দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ঘোষিত যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকা সত্ত্বেও গাজায় ইসরায়েলি হামলা এখনও থামেনি। উপত্যকাজুড়ে স্থল, নৌ এবং আকাশপথে চলমান হামলায় ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুসংখ্যা ৭০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই হিসাবটি দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর হতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৭০ হাজার ১০০ ফিলিস্তিনি নিহত হন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৭০ হাজার ৯০০–এরও বেশি মানুষ। নিহতদের মধ্যে শিশু এবং নারীসহ বহু বেসামরিক নাগরিকও রয়েছেন।
দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের পূর্বে বনি সুহেইলা শহরে ড্রোন হামলায় দুই ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা আল-জাজিরাকে বলেছেন, সকালে আল-ফারাবি স্কুলের কাছে বেসামরিক মানুষের একটি দলের ওপর ড্রোন হতে বোমা নিক্ষেপ করা হলে জুমা এবং ফাদি তামার আবু আসসি নামে দুই ভাই ঘটনাস্থলেই মারা যান।
এ ছাড়াও গতকালও গাজার বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি বাহিনী স্থল, নৌ এবং বিমান হামলা চালায়। খান ইউনিসের উত্তর-পূর্বে আল-কারারা শহরে বিমান হামলায় ৩ জন আহত হয়েছেন। গাজার পূর্বাঞ্চলীয় তুফাহ এলাকা ও দক্ষিণের রাফা শহরের পূর্বেও হামলার ঘটনা ঘটেছে। হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে যে, এর আগের দিনও ইয়েলো লাইনের বাইরে বনি সুহেইলায় ড্রোন হামলায় আরেক ফিলিস্তিনি নিহত হন।
গাজার সরকারি গণমাধ্যম অফিসের পরিচালক ইসমাইল আল-থাওয়াবতা জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর হতে ইসরায়েল কমপক্ষে ৫৩৫ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। আল-থাওয়াবতার ভাষায়, ‘গাজায় মানবিক পরিস্থিতি নজিরবিহীনভাবে খারাপই হচ্ছে ও ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে অবকাঠামো এবং প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলোও ধ্বংস হয়ে গেছে।’
আন্তর্জাতিক বিরতির মধ্যেও হামলা অব্যাহত থাকার কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ছে বলে মানবিক সংস্থাগুলো সতর্ক করে আসছে বারং বার।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org