, ভবিষ্যতে মানুষ কম্পিউটারের দিকে খুবই কম তাকাবে, বরং তার সঙ্গে আরও বেশি কথা বলবে। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে, উইন্ডোজ এবং মাইক্রোসফটের অন্যান্য সিস্টেম ভবিষ্যতে মানুষের সঙ্গে অনেক বেশিই স্বাভাবিকভাবে সংযোগ গড়বে।
তিনি মনে করেন, ভবিষ্যতের উইন্ডোজও হবে বহুমাত্রিক। ব্যবহারকারী কেবলমাত্র কণ্ঠস্বর, হাতের ইশারা কিংবা চোখের মণি নড়াচড়া করে যন্ত্রটির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন ও কাজ সম্পন্নও করবেন। কম্পিউটার তখন কেবল নির্দেশ পালনে সীমাবদ্ধই থাকবে না, বরং ব্যবহারকারীর কথা বুঝে নিজে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
মাইক্রোসফটের এই শীর্ষ কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির উন্নতির কারণে কম্পিউটার এবং ল্যাপটপের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ পদ্ধতিতে বড় পরিবর্তনও আসবে। এআই প্রযুক্তি মূলত রুটিন ধরনের কাজ, যেমন হিসেব তৈরি, ব্যয়ের রিপোর্ট কিংবা স্প্রেডশিট বানানোর মতো কাজগুলোর প্রয়োজনীয়তাও কমিয়ে দেবে। যে কারণে ব্যবহারকারীরা সময়ও বাঁচাতে পারবেন। আবার সৃজনশীল এবং তাৎপর্যপূর্ণ কাজে বেশিই মনোযোগ দিতে পারবেন।
উইন্ডোজ ইতিমধ্যেই কোপাইলট এআই, রিয়েল টাইম প্রোডাক্টিভিটি টুলসের মতো নানা ফিচার চালুও করেছে, যেখানে কম্পিউটারই শুধু সাড়া দিচ্ছে না, বরং কারণ বোঝার পাশাপাশি শিখতেও পারছেন।
তবে ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদ থাকলেও ডেভিড ওয়েস্টন একইসঙ্গে সতর্ক করে বলেছেন যে, প্রযুক্তি যতো বেশি উন্নত হবে, ততো বেশি নিরাপত্তার ঝুঁকি বাড়বে। তাই সেই ক্ষেত্রেও প্রযুক্তি ব্যবহারকারী এবং নির্মাতাদেরও প্রস্তুত থাকতে হবে। প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা এই মন্তব্যকে অমূলকও মনে করছেন না, কারণ মাইক্রোসফটের চলমান বিনিয়োগ এই ধারণাকে বাস্তবের পথেই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org