দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক॥ ৩০ ফুট গভীর মাটির নিচে থেকে ৫০০০ বছর আগের ইরাকের সমৃদ্ধ এক শহর আবিষ্কার করেছে প্রত্নতত্ত্ববিৎরা। ইদু নামের এই শহর ছিল তৎকালীন সমৃদ্ধ ইরাকের শিল্প সংস্কৃতির বিশাল এক ভাণ্ডার।
ইরাকের কুর্দিস্থান প্রদেশে দক্ষিণে ইদু নামের এই প্রাচীন শহরের সন্ধান পান প্রত্নতত্ত্ববিৎরা, এখানে তারা নানান শিল্প কর্ম , প্লেট, তৈজস পত্র সহ আরও অনেক প্রাচীন মূল্যবান জিনিসের সন্ধান পান যা এক সময় এই শিল্প সমৃদ্ধ শহরের নাগরিকের ঘরের শোভা বর্ধন করত।
ইদু শহরের আবিষ্কার প্রক্রিয়া প্রথম শুরু হয় আজ থেকে ৫ বছর আগে। সে সময় একটি প্লেট পাওয়া যায় যেখানে খোঁদাই করে লিখা ছিল ইদু নাম সাথে আরও শিল্প কর্ম। প্রত্নতত্ত্ববিৎরা সেই থেকে ইদু’র রহস্য নিয়ে কাজ শুরু করেন এবং অবশেষে মাটির আনুমানিক ৩০ ফুট নিচে এই প্রাচীন শহরের সন্ধান পান।
ধারনা করা হচ্ছে ইদু শহরের আবিষ্কৃত এই অংশে তৎকালীন শহরের রাজার প্রসাদ এবং বাজার অঞ্চল ছিল। প্রাচীন এই শহরে।
বর্তমানে এই প্রাচীন শহর নিয়ে গবেষণা করছেন জার্মানির Leipzig বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং ছাত্ররা। তারা ধারনা করছেন আজ থেকে প্রায় ৩,৩০০ বছর আগে এই অঞ্চল Assyrian রাজার অধীনে ছিল। আবার কিছু কিছু আলামতে দেখা যায় এই শহর হিংস্র মানুষদের স্বাধীন একটি ভূখণ্ড ছিল যেখানে সবাই সবার মতোই বসবাস করত তবে সেখানে হিংস্রতা অনেক বেশি ছিল।
আলামতে আরও দেখা যায় Assyrian রাজার অধীনে আসার আগে তারা ১৪০ বছর স্বাধীন ভাবে জীবন যাপন করেছিল। এখানে পাওয়া নানান জিনিসের মাঝে কিছু কিছু পাথরে খোঁদাই করা শিল্প পাওয়া যায় যেখানে দেখা যায় মানুষের আদলে আঁকা শ্মশ্রুধারী একজন একটি সিংহ’কে পাহারা দিচ্ছে। এছারা আরেকটি শিল্প কর্মে দেখা যায় এক শিকারি তীর ধনুক দিয়ে একটি পাখা ওয়ালা সিংহকে শিকার করছে এবং এর উপরে লিখা আছে, ‘Palace of Ba’auri, king of the land of Idu, son of Edima, also king of the land of Idu.’ যার অর্থ দাড়ায় ‘এটি বাউরি রাজার রাজত্ব, যার ইদু নামে পরিচিত, বাউরি ইদিমা এর পুত্র যে ইদু এর রাজা।”
প্রত্নতত্ত্ববিৎ Cinzia Pappi বলেন, “ আমরা সত্যি অনেক সৌভাগ্যবান কারন আমরা ইতিহাসের এত পুরনো একটি শহর আবিষ্কার করতে পেরেছি যা আমাদের অনেক কিছুই জানতে সাহায্য করবে। এটি ২০০৩ সালের ইরাক যুদ্ধের পর এখানে প্রথম কোন প্রত্নতত্ত্বের আবিষ্কার।”
দুঃখজনক সংবাদ এই যে বর্তমানে কুর্দিস্থান প্রশাসনের নির্দেশে ইদু এর স্থলে কোন রুপ খনন কাজ চালানো বন্ধ রয়েছে। তবে প্রত্নতত্ত্ববিৎরা চাচ্ছেন খুব জলদি তারা কুর্দিস্থানের প্রশাসনের সাথে চুক্তিতে যেতে এবং আবার খনন কাজ শুরু করতে।
ধন্যবাদান্তেঃ Daily mail