ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আধুনিক যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলেছে তথ্য প্রযুক্তির হাওয়া। তাইতো বর্তমান বিশ্বে তথ্য প্রযুক্তি ছাড়া ভাবাই যায় না। আজ তথ্য প্রযুক্তির সংক্ষিপ্ত সংবাদ-১১ এ বিশ্বের বেশ কিছু তথ্য প্রযুক্তির খবর তুলে ধরা হলো।
গুগল সার্চের জন্য টাকা নেবে!
না না, সব রকম সার্চেই টাকা লাগবে না। শুধু গুগলের ‘প্রডাক্ট সার্চ’ করানোর জন্য টাকা দিতে হবে।
এখানে এতদিন সার্চ করা যেত বিনা মূল্যে।
তবে শিগগিরই সার্চ ইঞ্জিনটিতে পণ্যের প্রচারের জন্য টাকা দিতে হবে বিজ্ঞাপনদাতাদের। প্রাথমিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছ থেকে পণ্যের বিজ্ঞাপন বাবদ টাকা নেয়ার সিদ্ধান্তটি কার্যকর করতে যাচ্ছে গুগল কর্তৃপক্ষ। আর এজন্য ‘গুগল শপিং’ নামে নতুন সেবা চালু করবে গুগল। গুগল শপিংয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট (পণ্য ব্যবস্থাপনা) সামির সামাত বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রে গুগল প্রডাক্ট সার্চ অপশনটিকে সত্যিকারভাবে বাণিজ্যিক রূপদান করতে যাচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য, ‘গুগল শপিং’ নাম দিয়ে পণ্য খোঁজার পদ্ধতিটিকে আরও আধুনিক করে তোলা।
চালু হল অনলাইন মোবাইল রিচার্জ
মধ্যরাতে খুব জরুরি ফোন করতে হবে। এমন সময় দেখলেন আপনার মোবাইলের ব্যালেন্স শেষ হয়ে গেছে। রাতে সব দোকান বন্ধ তাই রিচার্জ করারও কোন উপায় নেই। কি করবেন এখন? নো প্রবলেম, এখন থেকে যে কোন সময় যে কোন জায়গা থেকে অনলাইনে বসেই মোবাইল রিচার্জ করতে পারবেন। সম্প্রতি এ সম্পর্কে গ্রামীণফোন, এসএসএল ওয়্যারলেস পৃথকভাবে ডাচ-বাংলা ব্যাংক এবং ব্র্যাক ব্যাংকের সঙ্গে বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক চ্যানেলের মাধ্যমে জিপি গ্রাহকদের অনলাইনে মোবাইল রিচার্জ সার্ভিস চালু করতে ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে আবদ্ধ হন। এ চুক্তির ফলে গ্রামীণফোন গ্রাহকরা (www.easy.com.bd)) ওয়েবসাইট থেকে অতি সহজেই তাদের প্রিপেইড নাম্বার রিচার্জ বা পোস্টপেইড নাম্বারের বিল অনলাইনে প্রদান করতে পারবেন।
গ্রাহকরা তাদের ক্রেডিট কার্ড যেমন ভিসা, মাস্টার কার্ড এবং ডেবিট কার্ড যেমন ডিবিবিএল নেক্সাস, ব্র্যাক ব্যাংক এটিএম ইত্যাদি ব্যবহার করে অনলাইন পেমেন্ট করতে পারবেন। ডাচ-বাংলা ব্যাংক ডিবিবিএল নেক্সাস এবং ব্র্যাক ব্যাংক ভিসা, মাস্টার কার্ড এবং ব্র্যাক ব্যাংক এটিএম কার্ডের প্রসেসর হিসেবে কাজ করবে। গ্রামীণফোনের সঙ্গে সঙ্গে এসএসএল ওয়্যারলেস দেশের প্রায় সব মোবাইল অপারেটরদের জন্য অনলাইন রিচার্জ সুবিধা নিয়ে এলো। অনলাইনে লেনদেনের অনুমতি প্রদানের পর থেকেই অনলাইনে বিল প্রদান, অনলাইনে কেনাকাটা, মোবাইল রিচার্জ ইত্যাদি ডিজিটাল সেবার সূচনা ঘটে বাংলাদেশে। এসএসএল ওয়্যারলেস মোবাইল ও ইন্টারনেটভিত্তিক বিভিন্ন অর্থনৈতিক সেবা নিয়ে আসছে জনগণের জন্য ৪ বছর ধরে। তারই ধারাবাহিকতায় দেশে প্রথমবারের মতো এসএসএল ওয়্যারলেস ২টি ইলেক্ট্রনিক চ্যানেল টপ আপ এবং অনলাইন পেমেন্টকে একটি প্ল্যাটফর্মে নিয়ে এলো।
ভারতে থ্রিজির দাম কমাল এয়ারসেল
ভারতে একের পর এক থ্রিজির মূল্য কমানোর প্রতিযোগিতা চলছে। প্রথমে এয়ারটেল, আইডিয়া তারপরে ভোডাফোন এবং সর্বশেষ এবার এয়ারসেল থ্রিজি ডাটা মূল্য কমাতে বাধ্য হল। প্রতিষ্ঠানটি নতুন যে মূল্য নির্ধারণ করেছে তা এই খাতে সর্বনিম্ন মূল্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। নতুন মূল্য অনুযায়ী দৈনিক মাত্র ৮ রুপিতেই (১১.৮০ টাকা) উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবে একজন ব্যবহারকারী। এই মূল্য টুজি ডাটা প্ল্যান মূল্য থেকে মাত্র ৩ রুপি বেশি। এয়ারসেল দেশটির চতুর্থ অপারেটর যে থ্রিজি মূল্য কমিয়ে ব্যবহারকারীর ব্যবহার বৃদ্ধির মাধ্যমে লাভ তুলে আনার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
ট্রান্সপারেন্ট স্মার্টফোন
খুব শিগগিরই বাজারে আসছে ট্রান্সপারেন্ট স্মার্টফোন। ফলে স্মার্টফোন ইউজাররা পাবে আরও বাড়তি কিছু সুবিধা। এ ধরনের ফোনের সামনে-পেছনে দু’দিকেই যুক্ত থাকবে টাচস্কিন। আর একই সঙ্গে দুটি অ্যাপ ব্যবহার করার সুবিধা থাকায় নতুন নতুন চমক তৈরি করা যাবে।
জানা গেছে, ফুজিৎসুর সহযোগিতায় ট্রান্সপারেন্ট ফোন তৈরি করেছে ডোকোমো। নতুন এই স্মার্টফোনটির প্রটোটাইপ নিয়ে ইউটিউব ভিডিওতে বিস্তারিত জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির (ডেকোমো) অ্যাডভান্সড টেকনোলজি গ্রুপের সিনিয়র সদস্য মাসাশি তাগায়া।
এ স্মার্টফোনটির সামনের ও পেছনের টাচ প্যানেল ব্যবহার করে একই সঙ্গে একাধিক অ্যাপ চালানো যাবে। তবে একটি সমস্যাও আছে এ ধরনের স্মার্টফোনে। আর সেটি হল এর ডিসপ্লে। এর ডিসপ্লে মাত্র ২.৪ ইঞ্চি যা অন্য যে কোন স্মার্টফোনের ডিসপ্লে থেকে ছোট। তবে জানা গেছে মূল ফোনের ডিসপ্লে বাজারের অন্য স্মার্টফোনগুলোর ডিসপ্লের মতোই আকারে বড় হবে। আর এটি ট্রান্সপারেন্ট হওয়ায় এবং সামনে পেছনে দু’দিকের টাচ প্যানেল একই সঙ্গে ব্যবহার করার সুবিধা থাকায় অনেক অনেক অ্যাপ ইউজাররা একই সময়ে একই সঙ্গে ব্যবহার করতে পারবেন। ফলে ধারণা করা হচ্ছে ইউজারদের এটি নতুন এক অভিজ্ঞতা দেবে।
বাংলাদেশে সাড়ে ২৪ লাখ ফেসবুক ইউজার
লন্ডনভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগের তথ্যবিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান সোশ্যাল বেকার্স এক জরিপে জানিয়েছে, বর্তমানে বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২৪ লাখ ৬৯ হাজার ৭৬০ জন এবং ফেসবুক ব্যবহারকারী হিসেবে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ৫৫তম। সোশ্যাল বেকার্সের কাজ হচ্ছে বিশ্বের ৭৫টি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে টুইটার, ফেসবুক, ইউটিউব, লিঙ্কডইন এবং গুগল+ ব্যবহার করে বিজ্ঞাপন দিলে তা সেসব দেশের জনগণের ওপর কতটা প্রভাব ফেলবে তার সমীক্ষা দেয়া। প্রতিষ্ঠানটি প্রতিদিন তার ওয়েবসাইটে বিশ্বের ২০০টি দেশের ফেসবুক সংক্রান্ত পরিসংখ্যান প্রদান করে থাকে।
সোশ্যাল বেকার্সের তথ্য অনুসারে, দেশের মাত্র ১.৫৬% মানুষের কাছে ফেসবুক পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। গত ছয় মাসে বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহার ৪ শতাংশ হারে বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি ফেসবুক ব্যবহারকারী ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সীরা। এই বয়সী ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাংলাদেশে দ্রুত বাড়ছে। মোট ফেসবুক ব্যবহারকারীর অর্ধেক অংশই এই বয়সী। এ ছাড়া বাংলাদেশে ২৫ থেকে ৩৪ বছর বয়সী ফেসবুক ব্যবহারকারী ৩০ শতাংশ এবং দেশে মোট ফেসবুক ব্যবহারকারীর ৭৭ শতাংশ পুরুষ ও ২৩ শতাংশ নারী। উল্লেখ্য, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি নারী ফেসবুক ব্যবহারকারীর দেশ বুলগেরিয়া। দেশটির ফেসবুক ব্যবহারকারীর ৫২ শতাংশই নারী। ১৫ কোটিরও বেশি ফেসবুক ব্যবহারকারীর দেশ হিসেবে প্রথম অবস্থানটি যুক্তরাষ্ট্রের। তবে কেউ কেউ বলছেন চীনে ফেসবুক নিষিদ্ধ না হলে তারাই এ পরিসংখ্যানে সবার উপরে থাকতেন। আর ব্যবহারকারীর দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পরের অবস্থানেই রয়েছে ব্রাজিল ও ভারত। এ দিকে সোশ্যাল বেকার্সের তথ্য অনুসারে ফেসবুক ব্যবহারের শীর্ষ ছুঁতে দ্রুত ছুটছে ভারত। ভারতে রয়েছে ফেসবুকের চার কোটি ৬৩ লাখ ব্যবহারকারী। ২০১৫ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলকে পেছনে ফেলে সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ফেসবুক ব্যবহারকারীর হিসেবে শীর্ষস্থানে চলে যাবে দেশটি।