দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর এক হামলায় হামাসের জ্যেষ্ঠ কমান্ডার রায়েদ সাদ নিহত হয়েছেন। এটি আগেই দাবি করেছিল ইসরায়েল। এবার হামাসও আনুষ্ঠানিকভাবে তার নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করলো।

হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে গত ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও গাজায় ধারাবাহিক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। গাজা কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, যুদ্ধবিরতির মধ্যে প্রায় ৮০০টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এইসব হামলায় অন্তত ৩৮৬ জন নিহত হন।
গত অক্টোবরে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর হতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হওয়া হামাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতা হলেন রায়েদ সাদ।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো রবিবার জানায়, গত শনিবার গাজা নগরীর উপকণ্ঠে চালানো এক হামলায় রায়েদ সাদ নিহত হয়েছেন। ওই হামলায় অন্তত ২৫ জন আহত হয়। পরে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী এক বিবৃতির মাধ্যমে তার নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে। বিবৃতিতে বলা হয় যে, ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের সহযোগিতায় একটি গাড়িতে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর থেকেও পৃথক বিবৃতিতে হামলার কথা স্বীকার করা হয়। তবে সেখানে রায়েদ সাদের নিহত হওয়ার বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো তথ্যই দেওয়া হয়নি।
অপরদিকে হামাসের পক্ষ হতে শুরুতে এই বিষয়ে কোনো মন্তব্যই করা হয়নি। পরে সংগঠনটির গাজাপ্রধান খলিল আল-হাইয়া এক ভিডিও বিবৃতিতে শনিবারের হামলায় রায়েদ সাদের নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। একইসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন যে, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে।
খলিল আল-হাইয়া বলেন যে, ‘ইসরায়েল বারং বার যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভঙ্গ করছে। এর সর্বশেষ উদাহরণ হলো হামাসের জ্যেষ্ঠ কমান্ডার রায়েদ সাদ হত্যা। এই পরিস্থিতিতে আমরা সব মধ্যস্থতাকারী পক্ষের প্রতি, বিশেষ করে চুক্তির প্রধান নিশ্চয়তাদাতা হিসেবে মার্কিন প্রশাসন এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেনো ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে চলতে বাধ্য করেন।’
ইউরোপীয় কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, রায়েদ সাদ ছিলেন হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসেম ব্রিগেডের সামরিক পরিষদের একজন জ্যেষ্ঠ সদস্য। তিনি কাসেম ব্রিগেডের অভিযান এবং উৎপাদন বিভাগের প্রধানেরও দায়িত্ব পালন করতেন। তাকে সংগঠনটির সশস্ত্র শাখার ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ কিংবা দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা হিসেবেই বিবেচনা করা হতো।
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর হতে দেওয়া এক বিবৃতিতে রায়েদ সাদকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলার ‘অন্যতম পরিকল্পনাকারী’ হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org