দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেক সময় দেখা যায় ঘুম থেকে ওঠার পরেও সারা গায়ে ব্যথা করছে। এমন হলে কী করবেন? এই সময় পিঠ-কোমরের নমনীয়তা বজায় রাখতে, কোমর, নিতম্বের বাড়তি মেদ ঝরাতে ও পেটের পেশি মজবুত করতে কটি চক্রাসন উপকার করতে পারে।
সারাদিন হাড় ভাঙা পরিশ্রমের পর ঘুমোলে তখন আর কোনও হুঁশই থাকে না। একেবারে মড়ার মতো পড়ে থাকেন অনেকেই। ঘড়ির অ্যালার্ম শুনেই ঘুম ভাঙে। তবে বিছানা ছেড়ে উঠতেই ইচ্ছে করে না। ঘুম ভাঙার পরও অন্তত মিনিট শুয়ে থাকতে হয়। সারা গায়ে এমন ব্যথা যে বার বার আড়মোড়া ভেঙেও আরাম পাওয়া যায় না। সেই ব্যথা ক্রমাগত বাড়তেই থাকে সারা দিন অফিস করার পরও। তবে নিয়মিত কটি চক্রাসন অভ্যাস করলে এই সমস্যার সমাধানও হতে পারে।
সংস্কৃত ভাষায় ‘কটি’ শব্দের অর্থ হলো কোমর ও ‘চক্র’ অর্থাৎ বৃত্তাকারে আবর্তন। পিঠ-কোমরের নমনীয়তা বজায় রাখতে, কোমর, নিতম্বের বাড়তি মেদ ঝরাতে ও পেটের পেশি মজবুত করতে এই আসনটি অত্যন্ত উপকারী। একটানা চেয়ার-টেবিলে বসে মেরুদণ্ডে ব্যথা হলে আরাম দিতে পারে এই কটি চক্রাসন। সেইসঙ্গে, দেহের নিম্নাঙ্গের পেশি মজবুত হয় ও হজমের সমস্যা থাকলে সেটিও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
তাহলে কীভাবে করবেন এই আসন?
# ম্যাটের উপর সোজা হয়ে দুই পা ফাঁক করে দাঁড়াতে হবে। দুই পায়ের দূরত্ব যেনো কাঁধ বরাবর হয়। এখন হাত পাশে ঝুলিয়ে রাখুন। এখন শরীর শিথিল করে দাঁড়ান। ধীরে ধীরে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে থাকুন।
# এখন দেহের দু’পাশে দু’হাত, অর্থাৎ কাঁধ বরাবর সোজা করে ছড়িয়ে দিতে হবে। হাতের তালু যেনো মেঝের দিকেই থাকে।
# নি:শ্বাস ছেড়ে ডান হাত ভাঁজ করে বাঁ কাঁধে রাখুন এবং কোমর বাঁ দিকে ঘোরান। এই অবস্থায় বাঁ হাত কোমরের পিছন দিক থেকে ডান দিকে ঘুরিয়ে রাখুন।
# এই অবস্থায় বাঁ কাঁধের দিকে তাকাতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, পা যেনো মাটি থেকে কোনওভাবেই উঠে না যায়। এই অবস্থায় কিছুক্ষণ থাকুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখার চেষ্টাও করুন।
# তারপর শুরুর অবস্থায় ফিরে আসতে হবে। অর্থাৎ, হাত কাঁধের পাশে ছড়িয়ে রাখতে হবে।
# আবার একইভাবে ডান দিকে ঘুরে অভ্যেস করুন। অর্থাৎ, বাঁ হাত ডান কাঁধে রেখে ডান কোমরের পিছনে রেখে কোমর ঘোরান এবং ডান কাঁধের দিকে চোখ রাখতে হবে। তবে খেয়াল করবেন যেনো একইসঙ্গে আপনার ঘাড়ও ঘোরে। গোড়ালি যেনো মাটিতে ঠেকে থাকে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
# দু’দিকে ঘোরার পর সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে এবং স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে হবে। এইভাবে একটি বৃত্ত সম্পূর্ণ করতে হবে। এটি ৫–৭ বার অভ্যাস করতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org